ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত

তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ আগস্ট ২০২২, ১৪: ২৭
Thumbnail image

বছরের এই সময়ে শত শত নৌকা আর পর্যটকে মুখর থাকে টাঙ্গুয়ার হাওরসহ সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার দর্শনীয় স্থানগুলো। পর্যটকেরা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাওরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে আসেন এই স্থানগুলোতে।

কিন্তু এ বছর ভয়াবহ বন্যার পর তাহিরপুর উপজেলা প্রশাসন পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। ফলে ব্যবসা করতে না পারায় ব্যবসায়ীসহ পর্যটন-সংশ্লিষ্টদের মাথায় হাত পড়েছে।

ব্যবসায়ীসহ পর্যটন-সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বছরের এই সময়টাতে নৌ-মালিক ও শ্রমিকেরা অপেক্ষায় থাকেন পর্যটকের। জমজমাট ব্যবসা হয় তাঁদের। কিন্তু এবার ভয়াবহ বন্যার কারণে তাহিরপুর উপজেলাসহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে দেখা নেই তেমন পর্যটকের। হাতে গোনা কিছু পর্যটক আসছেন। দোকানপাট, হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোতে অলস সময় কাটাচ্ছেন শ্রমিকেরা। হাওরের নৌযানগুলোর মালিক-শ্রমিকের অবস্থা বেশি খারাপ। প্রতিদিনের খরচই উঠছে না।

বছরের এই সময়টার জন্য নৌযানগুলো অত্যাধুনিকভাবে সাজানো হয় পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য। একপ্রকার প্রতিযোগিতা করেই সাজানো হয় পর্যটকবাহী নৌকাগুলো। এবার পর্যটকবাহী বিলাসবহুল নৌকাও যুক্ত হয়েছে বহরে। কিন্তু আশানুরূপ পর্যটক না আসায় হতাশার মধ্যে দিনাতিপাত করছেন নৌযানের মালিক-শ্রমিকেরা।

কথা হয় তাহিরপুর উপজেলার নৌ শ্রমিক আমির আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা হাওর এলাকার মানুষ বছরের ৬ মাসই বেকার থাকি। আমি ছয়টা মাস নৌকাত থাকি। যা পাই তা দিয়া কোনোরকমে দিন চলে। কিন্তু এবার পর্যটক বেশি আইতাছে না। আমরা খুব কষ্ট কইরা চলতাছি।’

শ্রমিক ইকবাল হোসেন বলেন, ‘পর্যটক না আইলে আমরা একেবারে অসহায়ের মতোই থাকি। পর্যটকরারে নৌকাত লইয়া ঘুরাইলে মালিকও টাকা দেয়। পর্যটকরাও খুশি হইয়া যা দেয় তাই আমরা খুশি থাকি। এইবার পানি যাইবার সময় হইয়া যাইতাছে ওখন পর্যন্ত তেমন পর্যটক নাই। ১৫ দিনেও একটা টিপ পাই না। কেমনে চলমু আমরা।’

শুধু শ্রমিকেরাই নন, লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে নৌকা তৈরি করা হয়েছে পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য। কিন্তু এবার পর্যটক নেই বললেই চলে। নৌ-মালিকেরাও চরম হতাশায় আছেন।

মেঘালয় নৌ-পরিবহনের পরিচালক ফকির আলম বলেন, ‘অন্য বছরের তুলনায় এ বছর পর্যটকের আগমন নেই বললেই চলে। আমরা নৌকা পরিচালনার দায়িত্বে যারা আছি, বর্তমানে বেকার হয়ে আছি।’

নিশাত-১ নৌ-পরিবহনের পরিচালক তোফাজ্জল হোসেন বলেন, তাহিরপুরে বন্যা পরিস্থিতির পর প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে পর্যটক আসা বন্ধ রয়েছে। নৌ-মাঝিদের কথা মানবিক দৃষ্টিতে বিবেচনা করে প্রশাসন নিষেধাজ্ঞা আরোপ বন্ধ ঘোষণা করলে অবশ্যই পর্যটকদের আগমন ঘটবে।

তাহিরপুর নৌ-পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বলেন, ‘তাহিরপুর উপজেলায় কয়েক হাজার পরিবার পর্যটকদের নৌকা ভাড়া দিযে জীবিকা নির্বাহ করে। কিন্তু প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা থাকায় পর্যটক আসা বন্ধ রয়েছে। আমরা নৌ-পরিবহন সমিতির পক্ষ থেকে দাবি জানাই, প্রশাসন যেন দ্রুত পর্যটকদের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি প্রত্যাহার ঘোষণা করে।’

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও মো. রায়হান কবির বলেন, ‘বন্যা পরিস্থিতির কারণে তাহিরপুরে পর্যটকদের আগমনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। আমরা খুব শিগগির নিষেধাজ্ঞা তুলে নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত