আটা-ময়দার বাড়তি দামে উদ্বেগে ক্রেতা

জুবাইদুল ইসলাম, শেরপুর
প্রকাশ : ২৮ মে ২০২২, ১৫: ২৪

শেরপুরে দুই মাসের ব্যবধানে আটা ও ময়দার দাম কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। আটা-ময়দার মূল্য বৃদ্ধির কারণে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন ক্রেতাসাধারণ। তবে জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বলছে, দাম বাড়লেও বাজারে এখনো পর্যাপ্ত মজুত থাকায় বড় ধরনের সংকটের আশঙ্কা নেই। তবে নতুন করে 
কেউ যাতে কৃত্রিম সংকট তৈরি না করতে পারে সে জন্য নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে অধিদপ্তর।

ব্যবসায়ীরা জানান, বিশ্বের গম উৎপাদক বড় দেশ ইউক্রেন ও রাশিয়ায় যুদ্ধের কারণে সারা দেশে আটা-ময়দার দাম বেড়েছে। এর প্রভাব পড়ছে শেরপুরেও। গত দুই মাসের ব্যবধানে বস্তাপ্রতি ময়দার দাম বেড়েছে প্রায় দেড় গুণ। আটার দামও একই অবস্থা।

গতকাল শুক্রবার দুপুরে শেরপুর শহরের বিভিন্ন খুচরা ও পাইকারি দোকান ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি বস্তা ময়দা (প্রতি বস্তায় ৭৪ কেজি) বিক্রি হচ্ছে প্রায় চার হাজার টাকায়। গত দুই মাস আগেও যেটি ছিল দুই হাজার সাত শ টাকা করে। এর ফলে প্রতি কেজিতে আটা-ময়দার দাম বেড়ে গেছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। খুচরা বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি আটা বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকায় এবং ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬০ টাকা দরে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারি বাজারে দাম বাড়ায় তাঁরা বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। শহরের নয়ানী বাজারের একাধিক পাইকারি ও খুচরা দোকানি জানান, তারা ঢাকা থেকেই বেশি দামে আটা-ময়দা কিনে এনে সেই হিসেবেই বিক্রি করছেন। বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে না।

শহরের গৌরীপুর এলাকার বাসিন্দা আব্দুল কুদ্দুস জানান, আটা-ময়দার দাম বেড়েই চলছে। এভাবে একটার পর একটা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়লে আমরা যাব কোথায়?

সজবরখিলা এলাকার মো. আখতারুজ্জামান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এমনিতেই বাজারের বেশির ভাগ ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়তি। এখন আবার আটা-ময়দার দাম বাড়ছে। এটা যেন মরার ওপর খাঁড়ার ঘা।

এদিকে ময়দার দামও বেড়ে যাওয়ায় শহরের বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁয় রুটির আকারও কিছুটা ছোট হয়ে গেছে। তবে হোটেল রেস্তোরাঁ মালিকেরা বলছেন, সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় তাদের কিছু করার নেই।

শহরের নিউমার্কেট এলাকার অনুরাধা মিষ্টান্ন ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী বাপ্পী দে জানান, দুই/তিন মাস আগেও যে ময়দার বস্তা ২৬০০ থেকে ২৭০০ টাকা দরে কিনতাম, সেটি এখন চার হাজার টাকা করে হয়ে গেছে। সয়াবিন তেলের দাম তো বাড়তিই। বাজারে সবকিছুই ঊর্ধ্বগতি। এ সবকিছুর প্রভাব পড়ছে আমাদের ব্যবসাতেও।

খোয়ারপাড় শাপলাচত্বর মোড় এলাকার হোটেল আবির-নিবিরের স্বত্বাধিকারী মো. মনিরুজ্জামান বলেন, যেভাবে আটা-ময়দার দাম বাড়ছে, তাতে করে রুটি বিক্রি কঠিন হয়ে পড়েছে।

এ ব্যাপারে জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ বিভাগের সহকারী পরিচালক রুবেল আহমেদ বলেন, ‘আটা-ময়দার দাম বৃদ্ধি হলেও শহরের কেউ যেন কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে না পারেন, সে জন্য নিয়মিত শহরের বিভিন্ন দোকানে মনিটরিং করা হচ্ছে। এ ছাড়া প্যাকেটের আটা ময়দা যেন নির্দিষ্ট দামের বাইরে কেউ বিক্রি না করেন সে জন্য ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়েছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত