ভূঞাপুরে যমুনার চরাঞ্চলে ফসলের ফলন বেশ ভালো হয়। এখানে সারা বছর নানা ধরনের ফসলের আবাদ হয়ে থাকে। চলতি বছর তিলের বাম্পার ফলনের আশা করছেন উপজেলা কৃষি অফিস ও কৃষকেরা। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে এবং বন্যা আসার আগেই তিল ঘরে তুলতে পারলে অর্থনৈতিকভাবে ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবেন চরাঞ্চলের তিলচাষি।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলার যমুনার চরাঞ্চলে ২ হাজার ৪৮০ হেক্টর জমিতে তিলের চাষ হয়েছে। বিঘাপ্রতি ৯ থেকে ১০ মণ তিল পাওয়া যাবে বলে ধারণা করা যাচ্ছে। উৎপাদনের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ২ হাজার ৮৪৬ মেট্রিক টন।

দেখা গেছে, উপজেলার চরাঞ্চলবেষ্টিত অর্জুনা, গাবসারা, গোবিন্দাসী ও নিকরাইল ইউনিয়নের যমুনার চরে অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি তিলের আবাদ হয়েছে। যতদূর চোখ যায়, শুধু তিলের সবুজ গাছের সমাহার। বেশ কিছু অংশে তিল পরিপক্ব হয়ে উঠেছে। কয়েক দিনের মধ্যে সংগ্রহ করবেন চাষিরা।

এদিকে কয়েক দিনে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণে যমুনায় পানি বেড়েছে। এতে উপজেলার চরাঞ্চলের নিচু এলাকার তিল, কাউনসহ বিভিন্ন ফসলের জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে নিচু জমির ফসলের কিছুটা ক্ষতি হলেও বন্যার আগেই তিলসহ উঁচু জমির ফসল ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশা করছেন চরাঞ্চলের কৃষক।

উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের যমুনা চরাঞ্চলের তিলচাষি আজমত আলী, চাঁন মাহমুদ, গফুর আলীসহ অনেকে জানান, আগের তুলনায় এ বছর চরাঞ্চলে তিলের আবাদ তুলনামূলক ভালো। তিল চাষ সহজ ও লাভজনক। জমির মাটি সমান করে বীজ ছিটানোর তিন মাস পর সেচ, সার, কীটনাশক ছাড়াই তিল ঘরে তোলা যায়।

চরাঞ্চলের রামপুর গ্রামের শুক্কুর আলী বলেন, ‘আমি ছয় বিঘা জমিতে তিল চাষ করেছি। উচ্চফলনশীল বীজ ব্যবহারে ফলন ভালো হয়েছে। আশা করছি, বিঘাপ্রতি ৮-১০ মণ করে তিল পাব। বাজারে দাম ভালো পেলে ছয় বিঘায় খরচ বাদে এক থেকে দেড় লাখ টাকা লাভ করতে পারব।’

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির জানান, চলতি বছরে উপজেলার তিলচাষিদের মধ্যে বিনা মূল্যে উন্নত ফলনশীল জাতের বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। ফলে বাম্পার ফলন হয়েছে। মাঠপর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।