Ajker Patrika

বাচ্চু কেন অধরা

সম্পাদকীয়
আপডেট : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৭: ৩০
বাচ্চু কেন অধরা

দেশে সামাজিক ব্যাধিগুলোর মধ্যে দুর্নীতি অন্যতম। অন্য অনেক কিছুর মতো এই ব্যাধিরও সেরে ওঠার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না; বরং তা জ্যামিতিক হারে বাড়ছে। এ নিয়ে আজকের  পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। আমরা কথায় কথায় দেশপ্রেমের কথা বলি। আর এই দেশপ্রেমের কথা তথাকথিত শিক্ষিত শ্রেণির মানুষজন বেশি বলে থাকেন। শিক্ষিত তিনি, যিনি একাডেমিকভাবে ভালো রেজাল্ট করে উচ্চশিক্ষার সনদ নেন। এরপর সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বড় বড় চেয়ারে বসেন। খেয়াল করলে দেখা যাবে, এই তথাকথিত শিক্ষিতজনেরাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেশের অনিষ্টের জন্য দায়ী। শ্রমিক, কৃষক, উদ্যোক্তা ও রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের টাকায় দেশের অর্থনীতি তরতর করে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এই এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বড় বাধা হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছে দেশেরই একশ্রেণির আমলা, প্রশাসক ও ব্যাংকের বড় কর্মকর্তারা। তাঁদের ব্যক্তিস্বার্থের জন্য দেশের অর্থনীতি বারবার পিছিয়ে যাচ্ছে।

২০০৯ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের গুলশান, দিলকুশা ও শান্তিনগর শাখা থেকে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ অনিয়মের মাধ্যমে বিতরণের অভিযোগ ওঠে। এর পরপরই অনুসন্ধানে নামে দুদক। অনুসন্ধানে জানা যায়, যাচাই না করে জামানত ছাড়া জাল দলিলে ভুয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বিধিবহির্ভূতভাবে ঋণ অনুমোদনের অভিযোগ ওঠে ব্যাংকটির তখনকার পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে। প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা লোপাট করার অভিযোগে ২০১৫ সালে ৫৮টি মামলায় আসামি করা হয় ১২০ জনকে। কিন্তু দীর্ঘ সময়েও তদন্ত শেষ করতে না পারায় হাইকোর্ট কয়েকবার অসন্তোষ প্রকাশ করার পর ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর এই ঋণ কেলেঙ্কারির তদন্ত শেষ করতে দুদককে তিন মাস সময় বেঁধে দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ১২ জুন এসব মামলার চার্জশিট দেওয়া হয়। আর চার্জশিটে প্রধান আসামি হিসেবে অভিযুক্ত করা হয় ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চুকে। এরপর তিনি গত ৯ আগস্ট আগাম জামিন চেয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন করেন। তবে আবেদনটি কোনো বেঞ্চে উপস্থাপন করা হয়নি বলে জানা যায়। কারণ চার্জশিট হওয়ার পর আগাম জামিনের সুযোগ নেই। চার্জশিট দেওয়ার আড়াই মাসেও বাচ্চুকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।

একশ্রেণির অসৎ ব্যবসায়ী ও শিল্পপতির বিরুদ্ধে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তা মেরে দেওয়ার অভিযোগ আছে। তাঁদের সঙ্গে নতুন একশ্রেণির ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও উঠছে টাকা মেরে দেওয়ার অভিযোগ। রক্ষক যদি ভক্ষক হয়, তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে? মানুষ ব্যাংকে টাকা রাখে নিরাপত্তার জন্য। বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির বিষয়টি অনেক পুরোনো। কিন্তু এখনো কেন প্রধান অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না? তাঁর মাথার ওপর ‘প্রভাবশালী’ কারও আশীর্বাদের হাত আছে কি?

চার্জশিট দেওয়ার পর আসামিকে গ্রেপ্তার করার দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। কিন্তু আসামিকে গ্রেপ্তার করায় অনীহা দেখালে আইনের প্রতি মানুষের আস্থা টলে যাওয়াই তো স্বাভাবিক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পরমাণু শক্তিধর হতে চেয়েছিল তাইওয়ান, সিআইএ এজেন্টের বিশ্বাসঘাতকতায় স্বপ্নভঙ্গ

চ্যাম্পিয়নস ট্রফি: রিজার্ভ-ডেতেও সেমিফাইনাল না হলে হৃদয়বিদারক সমীকরণ

বগুড়ায় ইফতারের পর ডেকে নিয়ে যুবককে হত্যা

অমর্ত্য সেনের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যা বললেন জামায়াতের আমির

সেনাসদস্যকে এক গাড়ি ধাক্কা দেয়, আরেক গাড়ি পিষে যায়

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত