Ajker Patrika

সাজা পাঁচ বছর, আপিল নিষ্পত্তিতে ৩৩ বছর

এস এম নূর মোহাম্মদ, ঢাকা
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৩, ১০: ৫৭
সাজা পাঁচ বছর, আপিল নিষ্পত্তিতে ৩৩ বছর

পাঁচ বছরের সাজার রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল নিষ্পত্তিতে লেগেছে প্রায় ৩৩ বছর। আপিলটি করেছিলেন এ বি এম আব্দুস সামাদ। তিনি সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার চক শাহবাজপুর কৃষক সমবায় সমিতির ব্যবস্থাপক ও ঝায়ৈল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ছিলেন।

আইনজীবীরা বলছেন, জামিনের পর আসামি যোগাযোগ রাখলে আপিল নিষ্পত্তিতে এত বছর লাগত না।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, কামারখন্দ প্রকল্প কর্মকর্তা (আইআরডিপি) বরাবর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ফসল উৎপাদনে কৃষকদের মধ্যে বিতরণের জন্য আব্দুস সামাদকে ১৯৭৮ সালের ৩০ আগস্ট ছয় হাজার টাকা দেওয়া হয়। তিনি তা বিতরণ করেন। পরে ওই টাকার মধ্যে ৩ হাজার ৪৯৩ টাকা আদায় করলেও জমা দেন ৭৯৬ টাকা। বারবার তাগাদা দেওয়া হলেও তিনি বাকি ২ হাজার ৬৯৭ টাকা জমা দেননি। ওই টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ১৯৮১ সালের ২৯ এপ্রিল তাঁর বিরুদ্ধে কামারখন্দ থানায় মামলা করা হয়। তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরোর পরিদর্শক ইলিয়াছ উদ্দিন আহমেদ তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দেন।

নথি থেকে জানা যায়, রাজশাহীর বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালত ১৯৮৭ সালের ১২ আগস্ট এই মামলার রায়ে আব্দুস সামাদকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও তিন হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে তিনি ১৯৮৮ সালের ৩ জুলাই আপিল করেন। ওই বছরের ৯ নভেম্বর আপিলটি শুনানির জন্য হাইকোর্টে গৃহীত হয়। উচ্চ আদালত সামাদকে ১৯৮৯ সালের ২৩ জানুয়ারি জামিন দেন। ১৯৯৫ সালের ১৬ আগস্ট নিম্ন আদালতের নথি পাওয়ার পর পেপারবুক তৈরি করা হয়। শুনানির জন্য প্রস্তুত হয় ২০১৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি।

শুনানি শেষে গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি রায় দেন বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ার্দীর বেঞ্চ। রায়ে হাইকোর্ট আপিল নামঞ্জুর করে দণ্ড বহাল রাখেন। তবে সাজার মেয়াদ পরিবর্তন করে তাঁর কারাবাসের সময়কে মেয়াদ সম্পূর্ণ হয়েছে মর্মে গণ্য করা হয়। জরিমানা আদায়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ব্যয় হওয়া সময় ও আর্থিক মূল্য রায়ে প্রদত্ত আদায়যোগ্য জরিমানার থেকে বেশি বিবেচনায় জরিমানা মওকুফ করা হয়।

হাইকোর্ট বলেন, মামলার ঘটনাকালের ৪০ বছর এবং আপিলের পর ৩৩ বছর পার হয়েছে। অতিরিক্ত বিলম্বের কারণে পক্ষরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি গত ২১ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হয়।

আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহীন আহমেদ। সামাদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুল হাই সরকার। শাহীন আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, আসামি যোগাযোগ করলে হয়তো আরও আগে আপিলটি নিষ্পত্তি হতে পারত। আপিলে শুরুতে দুদককে পক্ষ করা হয়নি। সম্প্রতি পুরোনো মামলা নিষ্পত্তির উদ্যোগ নিলে দুদক পক্ষভুক্ত হয়ে শুনানিতে অংশ নেয়।

আইনজীবী আব্দুল হাই সরকারও জামিন পেলে আসামির যোগাযোগ না রাখার কথা জানান। তিনি বলেন, এ জন্য মামলা নিষ্পত্তিতে দেরি হয়। তবে রাষ্ট্রপক্ষের উচিত এসব মামলা উদ্যোগ নিয়ে নিষ্পত্তি করা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণপিটুনিতে নিহত জামায়াত কর্মী নেজাম ও তাঁর বাহিনী গুলি ছোড়ে, মিলেছে বিদেশি পিস্তল: পুলিশ

রাজধানীতে ছিনতাইকারী সন্দেহে ইরানের দুই নাগরিককে মারধর

এক ছাতায় সব নাগরিক সেবা

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত