বাংলাদেশে বিনিয়োগে এক নম্বর হবে চীন

সাজ্জাদ হোসেন
প্রকাশ : ১২ মার্চ ২০২৩, ১২: ০৮

এফবিসিসিআইয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে দেশে প্রথমবারের মতো শুরু হলো তিন দিনের বিজনেস সামিট-২০২৩। সামিটের উদ্বোধনী পর্বে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। তিনি আজকের পত্রিকার সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশে চীনের ভবিষ্যৎ বিনিয়োগ নিয়ে কথা বলেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাজ্জাদ হোসেন।

আজকের পত্রিকা: বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে চীনের ভাবনা কী? 
ইয়াও ওয়েন: উদ্বোধনী বক্তৃতায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিনিয়োগ নিয়ে খুবই আশাব্যঞ্জক কথা বলেছেন। অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন উড্ডয়নের পথে। আপনারা স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের পথে আছেন। তা ছাড়া স্বল্পোন্নত দেশ হয়েও বিশ্বে দেনদরবার করছেন। অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ এখন বিভিন্ন সুযোগ খুঁজছে। একই সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা থেকে উন্নয়ন সহায়তা প্রত্যাশা করছে। বাংলাদেশের এই অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় পাশে থাকবে চীন। এর জন্য যা যা দরকার, চীন সবই করবে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে এ ধরনের সামিট খুবই কাঙ্ক্ষিত। এতে আন্তর্জাতিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অংশগ্রহণের পথ প্রশস্ত হবে।

আজকের পত্রিকা: সামিটে কয়টি চীনা কোম্পানি অংশ নিয়েছে? 
ইয়াও ওয়েন: চীনের ৩০টির বেশি বড় কোম্পানি ও তাদের প্রতিনিধিরা এই সামিটে অংশ নিয়েছেন। চীন সরকারের প্রতিনিধিরাও তাঁদের সঙ্গে আছেন। বাংলাদেশে ব্যবসা ও বিনিয়োগের সুযোগ খুঁজতে চীন সম্ভাব্য সবকিছু করবে।

আজকের পত্রিকা: চীন বাংলাদেশের কোন কোন খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী? 
ইয়াও ওয়েন: বাংলাদেশে প্রথমে আইসিটি খাতে বিনিয়োগ করতে চাইছে চীন। আমরা এই খাতে এখনো কাজ করছি। আমরা বাংলাদেশে সিক্স-জি নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে চাই। সবুজ জ্বালানিতে বিনিয়োগ করারও পরিকল্পনা আছে। একই সঙ্গে আমরা কৃষি খাতসহ কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে বিনিয়োগে আগ্রহী।

আজকের পত্রিকা: চীনের অনেক পোশাক কারখানা বিভিন্ন দেশে স্থানান্তর করা হচ্ছে। বাংলাদেশে স্থানান্তরের কোনো পরিকল্পনা আছে কি না?
ইয়াও ওয়েন: চীনা বিনিয়োগের অন্যতম আকর্ষণীয় খাত বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প। বাংলাদেশে তৈরি পোশাক খাতের সব কাঁচামাল উৎপাদনে চীন সাহায্য করতে চায়। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ উৎপাদনব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই আমরা। এটা করা গেলে বাংলাদেশ পোশাক খাতের জন্য যেসব কাঁচামাল চীনসহ অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করে, তা আর করা লাগবে না। বাংলাদেশ তখন টেক্সটাইল ও তৈরি পোশাকশিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদন করতে পারবে। স্থানীয় পর্যায়ে কাঁচামাল উৎপাদন করা গেলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প বিশ্ববাজারে আরও বেশি প্রতিযোগিতামূলক হবে। এভাবে আমরা তৈরি পোশাক খাতে সহযোগিতা বাড়াতে পারি এবং পোশাকশিল্পে বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যেতে পারবে। 

আজকের পত্রিকা: আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে চীন নিজেদের কোন জায়গায় দেখতে চায়? ইয়াং ওয়েন: চীন এরই মধ্যে বাংলাদেশ দ্বিতীয় বৃহত্তম বিদেশি বিনিয়োগকারী। আমাদের পরিকল্পনা, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে বাংলাদেশে চীন হবে এক নম্বর বিদেশি বিনিয়োগকারী। 

আজকের পত্রিকা: সামনের পাঁচ বছরে কী পরিমাণ বিনিয়োগের পরিকল্পনা আছে? 
ইয়াং ওয়েন: এখনই সুনির্দিষ্ট কোনো পরিমাণ বলতে পারব না। তবে এটা বলতে পারি, আগামী পাঁচ বছরে চীনের বিনিয়োগ প্রতিবছরে কমপক্ষে ১ বিলিয়ন (১০০ কোটি) মার্কিন ডলার হবে।

আজকের পত্রিকা: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। 
ইয়াং ওয়েন: আপনাকেও ধন্যবাদ।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত