অবাধে বিক্রি নিষিদ্ধ মাছ

সুমেল সারাফাত, মোংলা (বাগেরহাট)
আপডেট : ১৩ মার্চ ২০২২, ১৫: ৫৮
Thumbnail image

বাগেরহাটের মোংলা পৌর এলাকার প্রধান মাছবাজারে অবাধে বিক্রি হচ্ছে বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির শাপলাপাতা মাছ। গত বৃহস্পতিবার সকালে মোংলা পৌরবাজারে এ মাছ কেটে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা যায়। তবে এই মাছ শিকার ও বিক্রি নিষিদ্ধ তা জানেন না বলে দাবি ক্রেতা–বিক্রেতাদের।

শাপলাপাতা মাছের বৈজ্ঞানিক নাম ‘স্টিংরে ফিশ’। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন) থেকে শাপলাপাতা মাছকে বিপন্নপ্রায় প্রজাতি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২ অনুযায়ী এই মাছ শিকার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

বঙ্গোপসাগর ও সুন্দরবন উপকূলের নদ-নদীতে বিলুপ্ত প্রজাতির এ মাছ শিকার ও বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হলেও কেউই তা মানছেন না। স্থানীয় প্রশাসন, মৎস্য অধিদপ্তর ও বন বিভাগের নীরব ভূমিকায় অবাধে শাপলাপাতা মাছ আহরণ, সংরক্ষণ ও বিক্রি হচ্ছে।

মোংলা বন্দর পৌরসভা মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি মো. আফজাল ফরাজি ও সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল হালিম বলেন, প্রায় প্রতিদিনই সাগর থেকে জেলেরা শাপলাপাতা মাছ বাজারে আনছেন। এই মাছ ধরা বা বিক্রি যে নিষিদ্ধ তা তাঁরা জানেন না, তাঁদের কেউ কখনো বলেনি। সাগর থেকে এই মাছ শিকার করে নদীপথে আনার সময় বন বিভাগের কোনো কর্মকর্তা এতে বাধা দেন না। তাঁদের প্রশ্ন, দোষ কি শুধু বাজারের ব্যবসায়ীদের?

বাজারের মাছ ব্যবসায়ী মো. সোলায়মান হোসেন বলেন, বন বিভাগের লোকজনই শাপলাপাতা মাছ বাজারে আনায় সহায়তা করেন। তাঁরা নিষেধ করলে তো আর এই মাছ বাজারে ওঠানো সম্ভব না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যবসায়ী বলেন, পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের বিএম (বোটম্যান) মো. মিজানুর রহমান এসব মাছ প্রকাশ্যে বিক্রি করার সুযোগ দিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কয়েক দফা টাকা নিয়েছেন।

তবে বন বিভাগের বোটম্যান মিজানুর রহমানের দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের করা অভিযোগ সত্য নয়। তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।

বন বিভাগ খুলনা সার্কেলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দে বলেন, মূলত প্রচার-প্রচারণার অভাবেই কেউ জানে না যে শাপলাপাতা মাছ শিকার ও বিক্রয় নিষিদ্ধ। এখন থেকে মাইকিং করে সবাইকে সতর্ক করবেন। আর বোটম্যান মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রউফ বলেন, সাগরে দিনের পর দিন এভাবে নিধন চলতে থাকলে এক সময় এই শাপলাপাতা মাছ পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে যাবে। বন বিভাগের কর্মকর্তাদের উদাসীনতার কারণেই এ মাছ শিকার হচ্ছে। এই মাছ শিকার হওয়ায় জীববৈচিত্র্য মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হবে। সাগরে এই মাছের নিধন ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শপথ নিয়েই বাইডেনের নীতি বাতিল ও ১০০ নির্বাহী আদেশের ঘোষণা ট্রাম্পের

শাহজালাল বিমানবন্দরে চাকরি নেননি মনোজ কুমার, বিজ্ঞাপনচিত্র নিয়ে বিভ্রান্তি

বিচার বিভাগের সমস্যা তুলে ধরলেন বিচারক, আনিসুল হক বললেন ‘সমস্যা কেটে যাবে’

বিদ্যালয়ে একই পরিবারের ১৬ জনের চাকরি, তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

ভাতা নয়, সঞ্চয়পত্র কিনে দিচ্ছে সরকার

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত