সম্পাদকীয়
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হলে মিত্রবাহিনী তাদের ব্যবহার করা গাড়ি, ট্রাক ইত্যাদি পরিবহন আমাদের এই অঞ্চলে নিলামে বিক্রি করে দেয়। দক্ষ মেকানিক মওলা বখশ কিনলেন ৭-৮টি ট্রাক। সেই ট্রাকের গায়ে মুড়িয়ে দিলেন টিন। ভেতরে বেঞ্চের মতো পাতা আসনগুলো থাকত যাত্রীর অপেক্ষায়। ঢাকার রাস্তায় সেই বাসগুলো নামিয়ে দেওয়া হয় গণপরিবহনের কাজে।
তবে বাসের সংখ্যা ছিল যাত্রীর সংখ্যার তুলনায় নগণ্য। বসতে পারত বড়জোর ২০-২৫ জন, দাঁড়ানো যাত্রীর সংখ্যাই বেশি। মুড়ির মতো ঠাসাঠাসি করে জায়গা নিতে হতো তাদের। ঘেমে-নেয়ে গাদাগাদি আর হাঁসফাঁস করতে করতে যাত্রীরাই এই বাসগুলোর নাম দেয় ‘মুড়ির টিন’। অথচ ‘টাউন সার্ভিস’ শিরোনামে সেবা দেওয়া বাসগুলোর নাম হতো জনপ্রিয় সব হিন্দি সিনেমার নামানুসারে—আজাদ, পুকার, তাজমহল, কিসমত ইত্যাদি।
বর্তমান সময়ে রাজধানীতে গণপরিবহন হিসেবে ব্যবহৃত বাসগুলোর নামও কিন্তু খুব সুন্দর—বৈশাখী, তরঙ্গ, বসুন্ধরা, আসমানি, রমজান ইত্যাদি। আবার এগুলোর সার্বিক অবস্থা দেখেও সাধারণ যাত্রীরা বন্ধ হয়ে যাওয়া মুড়ির টিন বাসের কথা মনে করে। কেননা, এখনো কোনো গণপরিবহনের বেহাল দশা বলতে আমরা ‘মুড়ির টিন’ শব্দযুগলই ব্যবহার করি। এখনকার মেয়াদোত্তীর্ণ লক্কড়ঝক্কড় বাস মুড়ির টিন ছাড়া আর কি!
এই বাসগুলো রাস্তায় বিকল হয়ে যাত্রীদের জন্য শুধু দুর্ভোগ নয়, অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনাও বয়ে আনে। দূষণে তো আমরা কখনোই পিছিয়ে থাকি না, ফিটনেসবিহীন বাসগুলো এই তালিকার শীর্ষে যেতে আরও সাহায্য করে। এসব ব্যাপার আমলে নিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় নির্দেশ দিয়েছিল মেয়াদোত্তীর্ণ ফিটনেসবিহীন গণপরিবহন সরিয়ে নিতে।
প্রথমবার ঢাকার সড়ক থেকে লক্কড়ঝক্কড় ও রংচটা বাস সরানোর সময় ছিল ৩০ মে। দ্বিতীয় দফায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী তা বাড়িয়ে ৩০ জুন করেছিলেন। কিন্তু আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত এক সংবাদ থেকে জানা যাচ্ছে, সময়সীমা শেষ হলেও ঢাকার বুকে নিরাপদ ও দৃষ্টিনন্দন গণপরিবহনব্যবস্থার সিকিভাগও দেখা যায়নি। পাঠক, আপনি যদি রাজধানীর রাস্তায় বের হন, নিশ্চয়ই এর বিকল্প কোনো দৃশ্য দেখবেন না!
জানা যায়, মে মাসে ৩৪৮ আর জুন মাসে ৪৭৫টি বাসের ফিটনেস নবায়ন করা হয়েছে। শতকরা হিসাবে এটি নগর পরিবহনের মাত্র ২৩ দশমিক ৫১ শতাংশ। এটুকু অংশে ঢাকার কজন যাত্রী ঠাঁই পাবে, সেই প্রশ্ন অমূলক নয়। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে বাকি বাসগুলোর ফিটনেস কেন নবায়ন করা হয়নি, এ প্রশ্ন করা যায় ফিটনেসবিহীন গাড়ির মালিক ও পৃষ্ঠপোষকদের। পরিবহন খাতের বিশেষজ্ঞরাও দুশ্চিন্তা করছেন—প্রায় ৭৭ শতাংশ বাসের ফিটনেস নবায়ন না করায় সড়ক থেকে লক্কড়ঝক্কড় বাস তুলে নেওয়ার উদ্যোগ কতটা বাস্তবায়িত হবে?
বলা হচ্ছে, বাসগুলো সরাতে বিআরটিএ অভিযানে নামবে। তবে এর আগে বাসমালিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসবে তারা। তারপর কি আবারও মেয়াদ বাড়ানো হবে? এভাবেই কি মেয়াদ বাড়ানোর চক্র চলবে আর সাধারণ যাত্রীরা দুর্ভোগ পোহাতেই থাকবে?
তবু আমাদের প্রত্যাশা—বিআরটিএ-বাসমালিকদের বৈঠক যাত্রীদের জন্য সুখবর দেবে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হলে মিত্রবাহিনী তাদের ব্যবহার করা গাড়ি, ট্রাক ইত্যাদি পরিবহন আমাদের এই অঞ্চলে নিলামে বিক্রি করে দেয়। দক্ষ মেকানিক মওলা বখশ কিনলেন ৭-৮টি ট্রাক। সেই ট্রাকের গায়ে মুড়িয়ে দিলেন টিন। ভেতরে বেঞ্চের মতো পাতা আসনগুলো থাকত যাত্রীর অপেক্ষায়। ঢাকার রাস্তায় সেই বাসগুলো নামিয়ে দেওয়া হয় গণপরিবহনের কাজে।
তবে বাসের সংখ্যা ছিল যাত্রীর সংখ্যার তুলনায় নগণ্য। বসতে পারত বড়জোর ২০-২৫ জন, দাঁড়ানো যাত্রীর সংখ্যাই বেশি। মুড়ির মতো ঠাসাঠাসি করে জায়গা নিতে হতো তাদের। ঘেমে-নেয়ে গাদাগাদি আর হাঁসফাঁস করতে করতে যাত্রীরাই এই বাসগুলোর নাম দেয় ‘মুড়ির টিন’। অথচ ‘টাউন সার্ভিস’ শিরোনামে সেবা দেওয়া বাসগুলোর নাম হতো জনপ্রিয় সব হিন্দি সিনেমার নামানুসারে—আজাদ, পুকার, তাজমহল, কিসমত ইত্যাদি।
বর্তমান সময়ে রাজধানীতে গণপরিবহন হিসেবে ব্যবহৃত বাসগুলোর নামও কিন্তু খুব সুন্দর—বৈশাখী, তরঙ্গ, বসুন্ধরা, আসমানি, রমজান ইত্যাদি। আবার এগুলোর সার্বিক অবস্থা দেখেও সাধারণ যাত্রীরা বন্ধ হয়ে যাওয়া মুড়ির টিন বাসের কথা মনে করে। কেননা, এখনো কোনো গণপরিবহনের বেহাল দশা বলতে আমরা ‘মুড়ির টিন’ শব্দযুগলই ব্যবহার করি। এখনকার মেয়াদোত্তীর্ণ লক্কড়ঝক্কড় বাস মুড়ির টিন ছাড়া আর কি!
এই বাসগুলো রাস্তায় বিকল হয়ে যাত্রীদের জন্য শুধু দুর্ভোগ নয়, অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনাও বয়ে আনে। দূষণে তো আমরা কখনোই পিছিয়ে থাকি না, ফিটনেসবিহীন বাসগুলো এই তালিকার শীর্ষে যেতে আরও সাহায্য করে। এসব ব্যাপার আমলে নিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় নির্দেশ দিয়েছিল মেয়াদোত্তীর্ণ ফিটনেসবিহীন গণপরিবহন সরিয়ে নিতে।
প্রথমবার ঢাকার সড়ক থেকে লক্কড়ঝক্কড় ও রংচটা বাস সরানোর সময় ছিল ৩০ মে। দ্বিতীয় দফায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী তা বাড়িয়ে ৩০ জুন করেছিলেন। কিন্তু আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত এক সংবাদ থেকে জানা যাচ্ছে, সময়সীমা শেষ হলেও ঢাকার বুকে নিরাপদ ও দৃষ্টিনন্দন গণপরিবহনব্যবস্থার সিকিভাগও দেখা যায়নি। পাঠক, আপনি যদি রাজধানীর রাস্তায় বের হন, নিশ্চয়ই এর বিকল্প কোনো দৃশ্য দেখবেন না!
জানা যায়, মে মাসে ৩৪৮ আর জুন মাসে ৪৭৫টি বাসের ফিটনেস নবায়ন করা হয়েছে। শতকরা হিসাবে এটি নগর পরিবহনের মাত্র ২৩ দশমিক ৫১ শতাংশ। এটুকু অংশে ঢাকার কজন যাত্রী ঠাঁই পাবে, সেই প্রশ্ন অমূলক নয়। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে বাকি বাসগুলোর ফিটনেস কেন নবায়ন করা হয়নি, এ প্রশ্ন করা যায় ফিটনেসবিহীন গাড়ির মালিক ও পৃষ্ঠপোষকদের। পরিবহন খাতের বিশেষজ্ঞরাও দুশ্চিন্তা করছেন—প্রায় ৭৭ শতাংশ বাসের ফিটনেস নবায়ন না করায় সড়ক থেকে লক্কড়ঝক্কড় বাস তুলে নেওয়ার উদ্যোগ কতটা বাস্তবায়িত হবে?
বলা হচ্ছে, বাসগুলো সরাতে বিআরটিএ অভিযানে নামবে। তবে এর আগে বাসমালিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসবে তারা। তারপর কি আবারও মেয়াদ বাড়ানো হবে? এভাবেই কি মেয়াদ বাড়ানোর চক্র চলবে আর সাধারণ যাত্রীরা দুর্ভোগ পোহাতেই থাকবে?
তবু আমাদের প্রত্যাশা—বিআরটিএ-বাসমালিকদের বৈঠক যাত্রীদের জন্য সুখবর দেবে।
বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
২ দিন আগেগাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪দেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২০ নভেম্বর ২০২৪