যেখানেই যাই, সবাই মেসি-ম্যারাডোনার কথা বলে

নাজিম আল শমষের
প্রকাশ : ২৮ নভেম্বর ২০২১, ০৭: ৩৭
আপডেট : ২৮ নভেম্বর ২০২১, ১৪: ৫৫

প্রশ্ন: নেদারল্যান্ডস, মালয়েশিয়ায় খেলার অভিজ্ঞতা আছে আপনাদের। বাংলাদেশে এসে কী পার্থক্য খুঁজে পেলেন? 
হোয়াকিন মেনিনি: মানের দিক দিয়ে বললে বলতে হয়, নেদারল্যান্ডসের হকি অনেক পেশাদার। বছরের পর বছর একজন খেলোয়াড় একটা ক্লাবের হয়েই খেলে। তাতে ক্লাব কৌশলের দিক থেকে শক্তিশালী হয়, ভালো খেলে। শুনেছি বাংলাদেশের খেলোয়াড়েরা নাকি একটা দলের সঙ্গে এক বা দুই মাসের চুক্তি করে। এখানকার খেলোয়াড়েরা আমাদের বলেছে, লিগ বন্ধ থাকায় তারা নাকি তিন বছর খেলতে পারেনি! তবু বলব, এখানের লিগের মান কিছুটা হলেও ভালো। তিন বছর আগে মালয়েশিয়ায় খেলেছি। সেখানকার লিগের সঙ্গে বাংলাদেশের লিগের তুলনা করা যায়। 

প্রশ্ন: মাঠ, আলো, আম্পায়ারিং আর বাকি সব দেখে কেমন মনে হলো? 
মেনিনি: মাঠ যথেষ্ট ভালো, টার্ফও মানসম্মত। মাঠে কিছু দর্শক দেখতে পেলে ভালো হতো।  

প্রশ্ন: গঞ্জালো পেইলাতের কাছে জানতে চাই, আপনার অভিজ্ঞতা কেমন?  
গঞ্জালো পেইলাত: চেষ্টা করছি দলের সঙ্গে মানিয়ে নিতে। আগে নিজেদের খেলার দিকে নজর দিচ্ছি, একই সঙ্গে চেষ্টা করছি দলের বাকিদের খেলাটার উন্নতি ঘটাতে। আমার মনে হয়, এই লিগটা আরও স্বীকৃতি পাওয়ার যোগ্য। রক্ষণ ভালো লেগেছে, কারণ প্রচুর আক্রমণ হয়। প্রতি দলেই ভালো স্ট্রাইকার আছে। আমরা আরও বড় ম্যাচ খেলতে চাই। 

প্রশ্ন: বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের বড় ঘাটতি কী মনে হয়েছে? 
পেইলাত: এ দেশের খেলোয়াড়েরা খুব বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পায় না, আমার কাছে এটা একটা বড় সমস্যা মনে হয়েছে। দ্বিতীয় সমস্যা, অবকাঠামো, দলের কাঠামোতেও সমস্যা আছে। পেশাদারিতে ঘাটতি আছে। সবাই সারা মাঠে দৌড়াতে থাকে, বলের পেছনে ছুটতে থাকে। খেলার একটা ধরন আছে। এটা সবাইকে আগে বুঝতে হবে। 

প্রশ্ন: মেনিনি, আপনার ফিটনেস যথেষ্ট ভালো। এত দ্রুত কেন জাতীয় দল থেকে অবসর নেওয়া? 
মেনিনি: না, না, আমি অবসর নিইনি। কোচ আমাকে দল থেকে বের করে দিয়েছেন। তিনি সোজা বলে দিয়েছেন জাতীয় দলে আমার জায়গা নেই! কারণ, আমি নাকি আর আগের মতো ভালো খেলতে পারি না। চিন্তা করলাম, বসে না থেকে অনুশীলনটা চালিয়ে যাই। যদি আবার জাতীয় দলে ফেরা যায়। আমি আবারও জাতীয় দলে খেলতে চাই। 

প্রশ্ন: আর্জেন্টিনায় ফুটবল এত জনপ্রিয়। ফুটবলের সঙ্গে হকির লড়াইটা সেখানে কেমন? 
মেনিনি: আর্জেন্টিনার ফুটবল অন্য মাত্রার। সবার আগে সেখানে ফুটবল, পরে বাকি সব খেলা। হকি আর্জেন্টিনায় খুব বেশি জনপ্রিয় নয়। আমাদের দেশে ফুটবল একটা ঐতিহ্য। সব সময় এক নাম্বার খেলা। ২০১৬ অলিম্পিকে সোনা জয়ের পর হকি কিছুটা হলেও জনপ্রিয় হতে শুরু করেছে। তবে ফুটবলের সঙ্গে কোনো তুলনাই চলে না।
 
প্রশ্ন: পেইলাতকে প্রশ্ন, ফুটবল বিশ্বকাপের সময় পুরো বাংলাদেশ ব্রাজিলের সঙ্গে আর্জেন্টিনার পতাকায় ছেয়ে যায়। ভিনদেশে নিজ দেশের পতাকার এত কদর, কেমন লাগে শুনতে?
পেইলাত: আসলেই দারুণ। বিশ্বের যেখানেই যাই, আর্জেন্টিনা নামটা শুনলেই সবাই অবাক হয়ে যায়। সবাই বলে, ওহ, তোমরা মেসি-ম্যারাডোনার দেশের মানুষ! আর্জেন্টিনা থেকে কেউ বাইরে গেলেই সবাই মেসি-ম্যারাডোনার কথা বলে। আমরা খেলার মানুষ, আমাদের বিষয়টা ভালোই লাগে।  

প্রশ্ন: আপনাদের কখনো মেসি-ম্যারাডোনার সঙ্গে দেখা হয়েছিল? 
পেইলাত: ম্যারাডোনার সঙ্গে একবার দেখা হয়েছিল। ২০১৫ সালে আর্জেন্টিনায় আমাদের খেলা চলছিল। ম্যারাডোনা মাঠে ছিলেন। খেলার মাঝ বিরতিতে তিনি আমাদের ড্রেসিংরুমে এসেছিলেন, আমাদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। সেটা দারুণ এক স্মৃতি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত