Ajker Patrika

আট বছর পর হচ্ছে জাবিতে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন

জাবি প্রতিনিধি
আপডেট : ২৮ জুলাই ২০২২, ১২: ০৭
আট বছর পর হচ্ছে জাবিতে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) আট বছর পর হতে যাচ্ছে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন। এ জন্য আগামী ১২ আগস্ট সিনেটের বিশেষ অধিবেশন আহ্বান করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক নূরুল আলম।

বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্টের ১১ (১) ধারা অনুযায়ী সিনেট সভায় এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনসংক্রান্ত সংবিধি অনুযায়ী সিনেটের সচিব তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন।

গত ১৭ এপ্রিল উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নূরুল আলমকে সাময়িকভাবে উপাচার্যের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। আগামী ১৩ আগস্ট অধ্যাপক নূরুলের উপ-উপাচার্য পদে মেয়াদ সম্পন্ন হবে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের কার্য পরিচালনাবিধি, ২০১৫-তে ৩-এর (খ)-২ ধারা অনুসারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য যেকোনো সময় সিনেট অধিবেশন আহ্বান করতে পারেন এবং প্যানেল নির্বাচন দিতে পারেন। এর আগে সর্বশেষ উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৪ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই নির্বাচনে সম্ভাব্য আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের চারটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে; যাদের নেতৃত্বে থাকবেন সাময়িক উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতার, সাবেক উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক আমির হোসেন এবং সাবেক ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক এম এ মতিন। এতে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ’-এর মধ্যে ভাঙন সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন শিক্ষকেরা। বিপরীতে বিএনপি ও বামপন্থী শিক্ষকেরা এখনো প্যানেল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়নি।

বর্তমান সাময়িক উপাচার্যের পৃষ্ঠপোষকতায় আওয়ামীপন্থী শিক্ষক সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ’-এর শীর্ষ নেতৃত্ব প্যানেল নির্বাচন নিয়ে দ্বিমত পোষণ করেছে আজকের পত্রিকার কাছে।

শিক্ষক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদার বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিতে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন জরুরি। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের চাওয়া। বর্তমান পরিস্থিতিতে প্যানেল নির্বাচন হলে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের পক্ষেই ইতিবাচক ফল আসবে।’

অন্যদিকে পরিষদের সাধারণ সম্পাদক খালিদ কুদ্দুস বলেন, বিদ্যমান সিনেটের ৬৮ জন সদস্যের মেয়াদ উত্তীর্ণ। এ অবস্থায় উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন সমীচীন হবে না।

বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের সহসভাপতি অধ্যাপক মোহা. মুজিবুর রহমান বলেন, এই সময় প্যানেল নির্বাচন হলে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের থেকেই চারটি প্যানেল তৈরি হবে। ফলে জাতীয় প্রেক্ষাপটেও এই নির্বাচন শুভ হবে না।

প্যানেল নির্বাচনের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মোতাহার হোসেন বলেন, শুধু উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনই না বরং অন্যান্য প্রশাসনিক পর্ষদেও নির্বাচন হওয়া উচিত।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক কামরুল আহসান বলেন, ‘এই মুহূর্তে এ ধরনের খবর বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আশাব্যঞ্জক বিষয়। আমরা চাই এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরে আসবে। ’

নির্বাচনের বিষয়ে নূরুল আলম বলেন, ‘উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরামর্শ দিয়েছে। ৩ সদস্যের প্যানেল মনোনীত করার জন্য আগামী ১২ আগস্ট সিনেটের বিশেষ অধিবেশন আহ্বান করা হয়েছে। আশা করি, এই নির্বাচনের পর পরবর্তী উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনবে। সে ক্ষেত্রে অন্যান্য প্রশাসনিক পর্ষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে শিগগিরই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত