বোরো আবাদ নিয়ে শঙ্কা

মাইনউদ্দিন শাহেদ, কক্সবাজার
প্রকাশ : ৩১ জানুয়ারি ২০২২, ০৮: ১০
আপডেট : ৩১ জানুয়ারি ২০২২, ১২: ১৬

এখন বোরো আবাদের ভরা মৌসুম। কৃষকেরা পুরোদমে চাষাবাদে নেমেছেন। অথচ সেচের অভাবে কক্সবাজার সদর ও রামুর চার ইউনিয়নের কয়েক হাজার কৃষক চাষাবাদে নামতে পারেননি। এতে এসব এলাকার তিন হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি পড়ে আছে। তবে গতকাল রোববার বাঁধ নির্মাণ শেষ পর্যায়ে আনা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

জানা গেছে, যথাসময়ে বাঁকখালী নদীর ওপর নির্মিত সেচ বাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় চাষাবাদ নিয়ে এ সমস্যায় পড়েছেন কৃষকেরা।

কৃষকেরা জানান, বাঁকখালী নদীর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) রাবার ড্যামটি অকেজো হয়ে পড়েছে। দরপত্রের পর ঠিক সময়ে কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

এলজিইডি সূত্র জানায়, সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের চান্দেরপাড়া এলাকার অকেজো রাবার ড্যামের পাশাপাশি কৃষকদের সেচ সুবিধার লক্ষ্যে ১ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি দরপত্র আহ্বান করা হয়। কাজটি বাস্তবায়নে মোহাম্মদ ফারুক নামের একজন ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়।

স্থানীয় কৃষকেরা বলেন, এ বাঁধের ওপর নির্ভর করে সদর উপজেলার পিএমখালী, ঝিলংজা ও পৌরসভার কয়েকটি এলাকা এবং রামু উপজেলার চাকমারকুল ও মিঠাছড়ি ইউনিয়নের প্রায় তিন হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ করা হয়। এতে জড়িত রয়েছেন প্রায় তিন হাজার কৃষক।

কৃষকেরা অভিযোগ করেন, ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে বাঁধটি যথাসময়ে নির্মাণ করা যায়নি।

পিএমখালী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. শহিদুল্লাহ বলেন, বোরো আবাদের এখন আসল সময়। তবে পানির কারণে চাষিরা জমি তৈরি করতে পারছেন না। অথচ মৌসুম শুরুর আগেই বাঁধটি নির্মাণ শেষ করার কথা ছিল।

এদিকে ২৬ জানুয়ারি স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব বরাবর কৃষকেরা এর প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেছেন।

পিএমখালীর মোস্তাক আহামদ বলেন, গত বছরও অসময়ে বাঁধ নির্মাণ করে সংশ্লিষ্টরা বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করেছে। এ বছরও একই কাজে নেমেছে। চলতি বছর বোরো মৌসুমের শুরুতেই বাঁধ নির্মাণে তাগাদা দিয়ে কাজ হয়নি।

চাকমারকুল এলাকার কৃষক আবুল কাসেম ও মোহাম্মদ হোসেন বলেন, সেচের অভাবে তাঁরা মরিচ, ফুলকপি, টমেটোসহ শীতকালীন শবজি চাষ নিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন। এতে অধিকাংশ কৃষকের লোকসান গুনতে হবে।

এ ব্যাপারে ঠিকাদার মোহাম্মদ ফারুক গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, দু-তিন দফায় বাঁধের কাজ শেষ পর্যায়ে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু চূড়ান্তভাবে বাঁধের কাজ শেষ করা যায়নি। সামুদ্রিক জোয়ারের ধাক্কা ও একবার বৃষ্টির কারণে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে কক্সবাজার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী প্রতীক দেওয়ান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আজকালের মধ্যে বাঁধের কাজ শেষ করা হবে। আশা করি কৃষকদের সমস্যা দ্রুত সমাধান হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত