Ajker Patrika

ঝুঁকিতে রেলওয়ে সেতু

কৌশিক হাসান মামুন, বারহাট্টা
আপডেট : ০৭ এপ্রিল ২০২২, ১১: ৪৪
ঝুঁকিতে রেলওয়ে সেতু

সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ক্রমেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে নেত্রকোনার ধনাইখালী রেলসেতু। এটি বারহাট্টা উপজেলা ও নেত্রকোনা জেলা সদরের ঠাকুরোকোনা এলাকায় অবস্থিত। শত বছরের পুরোনো এই রেলসেতুতে কোনো সংস্কার ছাড়াই ঝুঁকি নিয়ে চলছে ট্রেন। সেতুটির বিভিন্ন স্থানে নষ্ট হয়ে গেছে স্লিপার, বিভিন্ন জয়েন্টের নাট নেই, লাইনে নেই ক্লিপ-হুক ও ফিশপ্লেটও। যেকোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। শতবর্ষী রেলসেতুটি সংস্কারে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়ার দাবি এলাকাবাসীর।

বাংলাদেশ রেলওয়ের ময়মনসিংহ অঞ্চলের প্রকৌশলীরা বলছেন, ময়মনসিংহ-বারহাট্টা-মোহনগঞ্জ লাইনের ঠাকুরোকোনা এলাকার বড় রেলসেতুটি ঝুঁকিতে থাকায় এর সংস্কার করা প্রয়োজন। তবে এই বছর ঠিকাদার দিয়ে সংস্কার করার মতো সুযোগ নেই। হয়তোবা সামনের বছর সংস্কার করা যেতে পারে।

জানা গেছে, ঠাকুরোকোনায় ধনাইখালী নদীর ওপর অবস্থিত রেলসেতুটি দিয়ে মোহনগঞ্জ-ময়মনসিংহ-ঢাকা লাইনে ২টি আন্তনগর ও একটি কমিউটার এবং মোহনগঞ্জ-বারহাট্টা-ময়মনসিংহ লাইনে দুটি লোকাল ট্রেন চলাচল করে। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাদের আক্রমণ ঠেকাতে সেতুটি ধ্বংস করা হয়। স্বাধীনতার পর সেতুটি সংস্কার করা হয়। এরপর দীর্ঘদিন কেটে গেলেও সেতুটির সংস্কার করা হয়নি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে রেলসেতুটির ১২৮টি স্লিপারের মধ্যে অধিকাংশ স্লিপার জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। অনেক স্লিপার ভেঙে নষ্ট হয়ে খসে পড়ছে। স্লিপারের নাটবল্টু নেই বহু জায়গায়। লাইন ধরে রাখার জন্য স্লিপারগুলোর হুকও নেই।

রেলওয়ে সেতুর কয়েকটি নাট উঠে গেছেহৃদয় নামের এক শিক্ষার্থী জানায়, ২০২০ সালের লকডাউনের কারণে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় রেলসেতুটির অনেক স্থান থেকে স্লিপার ও নাট-হুক চুরি হয়ে গেছে। ওই অবস্থায় চরম ঝুঁকির মধ্যে ট্রেন চলাচল করছে এ সেতু দিয়ে। এ ছাড়া রেলসেতুটিতে রেলিং বা সেফগার্ড নেই। তাই দ্রুত এটি সংস্কার করা প্রয়োজন।

কৃষক জালাল মিয়া বলেন, ‘আমরা ১৯৫২ সালে ঠাকুরোকোনা স্টেশন থেকে এই সেতু দিয়ে নানাবাড়ি মোহনগঞ্জে যেতাম। তখন বাস-ট্রাকের রাস্তা ছিল না। তাই রেলই ছিল একমাত্র ভরসা, কিন্তু এখন সেতুটি দেখলে কষ্ট লাগে। তাই ঠিকাদারের মাধ্যমে দ্রুত সেতুটির প্রয়োজনীয় সংস্কার করার দাবি জানাই।’

বারহাট্টা সমাজকল্যাণ সংস্থার সভাপতি এমদাদুল হক মিলন বলেন, ‘যতক্ষণ বড় ধরনের দুর্ঘটনা না ঘটে, ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয় না। এটি জাতীয় কালচার হয়ে গেছে। আমাদের দাবি, কোনো দুর্ঘটনার আগেই যেন এই রেলসেতু সংস্কার করা হয়।’

বারহাট্টা রেলস্টেশনের স্টেশনমাস্টার আতাউর রহমান বলেন, ‘ঠাকুরোকোনা রেলসেতুটি দ্রুত মেরামত করা প্রয়োজন। দ্রুত সেতুটির সংস্কার না হলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’

বাংলাদেশ রেলওয়ের ময়মনসিংহ অঞ্চলের সহকারী কার্যনির্বাহী প্রকৌশলী নারায়ণ পাল বলেন, ময়মনসিংহ-বারহাট্টা-মোহনগঞ্জ লাইনের ঠাকুরোকোনা এলাকার বড় রেলসেতুটি যেহেতু ঝুঁকিতে আছে, তাই এটার সংস্কার করা প্রয়োজন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণপিটুনিতে নিহত জামায়াত কর্মী নেজাম ও তাঁর বাহিনী গুলি ছোড়ে, মিলেছে বিদেশি পিস্তল: পুলিশ

রাজধানীতে ছিনতাইকারী সন্দেহে ইরানের দুই নাগরিককে মারধর

এক ছাতায় সব নাগরিক সেবা

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত