বিলের বুকে ভাসছে নানা রঙের শীতের সবজি

আনোয়ার হোসেন শামীম, গাইবান্ধা 
প্রকাশ : ০৩ ডিসেম্বর ২০২২, ১৩: ২৬

গাইবান্ধায় দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষ। বিশেষ করে সাঘাটা উপজেলার ঝাড়াবর্ষা বিলে কলাগাছের ভেলায় কচুরিপানা পচিয়ে বানানো ভাসমান বেড বা ধাপগুলো এখন পরিণত হয়েছে শীতের সবজিখেতে।

সাঘাটায় যমুনা নদী ঘেঁষে ঝাড়াবর্ষা বিলের অবস্থান। সম্প্রতি সেখানে গিয়ে দেখা যায়, পানিতে ভাসছে নানা রঙের সবজি। কাছে গিয়ে বোঝা গেল, এগুলো আসলে লালশাক, পাটশাক, পুঁইশাক ও কলমিশাকের বেড। বর্তমানে এ বিলে ভাসমান পদ্ধতিতে শাকসবজি চাষ করে সফলতা পেয়েছেন অনেকে।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পানির ওপর এভাবে চাষাবাদ করা নিয়ে তাঁরা প্রথমে সন্দিহান ছিলেন। পরে পরীক্ষামূলকভাবে আবাদ শুরু করেন। শুরুতে অল্প কয়েকজনের চাষে সফলতা এলে অন্যরাও এতে উৎসাহিত হন।

ঝাড়াবর্ষা ছাড়াও বিষ পুকুর বিল ও গলাকাটা বিলে একটি বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে পরীক্ষামূলকভাবে ভাসমান সবজি চাষ চলছে। একটি বেডে তিন থেকে চারবার শাক চাষ হয়। বেড তৈরির জন্য প্রথমে পানির ওপর কলাগাছের ভেলা বানিয়ে তাতে কচুরিপানা আর শেওলা রেখে দেওয়া হয় মাসখানেক। পরে মাটি দিয়ে তার ওপর বীজ বপন করা হয়।

স্থানীয় কিষানি শরিফা বেগম জানান, প্রথমে তাঁরা ডোবাতে শাকসবজি চাষ করতে চাননি। মনে করেছিলেন পরিশ্রম বৃথা যাবে। পরে একদিন নদী থেকে কচুরিপানা এনে ডোবার মধ্যে স্তূপ করে তার ওপর মাটি দেন। শেষে বীজ ছিটিয়ে দেখেন চারা গজিয়েছে। এভাবেই শুরু। তারপর আরও অনেকেই দেখাদেখি চাষ শুরু করেন।

আরেক কিষানি নাছিমা বেগম বলেন, ভাসমান পদ্ধতি থেকে পাওয়া শাকসবজিতে সংসারের প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি বাজারেও বিক্রি করছেন।

সবজিচাষি বিলকিস বেগম জানান, এভাবে সবজি চাষ করতে পেরে তাঁরা সবাই খুশি। গত মাসে তিনি এক হাজার ২০০ টাকার শাক বিক্রি করেছেন।

কৃষক মতিয়ার রহমান বলেন, ‘ভাসমান বেডের সবজি নিজেরা খেয়েও এক মাসে ১২ থেকে ১৩ শ টাকার বিক্রি করেছি। এলাকায় এভাবে সবজি চাষ ভালো সাড়া ফেলেছে।

কৃষি বিভাগ থেকে প্রশিক্ষণসহ সহযোগিতা পেলে আরও বড় পরিসরে চাষাবাদ করা ইচ্ছা আছে।’

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. বেলাল উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ভাসমান সবজি চাষে কৃষকেরা উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। এ বিষয়ে তাঁদের প্রশিক্ষণসহ সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। ইতিমধ্যে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা তদারকি চালাচ্ছেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত