Ajker Patrika

লাফিয়ে বাড়ছে ধানের দাম

রফিকুল ইসলাম, তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ)
আপডেট : ৩১ মে ২০২২, ১০: ৪৭
লাফিয়ে বাড়ছে ধানের দাম

চলনবিল-অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জের তাড়াশে বোরো ধান গোলায় তোলার সময় আঘাত হানা ঝড়বৃষ্টির প্রভাব পড়েছে বাজারে। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি মণে দর বেড়েছে প্রায় ৩০০ টাকা।

উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে তাড়াশে ২২ হাজার ৩১৫ হেক্টর জমিতে ধানের চাষ করা হয়েছিল। ইতিমধ্যে প্রায় ৯০ ভাগ ধান কাটা শেষ হয়েছে।

উপজেলার বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা বাজারে কৃষকেরা নতুন ধান বিক্রি শুরু করেছেন। চলতি সপ্তাহে সব ধরনের ধানের দাম বেড়েছে। গত সপ্তাহে মিনিকেট চালের যে ধান প্রতি মণ ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, তার দাম এখন ১ হাজার ৪০০ টাকা। এ ছাড়া মণপ্রতি কাটারিভোগ ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৪৫০, ব্রি-২৮ ও হিরা ৬০০ থেকে ৮৫০, সুফলতা ৭০০ থেকে ১ হাজার, ব্রি-২৯ ধান ১ হাজার ৫০ থেকে ১ হাজার ২৫০ ও ব্রি-৯০ ধান ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৬৮৫ টাকায় পৌঁছেছে।

তবে ধানের এমন দাম বাড়ার পরও উৎপাদন খরচ উঠবে না বলে দাবি করেছেন কৃষকেরা। তাঁরা জানান, ঝড়ে ক্ষতির পাশাপাশি ডুবে যাওয়া ধান কেটে আনতে শ্রমিকদের অতিরিক্ত মজুরি দিতে হয়েছে।

উপজেলার দীঘি সগুনা গ্রামের কৃষক হাসেম আলী জানান, তিনি এ বছর সাড়ে সাত বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেছিলেন। ফলনও হয়েছিল ভালো। কিন্তু ধান কাটার আগ মুহূর্তে কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও ঝড়ে গাছ নুয়ে পড়ে এবং জমিতে পানি জমে যায়। তারপর মেলেনি কৃষিশ্রমিক। কয়েক দিন ঘুরে প্রায় অর্ধেক ধান পারিশ্রমিক দিয়ে তবেই জমির ধান কাটাতে পেরেছেন।

কৃষক হাসেম বলেন, আগে কাটা ও মাড়াইয়ের মজুরি বাদে প্রায় ১৫০ মণ ধান তাঁর গোলায় মজুত থাকত। কিন্তু এ বছর অবশিষ্ট রয়েছে ৭০ থেকে ৮০ মণ। এই ধান আবাদ করতে বিঘাপ্রতি খরচ হয়েছিল ৫ হাজার থেকে সাড়ে ৬ হাজার টাকা। এখন বাজারে ধানের দাম বেশি হলেও তাঁর খুশি হওয়ার কোনো কারণ নেই। কেননা যে ধান মজুত আছে, তা বিক্রি করে উৎপাদন খরচ উঠবে না।

উপজেলার বিনসাড়া হাটে আসা মহাজন সেলিম সিকদার জানান, গত ১৫ দিনের ব্যবধানে প্রতি মণ ধানে ২৫০ থেকে ৪৫০ টাকা দাম বেড়েছে। কৃষকেরা বৈরী আবহাওয়ার কারণে উচ্চ মূল্যে ধান কাটতে বাধ্য হয়েছেন। এ কারণে বিশেষ করে প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকেরা তাঁদের উৎপাদিত ধানের অর্ধেকও মজুত করতে পারেননি। ফলে এই অঞ্চলে দাম আরও বাড়তে পারে।

এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ লুৎফুন্নার লুনা বলেন, এ বছর বোরো মৌসুমে বৃষ্টিপাত আর ঝড়-বাতাসে পাকা ধানের বেশ ক্ষতি হয়েছে, তার ওপর ধানকাটা শ্রমিকের সংকট তো আছেই। স্থানীয় হাটবাজারে ধানের দাম ওঠানামা করে। তারপরও ধানের দাম বেশি হওয়ায় অনেক কৃষক লাভবান হবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত