Ajker Patrika

রাস্তা ১০০ ফুট হলেই মিলবে বাণিজ্যিক অনুমতি

তোফাজ্জল হোসেন রুবেল, ঢাকা
রাস্তা ১০০ ফুট হলেই মিলবে বাণিজ্যিক অনুমতি

রাজধানীতে চাইলেই আবাসিক এলাকায় বাণিজ্যিক স্থাপনা গড়ে তোলা যায় না। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) মহাপরিকল্পনায় যেসব রাস্তা বাণিজ্যিক হিসেবে নির্দিষ্ট করা আছে, সেসব এলাকায়ই শুধু বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণের অনুমতি মিলত এত দিন। তবে এ ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। সে অনুযায়ী শুধু ১০০ ফুট রাস্তা হলেই দুই পাশের প্লটে মিলবে বাণিজ্যিক স্থাপনা করার অনুমতি। তবে তার জন্য দিতে হবে নির্ধারিত ফি।

সম্প্রতি গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো. অলিউল্লাহ স্বাক্ষরিত এক পরিপত্রে এ তথ্য জানানো হয়েছে। তবে নগর পরিকল্পনাবিদেরা সতর্ক করে বলছেন, এ ধরনের পদক্ষেপে আবাসিক এলাকা তার চিরচেনা রূপ হারাবে, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ভেঙে পড়বে।

জানতে চাইল রাজউকের চেয়ারম্যান (সচিব) মো. আনিছুর রহমান মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সময়ের প্রয়োজনে বেশ কিছু এলাকায় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান থাকা প্রয়োজন। আবার কিছু এলাকায় রাজউক অনুমোদন না দিলেও বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান তা করছে। তাই আমরা ১০০ ফুট রাস্তা ধরে অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এতে বিষয়টা অনেক স্বচ্ছ হলো।’

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সূত্র বলেছে, চলতি মাসের শুরুর দিকে রাজউকের আওতাধীন গুলশান, বনানী, বারিধারা ও উত্তরা (প্রথম ও দ্বিতীয় পর্ব) এলাকার আবাসিক প্লটগুলো বাণিজ্যিক প্লটে পরিবর্তনের বিষয়ে একটি পরিপত্র জারি করা হয়। এতে বলা হয়, আবাসিক প্লটগুলো বাণিজ্যিক প্লটে পরিবর্তনের জন্য প্লটসংলগ্ন রাস্তার প্রশস্ততা ন্যূনতম ১০০ ফুট হতে হবে। নতুন এ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গুলশান আবাসিক এলাকার গুলশান অ্যাভিনিউ, বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ, বারিধারা আবাসিক এলাকার প্রগতি সরণি এবং উত্তরা প্রথম পর্ব ও দ্বিতীয় পর্ব আবাসিক এলাকার জসিম উদ্দিন অ্যাভিনিউ, রবীন্দ্র সরণি, সোনারগাঁ জনপথ, গাউসুল আজম অ্যাভিনিউ, গরিবে নেওয়াজ অ্যাভিনিউ, শাহ মখদুম অ্যাভিনিউ, শাহজালাল অ্যাভিনিউ, ঈসা খাঁ অ্যাভিনিউ ও আলাওল অ্যাভিনিউয়ে আবাসিক প্লট বাণিজ্যিক প্লটে পরিবর্তন করা যাবে। এ ছাড়া রাজউকের আওতাধীন অন্যান্য এলাকার ১০০ ফুট প্রশস্ত সড়কের ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক প্লটে পরিবর্তনের জন্য ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) অনুসরণসহ ইমারত নির্মাণ বিধিমালা, ভূমি ব্যবহারসংক্রান্ত প্রচলিত আইন ও বিধিবিধান মেনে চলতে হবে।

পরিপত্রে আরও বলা হয়, গুলশান, বনানী, বারিধারা (জে ব্লক বাদে) আবাসিক এলাকায় আবাসিক প্লট বাণিজ্যিক প্লটে পরিবর্তনে ফি দিতে হবে কাঠাপ্রতি ১ কোটি টাকা। বারিধারা জে ব্লক ও উত্তরা (প্রথম পর্ব ও দ্বিতীয় পর্ব) আবাসিক এলাকায় কাঠাপ্রতি ফি ৫০ লাখ টাকা। বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের জন্য সুপারিশ করা এলাকায় অবৈধভাবে বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত প্লটগুলোর মালিকদের পরিপত্র জারির ছয় মাসের মধ্যে আবেদন ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে রাজউক থেকে সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে নির্ধারিত জরিমানাসহ ফি দিতে হবে। নির্ধারিত সময়ে প্লটের ধরন পরিবর্তনের আবেদন না করলে রাজউক আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে বলেও পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়।

পরিত্যক্ত সম্পত্তির ক্ষেত্রে পরিপত্রে বলা হয়েছে, পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত প্লটে বিদ্যমান অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে আবাসিক ভবন ও বহুতল ভবন এবং বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠান ও নাগরিক সুবিধাদি যেমন স্কুল-কলেজ, পার্ক, গাড়ি পার্কিং, দুর্যোগকালীন সমাবেশ, সিনিয়র সিটিজেন কেয়ার, মসজিদ, কমিউনিটি সেন্টার, শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপনের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে বারিধারা কে ব্লক ও গুলশান প্রকল্প এলাকার (নর্থ গুলশান অ্যাভিনিউ) কয়েকটি ব্লকে ডিপ্লোম্যাটিক জোন থাকায় সেখানে নিরাপত্তা সংস্থার অনাপত্তি গ্রহণ করে বাণিজ্যিক প্লটে পরিবর্তনের অনুমোদন নিতে হবে।

জানতে চাইলে নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ‘একটি আবাসিক এলাকায় হুট করেই বাণিজ্যিক স্থাপনা করার অনুমতি দেওয়ার চিন্তা করা ঠিক হবে না। এভাবে অনুমতি দিলে আবাসিক এলাকার শৃঙ্খলা বিনষ্টের পাশাপাশি ট্রাফিক ব্যবস্থাও ভেঙে পড়তে পারে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মাসুদ আহমেদের সব পদ স্থগিত

টিআইএন নেওয়ার পরে কিন্তু ঘুমাইতে পারবেন না: এনবিআর চেয়ারম্যান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত