রোকনুজ্জামান মনি, ঢাকা
দিন গড়িয়ে রাত, রাত গড়িয়ে ভোর নামলেও এখানে কোলাহল লেগে থাকে যানবাহনের যাত্রী, ড্রাইভার, স্থায়ী ও অস্থায়ী দোকানদার আর দর্শনার্থীদের। মানুষ-গাড়ি-সওদাপাতি আর ইলিশ ভাজার গন্ধে গমগম করে পদ্মার দুই তীরের ফেরিঘাট। তবে সেতু চালু হলে ফেরিঘাটের চিরায়ত এই ব্যস্ততার যবনিকাপাত হয়ে যাবে ধীরে ধীরে। এ আশঙ্কা স্থানীয়দের। ফলে স্বাভাবিকভাবে নিজেদের জীবিকা নিয়ে সংশয়ে পড়েছেন ভাসমান দোকানি ও হকাররা। তবে জীবিকার এই সংকটেও সেতু পেয়ে তাঁদের মুখে আনন্দের হাসি।
১৬ বছর ধরে ফেরিতে বাদাম বিক্রি করেন বিল্লাল হোসেন (৩২)। এটাই তাঁর জীবিকা। এই করেই চলত ছয় সদস্যের সংসার। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিও তিনি। সেতু চালু হলে কী হবে, এ নিয়ে তিনি চিন্তিত। সামনে কীভাবে সংসার চলবে, তা-ও তাঁর জানা নেই। তবে কোনো একটা ব্যবস্থা হয়ে যাবে ভেবেই নিজেকে শক্ত করছেন তিনি। বিল্লাল বলেন, ‘জানি না কীভাবে সামনে সংসার চলবে। তবে আল্লাহ একটা ব্যবস্থা করবেই। এই সেতুটা আমাদের খুব দরকার ছিল। নিজেদের কিছু কষ্ট হলেও সেতু পেয়ে আমরা খুশি।’
বিল্লালের মতো বিনয় সরকারও (৫০) জীবনের প্রায় ৩০ বছর কাটিয়ে দিলেন ফেরিঘাটে। ছোটবেলায় বাবার বেতের মোড়া বানানো শিখে সেটাকেই জীবিকা বানিয়েছিলেন তিনি। ফেরিতে মোড়া বিক্রি করে বড় করেছেন সন্তানদের। বিয়ে দিয়েছেন দুই মেয়েকে। ছেলে বড় হয়েছে, বাবার সঙ্গে মোড়াও বিক্রি করে। ঘুরতে ঘুরতে বিনয় সরকারের সঙ্গে দেখা। তিনি বলেন, ‘সারাটা জীবন এখানেই কেটে গেল। এই ঘাটে আমাদের কত স্মৃতি তা কেমনে বোঝাই। এই ঘাট আমাদের সুখ-দুঃখের সাক্ষী। ফেরি বন্ধ হলে আমাদের এত দিনের কাজের ধারা বদলে যাবে। জীবন তো থেমে থাকবে না। তাই গ্রামে গ্রামে ঘুরে মোড়া বিক্রি করব। সবকিছু নতুনভাবে শুরু করতে হবে। তবে সেতু পেয়ে আমরা খুশি। এখন আমাদের এই অঞ্চলের আরও উন্নয়ন হলে আমরা উপকৃত হব।’
চার বছর ধরে ফেরিতে ডিম বিক্রি করে রাব্বি (১৫)। সকাল থেকে রাত কাটে তার ফেরিতে—ঘুমও সেখানে। মা-বাবা বেঁচে নেই। তাই এখানেই গড়ে উঠেছে তার ভাসমান সংসার আর ব্যবসা। সেতু চালু হলে ফেরি বন্ধ হবে, সে কথা জানে রাব্বি। তাই ঠিক করেছে ঢাকায় চলে আসবে। গার্মেন্টসে কাজ নেবে। অথচ এই শহরে তার পরিচিত কেউ নেই। ঘরসংসার, পরিবার বলতে তার সেই ফেরি আর ফেরিঘাট। মায়া আর পিছুটানের সেই ঘাট ছেড়ে আসার কথা বলতেই দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে রাব্বি। তবে ‘মাইনসের খুব উপকার হইবো ছার’ বলে তৃপ্তির চোখে তাকায় উত্তাল পদ্মার দিকে।
স্বপ্নের পদ্মা সেতু সম্পর্কে সবশেষ খবর পেতে - এখানে ক্লিক করুন
জীবিকার কী হবে—প্রশ্নটা সবার। তবে বিল্লাল হোসেন, বিনয় সরকার কিংবা রাব্বির মতো ভাসমান ব্যবসায়ীদের কাছে প্রশ্নটা আরও বড়। অথচ এই মানুষগুলোই নিজেদের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা বিবেচনায় রেখেও ভাবছেন, দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়ন হবে, মানুষের ভোগান্তি কমবে। জীবিকার আশঙ্কার এই সময়েও এক বিরাট জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বপ্ন আর ভোগান্তি কমার সম্ভাবনা এই মানুষদের কাছেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
পদ্মা সেতু সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
দিন গড়িয়ে রাত, রাত গড়িয়ে ভোর নামলেও এখানে কোলাহল লেগে থাকে যানবাহনের যাত্রী, ড্রাইভার, স্থায়ী ও অস্থায়ী দোকানদার আর দর্শনার্থীদের। মানুষ-গাড়ি-সওদাপাতি আর ইলিশ ভাজার গন্ধে গমগম করে পদ্মার দুই তীরের ফেরিঘাট। তবে সেতু চালু হলে ফেরিঘাটের চিরায়ত এই ব্যস্ততার যবনিকাপাত হয়ে যাবে ধীরে ধীরে। এ আশঙ্কা স্থানীয়দের। ফলে স্বাভাবিকভাবে নিজেদের জীবিকা নিয়ে সংশয়ে পড়েছেন ভাসমান দোকানি ও হকাররা। তবে জীবিকার এই সংকটেও সেতু পেয়ে তাঁদের মুখে আনন্দের হাসি।
১৬ বছর ধরে ফেরিতে বাদাম বিক্রি করেন বিল্লাল হোসেন (৩২)। এটাই তাঁর জীবিকা। এই করেই চলত ছয় সদস্যের সংসার। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিও তিনি। সেতু চালু হলে কী হবে, এ নিয়ে তিনি চিন্তিত। সামনে কীভাবে সংসার চলবে, তা-ও তাঁর জানা নেই। তবে কোনো একটা ব্যবস্থা হয়ে যাবে ভেবেই নিজেকে শক্ত করছেন তিনি। বিল্লাল বলেন, ‘জানি না কীভাবে সামনে সংসার চলবে। তবে আল্লাহ একটা ব্যবস্থা করবেই। এই সেতুটা আমাদের খুব দরকার ছিল। নিজেদের কিছু কষ্ট হলেও সেতু পেয়ে আমরা খুশি।’
বিল্লালের মতো বিনয় সরকারও (৫০) জীবনের প্রায় ৩০ বছর কাটিয়ে দিলেন ফেরিঘাটে। ছোটবেলায় বাবার বেতের মোড়া বানানো শিখে সেটাকেই জীবিকা বানিয়েছিলেন তিনি। ফেরিতে মোড়া বিক্রি করে বড় করেছেন সন্তানদের। বিয়ে দিয়েছেন দুই মেয়েকে। ছেলে বড় হয়েছে, বাবার সঙ্গে মোড়াও বিক্রি করে। ঘুরতে ঘুরতে বিনয় সরকারের সঙ্গে দেখা। তিনি বলেন, ‘সারাটা জীবন এখানেই কেটে গেল। এই ঘাটে আমাদের কত স্মৃতি তা কেমনে বোঝাই। এই ঘাট আমাদের সুখ-দুঃখের সাক্ষী। ফেরি বন্ধ হলে আমাদের এত দিনের কাজের ধারা বদলে যাবে। জীবন তো থেমে থাকবে না। তাই গ্রামে গ্রামে ঘুরে মোড়া বিক্রি করব। সবকিছু নতুনভাবে শুরু করতে হবে। তবে সেতু পেয়ে আমরা খুশি। এখন আমাদের এই অঞ্চলের আরও উন্নয়ন হলে আমরা উপকৃত হব।’
চার বছর ধরে ফেরিতে ডিম বিক্রি করে রাব্বি (১৫)। সকাল থেকে রাত কাটে তার ফেরিতে—ঘুমও সেখানে। মা-বাবা বেঁচে নেই। তাই এখানেই গড়ে উঠেছে তার ভাসমান সংসার আর ব্যবসা। সেতু চালু হলে ফেরি বন্ধ হবে, সে কথা জানে রাব্বি। তাই ঠিক করেছে ঢাকায় চলে আসবে। গার্মেন্টসে কাজ নেবে। অথচ এই শহরে তার পরিচিত কেউ নেই। ঘরসংসার, পরিবার বলতে তার সেই ফেরি আর ফেরিঘাট। মায়া আর পিছুটানের সেই ঘাট ছেড়ে আসার কথা বলতেই দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে রাব্বি। তবে ‘মাইনসের খুব উপকার হইবো ছার’ বলে তৃপ্তির চোখে তাকায় উত্তাল পদ্মার দিকে।
স্বপ্নের পদ্মা সেতু সম্পর্কে সবশেষ খবর পেতে - এখানে ক্লিক করুন
জীবিকার কী হবে—প্রশ্নটা সবার। তবে বিল্লাল হোসেন, বিনয় সরকার কিংবা রাব্বির মতো ভাসমান ব্যবসায়ীদের কাছে প্রশ্নটা আরও বড়। অথচ এই মানুষগুলোই নিজেদের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা বিবেচনায় রেখেও ভাবছেন, দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়ন হবে, মানুষের ভোগান্তি কমবে। জীবিকার আশঙ্কার এই সময়েও এক বিরাট জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বপ্ন আর ভোগান্তি কমার সম্ভাবনা এই মানুষদের কাছেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
পদ্মা সেতু সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে