রাহুল শর্মা, ঢাকা
বই ছাপানোর জন্য সরকার যে দর দিয়েছে, তার চেয়ে নিজেরা কম দর দিয়ে কাজ পেয়েছেন মুদ্রণকারীরা। এখন সেই দরেই পুরোদমে চলছে আগামী শিক্ষাবর্ষের বিনা মূল্যের পাঠ্যবই ছাপার কাজ। কিন্তু কম দরে কাজ পাওয়ায় মান নিয়ে যে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল, তা-ই সত্যি হতে চলেছে। কারণ, ইতিমধ্যে ছাপা হওয়া মাধ্যমিক পর্যায়ের তিন কোটির বেশি বইয়ের অধিকাংশই নিম্নমানের। আর নানা জটিলতায় এখনো শুরুই হয়নি প্রাথমিকের বই ছাপার কাজ।
শিক্ষাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অভিযোগ করছেন, অধিকাংশ বইয়ে দরপত্রের শর্তানুযায়ী কাগজ ব্যবহার করা হচ্ছে না। দেওয়া হচ্ছে হোয়াইট প্রিন্টের নামে নিম্নমানের নিউজপ্রিন্ট; যা মূলত রিসাইক্লিং কাগজের মণ্ড দিয়ে তৈরি। এ ছাড়া বাঁধাইসহ আনুষঙ্গিক কাজও মানসম্মত নয়। বলা যায়, এখন পর্যন্ত ছাপা হওয়া বইয়ের অধিকাংশই নিম্নমানের।
ছাপা হয়েছে এমন কয়েকটি বইয়ের মান যাচাই, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, এনসিটিবি, মান যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান ও মুদ্রণকারীদের সঙ্গে কথা বলে এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। কয়েক বছর আগে বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির পরীক্ষায়ও নিম্নমানের কাগজে বই ছাপার প্রমাণ পাওয়া যায়।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) বইয়ের মান ঠিক রাখার জন্য দরপত্রে স্পেসিফিকেশন উল্লেখ করে দেয়। দরপত্রের শর্তানুযায়ী প্রাথমিক স্তর ও ইবতেদায়ির বই ৮০ জিএসএমের (গ্রাম/স্কয়ার মিটার) কাগজে ৮৫ শতাংশ উজ্জ্বলতা বা মণ্ড থাকতে হয়। নবম-দশম শ্রেণির বিজ্ঞানের বই চার রঙা মুদ্রণে ৭০ জিএসএম কাগজে এবং অন্য শ্রেণির বই ৬০ জিএসএম কাগজে ছাপতে হয়, আর বইয়ের কভারে ২৩০ জিএসএমের আর্ট কার্ড (মোটা কাগজ) ব্যবহার করতে হয়। এ ছাড়া ব্যবহৃত কাগজ কতটা মজবুত, তার নির্দেশনাকারী ‘বাস্টিং ফ্যাক্টর’ ন্যূনতম ১২ শতাংশ থাকতে হবে।
মান যাচাইয়ে নিযুক্ত ইনডিপেনডেন্ট ইন্সপেকশন সার্ভিস বিডির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা জানান, যে বইগুলো ইতিমধ্যে ছাপা হয়েছে, সেসব খুবই নিম্নমানের। তাঁরা যাচাইকালে এ বিষয়ে মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে সতর্ক করেছেন। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কাগজ বাতিলও করা হয়েছে। কিন্তু অদৃশ্য ক্ষমতাবলে বেশির ভাগ মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। আর বেশি কাজ পাওয়া দুটি মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠান বাতিল করা কাগজ অদল-বদল করে বই ছাপাচ্ছে। তাঁরা আরও বলেন, মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো দরপত্রের স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী বইয়ে কাগজ ব্যবহার করছে না, বাঁধাইও খুবই নিম্নমানের। এতে ছয় মাস যেতে না যেতেই বইয়ের পৃষ্ঠা ছিঁড়ে যাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।
বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে বই ছাপানোর কাজ পাওয়া এক মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠানের মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ভাই, যে দরে কাজ পেয়েছি; এর চেয়ে ভালো কাজ (মানসম্মত বই) কীভাবে আশা করেন?’
ছাপা হয়েছে এমন কয়েকটি বইয়ের কাগজের নমুনা দেখে কাগজের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কাগজ ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, এসব বইয়ে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের নিউজপ্রিন্ট, যা মূলত রিসাইক্লিং কাগজের মণ্ড দিয়ে তৈরি। আর কাগজ নিম্নমানের হওয়ায় ব্রাইটনেসও কম।
এনসিটিবির একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, যেসব মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠান এবার বেশি পরিমাণে বই ছাপার কাজ পেয়েছে, তারাই মূলত বেশি লাভের আশায় নিম্নমানের বই ছাপাচ্ছে। এগুলোর মধ্যে অগ্রণী প্রিন্টিং প্রেস, লেটার এন কালার লিমিটেড, বারোতোপা প্রিন্টার্স, আনন্দ প্রিন্টার্স, প্রমা প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশন উল্লেখযোগ্য।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অগ্রণী প্রিন্টিং প্রেসের অন্যতম স্বত্বাধিকারী কাওসার উজ্জামান রুবেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, এসব অভিযোগ ঠিক নয়। দরপত্রের শর্তানুযায়ী কাজ করা হচ্ছে। তবে প্রমা প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশনের পরিচালক এস এম মহসিন বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, ‘ইন্সপেকশন এজেন্ট কাগজ যাচাই করার পর এনসিটিবিতে প্রতিবেদন দেয়।
এরপর আমরা কাজ শুরু করি। মান যাচাইয়ের দায়িত্ব এনসিটিবির।’ আর অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাদের কোনো কর্মকর্তা মন্তব্য করতে রাজি হননি। তাঁদের ভাষ্য, এনসিটিবির সঙ্গে কথা বলুন।
জানতে চাইলে বই ছাপানো ও বিতরণের দায়িত্বে থাকা এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম বলেন, ‘এনসিটিবি থেকে ৩৩টি টিম বই ছাপার কাজ মনিটরিং করছে। এ ছাড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় পৃথকভাবে মনিটরিং করছে। নিম্নমানের কাগজে বই ছাপার কিছু অভিযোগ আমরাও পেয়েছি, এগুলোর তদন্ত হচ্ছে। নিম্নমানের বই দেওয়ার চেষ্টা করা হলে কেউই ছাড় পাবে না। কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এনসিটিবি সূত্র জানায়, দেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের ২০১০ সাল থেকে বিনা মূল্যে নতুন বই দিয়ে আসছে সরকার। আগামী বছরের জন্য প্রায় ৩৩ কোটি ৪৮ লাখ ৭৬ হাজার ৯২৩ কপি পাঠ্যবই ছাপানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এগুলোর মধ্যে প্রাক্-প্রাথমিক থেকে প্রাথমিক স্তরের ৯ কোটি ৬৬ লাখ ৮ হাজার ৯৭৮ কপি এবং মাধ্যমিক স্তরের জন্য মোট ২৩ কোটি ৮২ লাখ ৬৭ হাজার ৯৪৫ কপি পাঠ্যবই ছাপানো হবে। ইতিমধ্যে মাধ্যমিক পর্যায়ের তিন কোটির বেশি বই ছাপার কাজ শেষ। এগুলোর মধ্যে পিডিআই (প্রি ডেলিভারি ইন্সপেকশন) পেয়েছে দেড় কোটির বেশি বই। অর্থাৎ এই বইগুলো এখন নিয়ম অনুযায়ী মাঠপর্যায়ে বিতরণ করা যাবে। এ ছাড়া নানা জটিলতায় এখনো শুরু হয়নি প্রাথমিকের বই ছাপার কাজ।
সার্বিক বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে এনসিটিবির সাবেক চেয়ারম্যান নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, ‘এখন এনসিটিবির উচিত দরপত্রের স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী বই বুঝে নেওয়া। না হলে কালো তালিকাভুক্তি, জরিমানাসহ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’
এনসিটিবি থেকে জানা যায়, এবার প্রাথমিকের বই প্রতি ফর্মা (৮ পৃষ্ঠা) ২ টাকা ৯০ পয়সা আর মাধ্যমিকের বই প্রতি ফর্মা (৮ পৃষ্ঠা) প্রাক্কলন করা হয় ২ টাকা ৬৮ পয়সা। কিন্তু দুই স্তর মিলিয়ে প্রাক্কলিত দরের চেয়ে প্রায় ২৪ শতাংশ কম দরে কাজ করছেন মুদ্রাকরেরা।
প্রাক্কলিত দরের চেয়ে কম দর দেওয়ার ঘটনা প্রথম ঘটে ২০১৬ সালে। এর ফলে শিক্ষার্থীরা যখন ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে বই হাতে পায়, তখন দেখা যায় অধিকাংশ বই নিম্নমানের। সে সময় এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। এরপর কয়েক বছর ধরে একই কৌশলে বই ছাপার কাজ নিচ্ছে সংঘবদ্ধ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিবারই এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিম্নমানের বই সরবরাহের অভিযোগ ওঠে। কিন্তু এ ধরনের ঘটনায় অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাদ দিয়ে নামমাত্র সাজা দেওয়া হয় অন্য কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে।
বই ছাপানোর জন্য সরকার যে দর দিয়েছে, তার চেয়ে নিজেরা কম দর দিয়ে কাজ পেয়েছেন মুদ্রণকারীরা। এখন সেই দরেই পুরোদমে চলছে আগামী শিক্ষাবর্ষের বিনা মূল্যের পাঠ্যবই ছাপার কাজ। কিন্তু কম দরে কাজ পাওয়ায় মান নিয়ে যে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল, তা-ই সত্যি হতে চলেছে। কারণ, ইতিমধ্যে ছাপা হওয়া মাধ্যমিক পর্যায়ের তিন কোটির বেশি বইয়ের অধিকাংশই নিম্নমানের। আর নানা জটিলতায় এখনো শুরুই হয়নি প্রাথমিকের বই ছাপার কাজ।
শিক্ষাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অভিযোগ করছেন, অধিকাংশ বইয়ে দরপত্রের শর্তানুযায়ী কাগজ ব্যবহার করা হচ্ছে না। দেওয়া হচ্ছে হোয়াইট প্রিন্টের নামে নিম্নমানের নিউজপ্রিন্ট; যা মূলত রিসাইক্লিং কাগজের মণ্ড দিয়ে তৈরি। এ ছাড়া বাঁধাইসহ আনুষঙ্গিক কাজও মানসম্মত নয়। বলা যায়, এখন পর্যন্ত ছাপা হওয়া বইয়ের অধিকাংশই নিম্নমানের।
ছাপা হয়েছে এমন কয়েকটি বইয়ের মান যাচাই, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, এনসিটিবি, মান যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান ও মুদ্রণকারীদের সঙ্গে কথা বলে এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। কয়েক বছর আগে বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির পরীক্ষায়ও নিম্নমানের কাগজে বই ছাপার প্রমাণ পাওয়া যায়।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) বইয়ের মান ঠিক রাখার জন্য দরপত্রে স্পেসিফিকেশন উল্লেখ করে দেয়। দরপত্রের শর্তানুযায়ী প্রাথমিক স্তর ও ইবতেদায়ির বই ৮০ জিএসএমের (গ্রাম/স্কয়ার মিটার) কাগজে ৮৫ শতাংশ উজ্জ্বলতা বা মণ্ড থাকতে হয়। নবম-দশম শ্রেণির বিজ্ঞানের বই চার রঙা মুদ্রণে ৭০ জিএসএম কাগজে এবং অন্য শ্রেণির বই ৬০ জিএসএম কাগজে ছাপতে হয়, আর বইয়ের কভারে ২৩০ জিএসএমের আর্ট কার্ড (মোটা কাগজ) ব্যবহার করতে হয়। এ ছাড়া ব্যবহৃত কাগজ কতটা মজবুত, তার নির্দেশনাকারী ‘বাস্টিং ফ্যাক্টর’ ন্যূনতম ১২ শতাংশ থাকতে হবে।
মান যাচাইয়ে নিযুক্ত ইনডিপেনডেন্ট ইন্সপেকশন সার্ভিস বিডির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা জানান, যে বইগুলো ইতিমধ্যে ছাপা হয়েছে, সেসব খুবই নিম্নমানের। তাঁরা যাচাইকালে এ বিষয়ে মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে সতর্ক করেছেন। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কাগজ বাতিলও করা হয়েছে। কিন্তু অদৃশ্য ক্ষমতাবলে বেশির ভাগ মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। আর বেশি কাজ পাওয়া দুটি মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠান বাতিল করা কাগজ অদল-বদল করে বই ছাপাচ্ছে। তাঁরা আরও বলেন, মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো দরপত্রের স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী বইয়ে কাগজ ব্যবহার করছে না, বাঁধাইও খুবই নিম্নমানের। এতে ছয় মাস যেতে না যেতেই বইয়ের পৃষ্ঠা ছিঁড়ে যাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।
বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে বই ছাপানোর কাজ পাওয়া এক মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠানের মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ভাই, যে দরে কাজ পেয়েছি; এর চেয়ে ভালো কাজ (মানসম্মত বই) কীভাবে আশা করেন?’
ছাপা হয়েছে এমন কয়েকটি বইয়ের কাগজের নমুনা দেখে কাগজের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কাগজ ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, এসব বইয়ে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের নিউজপ্রিন্ট, যা মূলত রিসাইক্লিং কাগজের মণ্ড দিয়ে তৈরি। আর কাগজ নিম্নমানের হওয়ায় ব্রাইটনেসও কম।
এনসিটিবির একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, যেসব মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠান এবার বেশি পরিমাণে বই ছাপার কাজ পেয়েছে, তারাই মূলত বেশি লাভের আশায় নিম্নমানের বই ছাপাচ্ছে। এগুলোর মধ্যে অগ্রণী প্রিন্টিং প্রেস, লেটার এন কালার লিমিটেড, বারোতোপা প্রিন্টার্স, আনন্দ প্রিন্টার্স, প্রমা প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশন উল্লেখযোগ্য।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অগ্রণী প্রিন্টিং প্রেসের অন্যতম স্বত্বাধিকারী কাওসার উজ্জামান রুবেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, এসব অভিযোগ ঠিক নয়। দরপত্রের শর্তানুযায়ী কাজ করা হচ্ছে। তবে প্রমা প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশনের পরিচালক এস এম মহসিন বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, ‘ইন্সপেকশন এজেন্ট কাগজ যাচাই করার পর এনসিটিবিতে প্রতিবেদন দেয়।
এরপর আমরা কাজ শুরু করি। মান যাচাইয়ের দায়িত্ব এনসিটিবির।’ আর অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাদের কোনো কর্মকর্তা মন্তব্য করতে রাজি হননি। তাঁদের ভাষ্য, এনসিটিবির সঙ্গে কথা বলুন।
জানতে চাইলে বই ছাপানো ও বিতরণের দায়িত্বে থাকা এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম বলেন, ‘এনসিটিবি থেকে ৩৩টি টিম বই ছাপার কাজ মনিটরিং করছে। এ ছাড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় পৃথকভাবে মনিটরিং করছে। নিম্নমানের কাগজে বই ছাপার কিছু অভিযোগ আমরাও পেয়েছি, এগুলোর তদন্ত হচ্ছে। নিম্নমানের বই দেওয়ার চেষ্টা করা হলে কেউই ছাড় পাবে না। কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এনসিটিবি সূত্র জানায়, দেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের ২০১০ সাল থেকে বিনা মূল্যে নতুন বই দিয়ে আসছে সরকার। আগামী বছরের জন্য প্রায় ৩৩ কোটি ৪৮ লাখ ৭৬ হাজার ৯২৩ কপি পাঠ্যবই ছাপানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এগুলোর মধ্যে প্রাক্-প্রাথমিক থেকে প্রাথমিক স্তরের ৯ কোটি ৬৬ লাখ ৮ হাজার ৯৭৮ কপি এবং মাধ্যমিক স্তরের জন্য মোট ২৩ কোটি ৮২ লাখ ৬৭ হাজার ৯৪৫ কপি পাঠ্যবই ছাপানো হবে। ইতিমধ্যে মাধ্যমিক পর্যায়ের তিন কোটির বেশি বই ছাপার কাজ শেষ। এগুলোর মধ্যে পিডিআই (প্রি ডেলিভারি ইন্সপেকশন) পেয়েছে দেড় কোটির বেশি বই। অর্থাৎ এই বইগুলো এখন নিয়ম অনুযায়ী মাঠপর্যায়ে বিতরণ করা যাবে। এ ছাড়া নানা জটিলতায় এখনো শুরু হয়নি প্রাথমিকের বই ছাপার কাজ।
সার্বিক বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে এনসিটিবির সাবেক চেয়ারম্যান নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, ‘এখন এনসিটিবির উচিত দরপত্রের স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী বই বুঝে নেওয়া। না হলে কালো তালিকাভুক্তি, জরিমানাসহ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’
এনসিটিবি থেকে জানা যায়, এবার প্রাথমিকের বই প্রতি ফর্মা (৮ পৃষ্ঠা) ২ টাকা ৯০ পয়সা আর মাধ্যমিকের বই প্রতি ফর্মা (৮ পৃষ্ঠা) প্রাক্কলন করা হয় ২ টাকা ৬৮ পয়সা। কিন্তু দুই স্তর মিলিয়ে প্রাক্কলিত দরের চেয়ে প্রায় ২৪ শতাংশ কম দরে কাজ করছেন মুদ্রাকরেরা।
প্রাক্কলিত দরের চেয়ে কম দর দেওয়ার ঘটনা প্রথম ঘটে ২০১৬ সালে। এর ফলে শিক্ষার্থীরা যখন ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে বই হাতে পায়, তখন দেখা যায় অধিকাংশ বই নিম্নমানের। সে সময় এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। এরপর কয়েক বছর ধরে একই কৌশলে বই ছাপার কাজ নিচ্ছে সংঘবদ্ধ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিবারই এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিম্নমানের বই সরবরাহের অভিযোগ ওঠে। কিন্তু এ ধরনের ঘটনায় অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাদ দিয়ে নামমাত্র সাজা দেওয়া হয় অন্য কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে