মাহবুব সিদ্দিকী
এখন কেউ বিশ্বাস করবেন না যে ব্রিটিশ বাংলার ক্রিকেটের অগ্রপথিক ছিলেন একজন অসাধারণ গণিতজ্ঞ! তিনি অ্যালজাবরা, জিওমেট্রি, ট্রিগোনমেট্রি ইত্যাদি বিষয়ে একাধিক বই লিখেছিলেন। ‘শকুন্তলা’, ‘মুদ্রারাক্ষস’, ‘রঘু’, ‘কুমার সম্ভব’, ‘উত্তর চরিত’, ‘কিরাত’, ‘রত্নাবলী’, ‘ভট্টি’ ইত্যাদি প্রাচীন সংস্কৃত সাহিত্যের ব্যাখ্যা রচনা করেছিলেন। পাণিনির ব্যাকরণের ইংরেজি অনুবাদ করেছিলেন। আরও অবাক করা তথ্য হলো, তিনি ছিলেন বর্তমান কিশোরগঞ্জ জেলার সন্তান! তাঁর নাম সারদারঞ্জন রায়। তিনি শিশু সাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর ভাই এবং চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের অগ্রজ পুরুষ।
১৫৯৮ সালে ইংল্যান্ডে প্রথম অনুষ্ঠিত হওয়ার প্রায় ২০৬ বছর পর ব্রিটিশ ভারতের কলকাতায় প্রথম ক্রিকেট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৮০৪ সালে। এই ক্রিকেট ম্যাচই পরবর্তীকালে বাংলায় ক্রিকেটের ভিত্তি রচনা করতে সহায়তা করেছে। উনিশ শতকের আশির দশকে বাঙালিদের প্রতিষ্ঠা করা কলকাতা ‘টাউন ক্লাব’র সদস্য ছিলেন সারদারঞ্জন রায়।
সারদারঞ্জন রায় জন্মেছিলেন ১৮৫৮ সালে বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলার কটিয়াদী উপজেলার মসুয়া গ্রামে। সেটি এখন কিশোরগঞ্জ জেলার অন্তর্গত। তাঁর বাবার নাম কালীনাথ এবং মা জয়তারা। ভাইদের মধ্যে বড় ছিলেন সারদারঞ্জন রায়। তারপর মুক্তিদারঞ্জন, কামদারঞ্জন, প্রমদারঞ্জন এবং কুলদারঞ্জন। তৃতীয় ভাই কামদারঞ্জন কিংবদন্তিতুল্য বাংলা শিশু সাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী।
ময়মনসিংহ জেলা স্কুলে পড়ার সময় সেখানকার ব্রিটিশ সাহেবদের ক্রিকেট খেলা দেখে আকৃষ্ট হন সারদারঞ্জন। এরপর তিনি লেখাপড়ার পাট শেষ করেন এবং অধ্যাপনা শুরু করেন। তিনি আলীগড় এম এ কলেজ, বহরমপুর কলেজ, ঢাকা কলেজ, কটক কলেজ এবং কলকাতা মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশনের গণিতের অধ্যাপক ছিলেন। মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশনের অধ্যক্ষ হিসেবে তিনি আমৃত্যু দায়িত্ব পালন করেন।
সারদারঞ্জন রায় তাঁর কর্মজীবনের সবখানে অধ্যাপনার পাশাপাশি ক্রিকেট খেলতেন। আগ্রহী ছাত্রদের এই খেলাটি শেখায় উৎসাহ দিতেন। পেশাগত জীবনে কলকাতায় থাকাকালে গণিতের অধ্যাপনা এবং শিক্ষাসম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ কাজের পাশাপাশি সমান গুরুত্ব দিয়ে ক্রিকেট খেলতেন। তাঁর দুই ভাই মুক্তিদারঞ্জন ও কুলদারঞ্জন কলকাতায় ক্রিকেট খেলতেন।
সারদারঞ্জন কলকাতার যুবকদের মাঝে ক্রিকেটকে জনপ্রিয় করার জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন। শুধু তাই নয়, কলকাতায় ক্রিকেট খেলার সামগ্রীসহ অন্যান্য ক্রীড়াসামগ্রী এবং বইপুস্তকের একটি দোকান গড়ে তোলেন তিনি। একপর্যায়ে নাটোরের মহারাজা জগদিন্দ্রনাথ রায় উচ্চ শিক্ষার জন্য কলকাতায় যান। মহারাজ নিজে ক্রিকেট সম্পর্কে আগ্রহী ছিলেন। সারদারঞ্জন মহারাজাকে টাউন ক্লাবের সদস্য করেন। সারদারঞ্জনের পরামর্শে জগদিন্দ্রনাথ কলকাতার বুন্দেল রোডে ৪৫ বিঘার একটি বাগানবাড়ি কিনে নাম রাখেন ‘নাটোর পার্ক’। সারদারঞ্জনের পরামর্শেই সেখানে তৈরি করা হয় একটি ক্রিকেট মাঠ।
ক্রিকেটারদের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য সারদারঞ্জনের পরামর্শে মহারাজা টাউন ক্লাবে একজন পেশাদার ক্রিকেট কোচ নিয়োগ করতে চেয়েছিলেন। এ নিয়ে ক্লাব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জগদিন্দ্রনাথের মতপার্থক্য ঘটলে সারদারঞ্জন, তাঁর ক্রিকেটার দুই ভাই এবং মহারাজা টাউন ক্লাব ছেড়ে দিয়ে ১৯০১ সালে তৈরি করেন ‘নাটোর ইলেভেন’ ক্লাব। নাটোর পার্কের ক্রিকেট মাঠে সারদারঞ্জনের পরামর্শ ও তত্ত্বাবধানে চলত এ ক্লাবের অনুশীলন। কলকাতার বালিগঞ্জে এটিই ছিল তখনকার পূর্ববাংলার প্রথম ক্রিকেট ক্লাব। মহারাজা ছিলেন সে টিমের ক্যাপ্টেন। সারদারঞ্জন ছিলেন টিমের সব থেকে সিনিয়র সদস্য। তিনি সবাইকে ক্রিকেট সম্পর্কীয় সার্বিক জ্ঞান এবং শৃঙ্খলাবোধসহ ব্যক্তিত্ব বিকাশের ক্ষেত্রে পরামর্শ দিতেন।
সারদারঞ্জন রায় শুধু ক্রিকেটই খেলেননি, পুরো জীবন তিনি বাংলায় ক্রিকেট খেলা জনপ্রিয় করার কাজ করে গেছেন বলে তাঁকে বাংলায় ‘ক্রিকেটের জনক’ বলা হয়। আজ তাঁর ৯৭তম মৃত্যুদিন।
এখন কেউ বিশ্বাস করবেন না যে ব্রিটিশ বাংলার ক্রিকেটের অগ্রপথিক ছিলেন একজন অসাধারণ গণিতজ্ঞ! তিনি অ্যালজাবরা, জিওমেট্রি, ট্রিগোনমেট্রি ইত্যাদি বিষয়ে একাধিক বই লিখেছিলেন। ‘শকুন্তলা’, ‘মুদ্রারাক্ষস’, ‘রঘু’, ‘কুমার সম্ভব’, ‘উত্তর চরিত’, ‘কিরাত’, ‘রত্নাবলী’, ‘ভট্টি’ ইত্যাদি প্রাচীন সংস্কৃত সাহিত্যের ব্যাখ্যা রচনা করেছিলেন। পাণিনির ব্যাকরণের ইংরেজি অনুবাদ করেছিলেন। আরও অবাক করা তথ্য হলো, তিনি ছিলেন বর্তমান কিশোরগঞ্জ জেলার সন্তান! তাঁর নাম সারদারঞ্জন রায়। তিনি শিশু সাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর ভাই এবং চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের অগ্রজ পুরুষ।
১৫৯৮ সালে ইংল্যান্ডে প্রথম অনুষ্ঠিত হওয়ার প্রায় ২০৬ বছর পর ব্রিটিশ ভারতের কলকাতায় প্রথম ক্রিকেট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৮০৪ সালে। এই ক্রিকেট ম্যাচই পরবর্তীকালে বাংলায় ক্রিকেটের ভিত্তি রচনা করতে সহায়তা করেছে। উনিশ শতকের আশির দশকে বাঙালিদের প্রতিষ্ঠা করা কলকাতা ‘টাউন ক্লাব’র সদস্য ছিলেন সারদারঞ্জন রায়।
সারদারঞ্জন রায় জন্মেছিলেন ১৮৫৮ সালে বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলার কটিয়াদী উপজেলার মসুয়া গ্রামে। সেটি এখন কিশোরগঞ্জ জেলার অন্তর্গত। তাঁর বাবার নাম কালীনাথ এবং মা জয়তারা। ভাইদের মধ্যে বড় ছিলেন সারদারঞ্জন রায়। তারপর মুক্তিদারঞ্জন, কামদারঞ্জন, প্রমদারঞ্জন এবং কুলদারঞ্জন। তৃতীয় ভাই কামদারঞ্জন কিংবদন্তিতুল্য বাংলা শিশু সাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী।
ময়মনসিংহ জেলা স্কুলে পড়ার সময় সেখানকার ব্রিটিশ সাহেবদের ক্রিকেট খেলা দেখে আকৃষ্ট হন সারদারঞ্জন। এরপর তিনি লেখাপড়ার পাট শেষ করেন এবং অধ্যাপনা শুরু করেন। তিনি আলীগড় এম এ কলেজ, বহরমপুর কলেজ, ঢাকা কলেজ, কটক কলেজ এবং কলকাতা মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশনের গণিতের অধ্যাপক ছিলেন। মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশনের অধ্যক্ষ হিসেবে তিনি আমৃত্যু দায়িত্ব পালন করেন।
সারদারঞ্জন রায় তাঁর কর্মজীবনের সবখানে অধ্যাপনার পাশাপাশি ক্রিকেট খেলতেন। আগ্রহী ছাত্রদের এই খেলাটি শেখায় উৎসাহ দিতেন। পেশাগত জীবনে কলকাতায় থাকাকালে গণিতের অধ্যাপনা এবং শিক্ষাসম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ কাজের পাশাপাশি সমান গুরুত্ব দিয়ে ক্রিকেট খেলতেন। তাঁর দুই ভাই মুক্তিদারঞ্জন ও কুলদারঞ্জন কলকাতায় ক্রিকেট খেলতেন।
সারদারঞ্জন কলকাতার যুবকদের মাঝে ক্রিকেটকে জনপ্রিয় করার জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন। শুধু তাই নয়, কলকাতায় ক্রিকেট খেলার সামগ্রীসহ অন্যান্য ক্রীড়াসামগ্রী এবং বইপুস্তকের একটি দোকান গড়ে তোলেন তিনি। একপর্যায়ে নাটোরের মহারাজা জগদিন্দ্রনাথ রায় উচ্চ শিক্ষার জন্য কলকাতায় যান। মহারাজ নিজে ক্রিকেট সম্পর্কে আগ্রহী ছিলেন। সারদারঞ্জন মহারাজাকে টাউন ক্লাবের সদস্য করেন। সারদারঞ্জনের পরামর্শে জগদিন্দ্রনাথ কলকাতার বুন্দেল রোডে ৪৫ বিঘার একটি বাগানবাড়ি কিনে নাম রাখেন ‘নাটোর পার্ক’। সারদারঞ্জনের পরামর্শেই সেখানে তৈরি করা হয় একটি ক্রিকেট মাঠ।
ক্রিকেটারদের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য সারদারঞ্জনের পরামর্শে মহারাজা টাউন ক্লাবে একজন পেশাদার ক্রিকেট কোচ নিয়োগ করতে চেয়েছিলেন। এ নিয়ে ক্লাব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জগদিন্দ্রনাথের মতপার্থক্য ঘটলে সারদারঞ্জন, তাঁর ক্রিকেটার দুই ভাই এবং মহারাজা টাউন ক্লাব ছেড়ে দিয়ে ১৯০১ সালে তৈরি করেন ‘নাটোর ইলেভেন’ ক্লাব। নাটোর পার্কের ক্রিকেট মাঠে সারদারঞ্জনের পরামর্শ ও তত্ত্বাবধানে চলত এ ক্লাবের অনুশীলন। কলকাতার বালিগঞ্জে এটিই ছিল তখনকার পূর্ববাংলার প্রথম ক্রিকেট ক্লাব। মহারাজা ছিলেন সে টিমের ক্যাপ্টেন। সারদারঞ্জন ছিলেন টিমের সব থেকে সিনিয়র সদস্য। তিনি সবাইকে ক্রিকেট সম্পর্কীয় সার্বিক জ্ঞান এবং শৃঙ্খলাবোধসহ ব্যক্তিত্ব বিকাশের ক্ষেত্রে পরামর্শ দিতেন।
সারদারঞ্জন রায় শুধু ক্রিকেটই খেলেননি, পুরো জীবন তিনি বাংলায় ক্রিকেট খেলা জনপ্রিয় করার কাজ করে গেছেন বলে তাঁকে বাংলায় ‘ক্রিকেটের জনক’ বলা হয়। আজ তাঁর ৯৭তম মৃত্যুদিন।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
২ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
২ দিন আগে