তাসনীম হাসান, চট্টগ্রাম
একজন মানুষ কোনো দিন এত ভালোবেসেছে আর একজনকে? হয়তো বেসেছে, অথবা বাসেনি। উনুনে ফুটন্ত দুধ যেভাবে ঢাকনা সরিয়ে বেরোতে চায়, সেভাবে দিগ্বিদিক ঠেলে বেরিয়েছে ভালোবাসা। সবাই বলেছে, ‘ভয় নেই, আমি তোমার কাছেই আছি। আমি তোমাকে রক্ত দেব, ধোঁয়া-ওঠা গরম ভাত দেব, তোমার হাতে ধরিয়ে দেব জীবনদায়ী ওষুধ। তুমি সেরে ওঠো ভাই...।’
একটা দুর্ঘটনা মানুষকে ভালোবাসার পাঠ দিয়ে গেল। আর মানুষ মানুষকে আঁকড়ে ধরে পৃথিবীকে জানিয়ে দিল, ‘এই যে আমি, অক্সিজেন লাগলে বলবেন, খাবার লাগলে বলবেন, ওষুধ লাগলে বলবেন।’ সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের পরও দগ্ধ মানুষদের বাঁচাতে চট্টগ্রামের একদল তরুণ এভাবেই দাঁড়িয়েছিলেন বুক পেতে। হাসপাতালে আসা রোগীদের ওয়ার্ডে নেওয়া, রক্ত, ওষুধ, চিকিৎসার সামগ্রী, খাবার, গাড়ি দেওয়া—কী না করেছেন তাঁরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁদের কাজ দেখে আনন্দে বুক ভাসিয়েছে মানুষ।
কারা এরা, কোথাকার বাসিন্দা? এদের জন্য মেলায় খেলার টিকিট নেই, বাসে-ট্রেনে জায়গা নেই, চাকরিতে আসন নেই, শুধু নেই আর নেই। কিন্তু এদের আছে বুকভরা ভালোবাসা আর অদম্য সাহস। সেই টানে শনিবার রাতে বিস্ফোরণের খবর পেয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছেন সবাই। কেউ শহর থেকে এসেছেন, কেউ এসেছেন শহরতলি থেকে। দূরের গ্রাম থেকেও এসেছেন অনেকে। কেউ বুকে সেঁটে এনেছেন ‘ওষুধ লাগলে বলুন’। কেউ প্ল্যাকার্ড উঁচিয়ে ধরে বলছেন ‘রক্ত লাগলে বলবেন’।
এই তরুণদেরই একদল গাউসিয়া কমিটির সদস্য। শনিবার রাত থেকে দগ্ধ ব্যক্তিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসা, ওষুদের ব্যবস্থা করার কাজ করেছেন তাঁরা। চারটি অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে তাঁরা সীতাকুণ্ড থেকে হাসপাতালে রোগী নিয়ে আসেন। এরপর জরুরি বিভাগের পাশে বসে রোগীদের স্বজনদের ওষুধ ও খাবার সরবরাহ করছিলেন সংগঠনটির সদস্যরা।
গাউসিয়া কমিটির সমন্বয়ক কমিটির সদস্য আহসান হাবিব চৌধুরী বললেন, ‘বিস্ফোরণের পরপরই হাজারখানেক কর্মী নেমে পড়েন। নিজেরা ২৯টি মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
প্রাথমিক চিকিৎসা, তল্লাশি ও উদ্ধার দল–তিনটি দলে ভাগ হয়ে বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে কাজ শুরু করেন রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবকেরা। পাশাপাশি আরেকটি দল হাসপাতালে এসে অ্যাম্বুলেন্স থেকে দ্রুত রোগীদের নামিয়ে পুনরায় গাড়িটি ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে। যুব রেড ক্রিসেন্টের প্রশিক্ষণ বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের ২০০ কর্মী রাতদিন সেবা দিয়ে যাচ্ছে। তথ্যসেবা কেন্দ্র খুলে রোগীর স্বজনদের প্রকৃত তথ্য দেওয়ার পাশাপাশি ওষুধ, পানি ও যাবতীয় ওষুধ সরবরাহ করে যাচ্ছি।’ জরুরি বিভাগের প্রবেশমুখের বাঁ পাশে বসে রোগীদের স্বজনদের সেবা দিয়ে যাচ্ছিলেন ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন নামের আরেকটি সংগঠনের কর্মীরা। তাঁরাও রোগী ও স্বজনদের খাবারের ব্যবস্থা করছিলেন।
বিভিন্ন সংগঠনের পাশাপাশি অনেক তরুণ রাজনৈতিক নেতাও মাঠে নেমেছেন রোগীদের সেবায়। ঘটনার পরপরই কর্মীদের নিয়ে হাসপাতালে আসেন ওমর গণি এমইএস কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আরশেদুল আলম বাচ্চু। গতকালও রোগীদের ওষুধ ও খাবারের ব্যবস্থা করেন তিনি। আরশেদুল আলম বললেন, ‘সারা বছরই চেষ্টা করি মানুষের পাশে থাকার। এই দুর্যোগে তো আরও বেশি করে থাকতে হবে।’
রক্তের চাহিদার তুলনায় রক্তদাতার সংখ্যা অপ্রতুল–শনিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রক্তের জন্য এমন আকুতি ছড়িয়ে পড়ার পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কয়েক শ শিক্ষার্থী কেউবা বাসে, কেউবা ট্রাকে করে ছুটে এসেছেন ২২ কিলোমিটার দূরের শহরে। সেই দলে ছিলেন যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী নুর নবী রবিন। তিনি বলেন, ‘রক্তের আকুতি জানতেই আমরা নেগেটিভ ব্লাড ডোনারদের নিয়ে ট্রাকে করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাই। কারণ তখন ট্রাক ছাড়া কোনো গাড়ি ছিল না।’
আল মানাহিল ফাউন্ডেশন, তোহফা, মানবিক সংগঠন মুসাইদা, স্মাইল বাংলাদেশ, আঁরা চাটগাইয়া মানবিক সংস্থা, স্বপ্নযাত্রী ফাউন্ডেশন, ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ, নিষ্ঠা ফাউন্ডেশনসহ বেশ কিছু সংগঠন ও বন্ধুদের দলকে হাসপাতালে দেখা গেছে রোগী ও স্বজনদের পাশে দাঁড়িয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় চিকিৎসক, ফায়ার সার্ভিস ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে তাঁদের ঝাঁপিয়ে পড়া দেখে সবাই বলছেন, এরাই আগামীর বাংলাদেশ।
একজন মানুষ কোনো দিন এত ভালোবেসেছে আর একজনকে? হয়তো বেসেছে, অথবা বাসেনি। উনুনে ফুটন্ত দুধ যেভাবে ঢাকনা সরিয়ে বেরোতে চায়, সেভাবে দিগ্বিদিক ঠেলে বেরিয়েছে ভালোবাসা। সবাই বলেছে, ‘ভয় নেই, আমি তোমার কাছেই আছি। আমি তোমাকে রক্ত দেব, ধোঁয়া-ওঠা গরম ভাত দেব, তোমার হাতে ধরিয়ে দেব জীবনদায়ী ওষুধ। তুমি সেরে ওঠো ভাই...।’
একটা দুর্ঘটনা মানুষকে ভালোবাসার পাঠ দিয়ে গেল। আর মানুষ মানুষকে আঁকড়ে ধরে পৃথিবীকে জানিয়ে দিল, ‘এই যে আমি, অক্সিজেন লাগলে বলবেন, খাবার লাগলে বলবেন, ওষুধ লাগলে বলবেন।’ সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের পরও দগ্ধ মানুষদের বাঁচাতে চট্টগ্রামের একদল তরুণ এভাবেই দাঁড়িয়েছিলেন বুক পেতে। হাসপাতালে আসা রোগীদের ওয়ার্ডে নেওয়া, রক্ত, ওষুধ, চিকিৎসার সামগ্রী, খাবার, গাড়ি দেওয়া—কী না করেছেন তাঁরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁদের কাজ দেখে আনন্দে বুক ভাসিয়েছে মানুষ।
কারা এরা, কোথাকার বাসিন্দা? এদের জন্য মেলায় খেলার টিকিট নেই, বাসে-ট্রেনে জায়গা নেই, চাকরিতে আসন নেই, শুধু নেই আর নেই। কিন্তু এদের আছে বুকভরা ভালোবাসা আর অদম্য সাহস। সেই টানে শনিবার রাতে বিস্ফোরণের খবর পেয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছেন সবাই। কেউ শহর থেকে এসেছেন, কেউ এসেছেন শহরতলি থেকে। দূরের গ্রাম থেকেও এসেছেন অনেকে। কেউ বুকে সেঁটে এনেছেন ‘ওষুধ লাগলে বলুন’। কেউ প্ল্যাকার্ড উঁচিয়ে ধরে বলছেন ‘রক্ত লাগলে বলবেন’।
এই তরুণদেরই একদল গাউসিয়া কমিটির সদস্য। শনিবার রাত থেকে দগ্ধ ব্যক্তিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসা, ওষুদের ব্যবস্থা করার কাজ করেছেন তাঁরা। চারটি অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে তাঁরা সীতাকুণ্ড থেকে হাসপাতালে রোগী নিয়ে আসেন। এরপর জরুরি বিভাগের পাশে বসে রোগীদের স্বজনদের ওষুধ ও খাবার সরবরাহ করছিলেন সংগঠনটির সদস্যরা।
গাউসিয়া কমিটির সমন্বয়ক কমিটির সদস্য আহসান হাবিব চৌধুরী বললেন, ‘বিস্ফোরণের পরপরই হাজারখানেক কর্মী নেমে পড়েন। নিজেরা ২৯টি মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
প্রাথমিক চিকিৎসা, তল্লাশি ও উদ্ধার দল–তিনটি দলে ভাগ হয়ে বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে কাজ শুরু করেন রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবকেরা। পাশাপাশি আরেকটি দল হাসপাতালে এসে অ্যাম্বুলেন্স থেকে দ্রুত রোগীদের নামিয়ে পুনরায় গাড়িটি ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে। যুব রেড ক্রিসেন্টের প্রশিক্ষণ বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের ২০০ কর্মী রাতদিন সেবা দিয়ে যাচ্ছে। তথ্যসেবা কেন্দ্র খুলে রোগীর স্বজনদের প্রকৃত তথ্য দেওয়ার পাশাপাশি ওষুধ, পানি ও যাবতীয় ওষুধ সরবরাহ করে যাচ্ছি।’ জরুরি বিভাগের প্রবেশমুখের বাঁ পাশে বসে রোগীদের স্বজনদের সেবা দিয়ে যাচ্ছিলেন ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন নামের আরেকটি সংগঠনের কর্মীরা। তাঁরাও রোগী ও স্বজনদের খাবারের ব্যবস্থা করছিলেন।
বিভিন্ন সংগঠনের পাশাপাশি অনেক তরুণ রাজনৈতিক নেতাও মাঠে নেমেছেন রোগীদের সেবায়। ঘটনার পরপরই কর্মীদের নিয়ে হাসপাতালে আসেন ওমর গণি এমইএস কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আরশেদুল আলম বাচ্চু। গতকালও রোগীদের ওষুধ ও খাবারের ব্যবস্থা করেন তিনি। আরশেদুল আলম বললেন, ‘সারা বছরই চেষ্টা করি মানুষের পাশে থাকার। এই দুর্যোগে তো আরও বেশি করে থাকতে হবে।’
রক্তের চাহিদার তুলনায় রক্তদাতার সংখ্যা অপ্রতুল–শনিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রক্তের জন্য এমন আকুতি ছড়িয়ে পড়ার পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কয়েক শ শিক্ষার্থী কেউবা বাসে, কেউবা ট্রাকে করে ছুটে এসেছেন ২২ কিলোমিটার দূরের শহরে। সেই দলে ছিলেন যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী নুর নবী রবিন। তিনি বলেন, ‘রক্তের আকুতি জানতেই আমরা নেগেটিভ ব্লাড ডোনারদের নিয়ে ট্রাকে করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাই। কারণ তখন ট্রাক ছাড়া কোনো গাড়ি ছিল না।’
আল মানাহিল ফাউন্ডেশন, তোহফা, মানবিক সংগঠন মুসাইদা, স্মাইল বাংলাদেশ, আঁরা চাটগাইয়া মানবিক সংস্থা, স্বপ্নযাত্রী ফাউন্ডেশন, ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ, নিষ্ঠা ফাউন্ডেশনসহ বেশ কিছু সংগঠন ও বন্ধুদের দলকে হাসপাতালে দেখা গেছে রোগী ও স্বজনদের পাশে দাঁড়িয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় চিকিৎসক, ফায়ার সার্ভিস ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে তাঁদের ঝাঁপিয়ে পড়া দেখে সবাই বলছেন, এরাই আগামীর বাংলাদেশ।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৪ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৪ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৪ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৪ দিন আগে