২৭ বার ভেঙে পড়া সেতু দিয়ে চলছে যাতায়াত

রাতুল মণ্ডল, শ্রীপুর (গাজীপুর) 
Thumbnail image

‘একটি ব্রিজের জন্য চার বছর ধরে কষ্ট করছি। যাত্রীসহ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছি। হঠাৎ করে ব্রিজের স্লিপার খুলে নদীতে পড়ে যায়। এতে যাত্রীরা আহত হন। আমাদের গাড়ির ক্ষতি হয়। হঠাৎ করে ব্রিজ ভেঙে গেলে পাঁচ কিলোমিটার ভাঙা সড়ক ঘুরে গন্তব্যে পৌঁছাতে হয়। খুবই ভোগান্তি হচ্ছে হাজার হাজার মানুষের।’ 

কথাগুলো বলছিলেন গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার কাওরাইদ গ্রামের সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক কামাল হোসেন। 
ব্রিজটির অবস্থান উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের সোনাব গ্রামের চৌধুরীঘাট এলাকার মাটিকাটা নদীর ওপর। এ ব্রিজ হয়েই চলে গেছে জৈনাবাজার-কাওরাইদ আঞ্চলিক সড়ক। এ সড়ক হয়ে কাওরাইদ ইউনিয়ন, পাশের তেলিহাটি ইউনিয়ন এবং ময়মনসিংহের ভালুকা ও গফরগাঁও উপজেলার শতাধিক গ্রামের শ্রমিকেরা শ্রীপুর উপজেলার বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করেন। 

কিন্তু ব্রিজের বিভিন্ন স্লিপার, পাটাতন লক্কড়ঝক্কড় অবস্থায় রয়েছে। মাঝেমধ্যেই ব্রিজের স্লিপার খুলে নদীতে পড়ে যায়। গত তিন বছরে ব্রিজটি ভেঙেছে কমপক্ষে ২৭ বার। এরপর সংশ্লিষ্টরা কোনোমতে সারিয়ে যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা করেন। গুরুত্ব বিবেচনা করে গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর ৮১ মিটার দীর্ঘ ব্রিজ নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হয়। কিন্তু উদ্বোধনের আট মাস পেরিয়ে গেলেও এক কোদাল মাটিও কাটা হয়নি। ফলে যেকোনো সময় ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি ব্রিজটি ভেঙে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কায় থাকেন চলাচলকারীরা। 

স্থানীয় বাসিন্দা লিয়াকত আলী বলেন, উদ্বোধনের এত দিন পরও কোনো কাজ হয়নি। এক কোদাল মাটিও কাটা হয়নি। আমরা ব্রিজের পাশের মানুষ। তাই কষ্ট আর ভোগান্তি কাকে বলে আমরা দেখি। এমন হয়, মধ্যরাতে বা ভোরে হঠাৎ ব্রিজের পাটাতন ভেঙে গেছে। এরপর চার কিলোমিটার ঘুরে গন্তব্যে পৌঁছাতে হয় চলাচলকারীদের। 

কাওরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আলম খান বলেন, ‘এই ব্রিজের সমস্যার কথা নতুন করে কী বলব। কতবার ভাঙছে, এর হিসাব নেই। আট মাস আগে সাবেক সংসদ সদস্য নির্মাণকাজের উদ্বোধন করলেন। এরপর আর কোনো খবর নেই। আমরা বর্তমান এমপিকে বিষয়টি জানিয়েছি। তিনি আমাদের কথা দিয়েছেন, দ্রুত নতুন ব্রিজ নির্মাণের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করবেন।’ 
কাওরাইদ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজিজুল হক বলেন, আট মাস আগে উদ্বোধন হলেও জমি অধিগ্রহণ জটিলতার কারণে কাজ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এ জন্য প্রকল্প বাতিল হয়েছে। 

উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুস সামাদ পত্তনদার বলেন, ‘আমি এই উপজেলায় যোগদানের আগে ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ব্রিজ নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হয়েছিল। কিন্তু যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করায় প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখেনি। নতুন করে প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে ব্রিজটি নির্মাণের চেষ্টা চলছে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত