মাহমুদউল্লাহ-তামিমের ফেরার স্বস্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১: ২০

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের এই দলের সবচেয়ে আলোচিত দুই চরিত্র হচ্ছেন তামিম ইকবাল আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। গতকাল কিউইদের বিপক্ষে হারের রাতে দুজনের ব্যাট কিছুটা হেসেছে। আর তাতে গ্যালারিপূর্ণ সমর্থকেরা খুশি হলেও আফসোসের উপাদানও যথেষ্ট ছিল।

তামিম-মাহমুদউল্লাহ দুজনই থিতু হয়ে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন। দুজনের সুযোগ ছিল ফিফটি করে আসার। দুজনেই তাতে ব্যর্থ হয়েছেন। ফ্লিক, কাভার ড্রাইভ, আপার কাটে সাজানো তামিমের ৪৪ রানের ইনিংস আশাবাদী করে তুলেছে বাংলাদেশকে। চোট থেকে দীর্ঘ সময় পর ফেরা বাঁহাতি ওপেনারকে যথেষ্ট সতেজ দেখা গেছে। ৫৮ বলে খেলা ৪৪ রানের ইনিংসে চার ছিল ৭টি। স্ট্রাইক রেট অবশ্য খুব একটা আকর্ষণীয় নয়, ৭৫.৮৬। ইনিংস খুব একটা বড় করতে না পারলেও তামিম শট নির্বাচন করেছেন সংশয়হীন মনে। বড় ভুল করেছেন একটাই। ১৯তম ওভারে ইশ সোধিকে সুইপ করতে চেয়েছিলেন তামিম। বল গ্লাভসে লেগে চলে যায় পেছনে। দারুণ এক ক্যাচ নিয়েছেন টম ব্লান্ডেল।

তামিমের প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল ৫০ ওভার ফিল্ডিং করা। সে পরীক্ষায় উতরে গেছেন তিনি। ব্যাটিংয়ে সুযোগ ছিল ‘এ প্লাস’ পাওয়ার, কিন্তু সেখানে কোনোভাবে পাস করেছেন। চন্ডিকা হাথুরুসিংহে নিশ্চিত হতাশ হয়েছেন তামিম ফিফটি ফেলে আসায়। লম্বা সময় পর ফিরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যাটিং করা মোটেও সহজ নয়—এটি চিন্তা করে অবশ্য তামিমকে পিট চাপড়ে দিতে পারেন হাথুরু।

ম্যাচ শেষে তামিম জানালেন, লম্বা সময় পর ফেরায় বেশ স্নায়ুচাপে ভুগেছেন তিনি। বাঁহাতি ওপেনার বললেন, ‘অনেক দিন পর নেমেছি, নার্ভাসনেস ছিল। এই ম্যাচে আত্মবিশ্বাস পেয়েছি। যখন পরের ম্যাচ খেলব, নার্ভসানেসটা হয়তো একটু কম হবে। যেটা বললাম, আমার শরীর কীভাবে রিঅ্যাক্ট করবে, এখন কোন পর্যায়ে আছে, সেগুলো নিয়ে মেডিকেল বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করছি। এত দিন পর এলে যেকোনো ব্যাটারের একটু নার্ভাসনেস থাকবে।’ 

তামিমের চেয়ে বেশি আফসোসে পোড়ার কথা মাহমুদউল্লাহর। ৭০ রানে ৪ উইকেট নেই বাংলাদেশের। ছয় মাস পর ব্যাটিংয়ে নেমে আবারও সেই মাহমুদউল্লাহকে চাপ সামলাতে হয়েছে। দলের বিপর্যয়ে ঢাল হয়ে করলেন ৭৬ বলে ৪৯ রান। বিপর্যয়ে বুক চিতিয়ে লড়ে ৩৮ ছুঁই ছুঁই মাহমুদউল্লাহ যেন বুঝিয়ে দিলেন, বিশ্বকাপে কেন তাঁকে দরকার। কাল-পরশু ঘোষণা হতে যাওয়া বিশ্বকাপ দলের ‘চাবি’ পাওয়ার ভালো দাবিই জানিয়ে রাখলেন মাহমুদউল্লাহ।

তবে ফিফটি থেকে মাত্র ১ রান দূরে থেকে ফিরে নিশ্চিত তাঁর মনের মধ্যে বড় আফসোস কাজ করছে। ১টা রান পেলে শুধু ফিফটিই নয়, ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৫০০০ হাজার রানও হয়ে যেত তাঁর। ৩৬তম ওভারে কোলের ম্যাককেনচির শর্ট বলটা টেনে মারতে গিয়ে শর্ট ফাইন লেগে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন মাহমুদউল্লাহ। ভালো একটা ইনিংস খেলার পথে এভাবে উইকেট বিলিয়ে দেওয়াটা হাথুরুর মোটেও ভালো লাগার কথা না।

তামিম-মাহমুদউল্লাহ তবু কিছু করে দেখিয়েছেন। কাঠগড়ায় উঠতে হচ্ছে সৌম্য সরকারকে। কত সুযোগ যে হাতছাড়া করেছেন তিনি। তবু বিশ্বকাপে একজন পেস বোলিং অলরাউন্ডারের ভাবনায় সৌম্যকে ইমার্জিং এশিয়া কাপ, বাংলাদেশ টাইগার্সের পর নিউজিল্যান্ড সিরিজেও সুযোগ দেওয়া হয়েছে। সব সুযোগই হেলাফেলায় হারিয়েছেন সৌম্য।

গতকাল আড়াই বছর পর ওয়ানডেতে ব্যাটিং করতে নেমেছিলেন। টিকলেন মোটে ২ বল। স্কোরবোর্ডে কোনো রানই যোগ করতে পারেননি সৌম্য। সোধির বল দ্বিধা মনে খেলতে গিয়ে ফিরতি ক্যাচ দিয়েছেন বোলারকে। তামিম-মাহমুদউল্লাহর প্রত্যাবর্তন মন্দ হয়নি। কিন্তু লিটন দাস যে রান করতে ভুলে গেলেন! বিশ্বকাপের আগমুহূর্তে চিন্তা বাড়িয়েছে তানজিম সাকিবের চোটও।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত