সঞ্চয়ের টাকা কর্মচারীর পকেটে

সুমেল সারাফাত, মোংলা (বাগেরহাট)
প্রকাশ : ১৯ জানুয়ারি ২০২৩, ১৬: ০৯

বাগেরহাটের মোংলায় পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের গ্রাহকদের ঋণের কিস্তি ও সঞ্চয়ের টাকা আদায় করা হয়। তবে কার্যালয়ে তা জমা হচ্ছে না। ব্যাংকটির উপজেলার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মিলেমিশে গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করছেন-এমনটাই অভিযোগ গ্রাহকদের।

মোংলার ছয়টি ইউনিয়নের মধ্যে চারটি ইউনিয়ন ও পৌরসভার বেশির ভাগ গ্রাহকের একই অভিযোগ।

তাঁদের মধ্যে যাঁরা বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) লিখিতভাবে জানিয়েছেন, তাঁদের টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে। শাখা ব্যবস্থাপক বলছেন, মোংলা উপজেলায় ১৭০টি সমিতিতে প্রায় ৮ হাজার সদস্য রয়েছেন। সব সময় সঠিকভাবে তদারক করা সম্ভব নয়।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের মোংলা উপজেলার মিঠাখালী ইউনিয়নে মাঠ সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বিপ্লব মজুমদার। তিনি সদস্যদের কাছ থেকে বিনা রসিদে টাকা আদায় করেন। কিন্তু গ্রাহকের পাস বইয়ে সেই কিস্তি আদায়ের তথ্য লেখেননি। এমনকি বইগুলো তিনি নিজের কাছে তিন বছর পর্যন্ত আটকে রাখেন। সম্প্রতি এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে ইউএনওর কাছে ৯ জন গ্রাহক লিখিত আবেদন করেন। পরে কিছু টাকা জমা করেন মাঠ সহকারী বিপ্লব মজুমদার।

লিখিত অভিযোগের বাইরে এই ইউনিয়নের আরও কয়েকজন সদস্য জানান, তাঁরা টাকা জমা দিলেও মাঠ সহকারী বিপ্লব মজুমদার টাকা অফিসে জমা করেননি। এ বিষয় শাখা ব্যবস্থাপককে জানিয়েও কোনো ফল পাওয়া যায়নি।

এমন অভিযোগ রয়েছে চিলা, সুন্দরবন, মিঠাখালী, চাঁদপাই ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার গ্রাহকদের। এসব ইউনিয়নের গ্রাহকেরা ব্যাংকের মোংলা শাখায় অভিযোগ করে কোনো ফল পাননি। পরে ইউএনওর কাছে অভিযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন।

এদিকে গত বৃহস্পতিবার ২৫ জন গ্রাহক মোংলা কার্যালয়ে এসে শাখা ব্যবস্থাপকের কাছে অভিযোগ জমা দেন।

গ্রাহক মো. হালিম বলেন, ‘২১ হাজার টাকা ঋণ নিই। সেই টাকা পরিশোধও করেছি। কিন্তু অফিসে তা জমা হয়নি। আবার এখন পাস বইও ফেরত পাচ্ছি না।’

পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের গ্রাহক শেফালী গোলদার বলেন, ‘আমি ১০ হাজার টাকা ঋণ নিই। পরে মাঠকর্মীরা সঞ্চয় ও ঋণের কিস্তির টাকা নিলেও তা পাস বইতে তোলেনি।’

আরেক গ্রাহক সুদীপ মণ্ডল বলেন, ‘কিস্তির টাকা জমা দিয়েছি, কিন্তু তা পাস বইতে তোলে না। একবার পাস বই নিয়ে গেছে, এখনো পাইনি।’

পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের মোংলা শাখার ব্যবস্থাপক সুজিত কুমার রায় বলেন, ‘সুন্দরবন ইউনিয়ন ও চাঁদপাই ইউনিয়নে কিছু সমস্যা রয়েছে। সেগুলো আমরা যাচাই-বাছাই করছি।

উপজেলায় ১৭০টি সমিতিতে প্রায় ৮ হাজার সদস্য রয়েছেন। সব সময় সঠিকভাবে তদারক করা সম্ভব হয় না।’

মোংলার ইউএনও দিপংকর দাশ বলেন, ‘পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে আমার দপ্তরে লিখিতভাবে জানাতে শাখা ব্যবস্থাপককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারমূলক এই প্রতিষ্ঠানের সুনাম নষ্ট করতে কাউকে সুযোগ দেওয়া হবে না।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আবু সাঈদকে ৪–৫ ঘণ্টা পরে হাসপাতালে নেওয়া হয়—শেখ হাসিনার দাবির সত্যতা কতটুকু

মেট্রোরেল থেকে আমলাদের বিদায়, অগ্রাধিকার প্রকৌশলীদের

সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার সময় বাড়ল

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

ব্যাংক খাতে নতুন নীতিমালা: আটকে গেল ২৫৮ কর্মকর্তার জিএম পদে পদোন্নতি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত