এভাবে হতাশ করলেন শান্ত-হৃদয়রা

রানা আব্বাস, কলকাতা থেকে
প্রকাশ : ০১ নভেম্বর ২০২৩, ০৯: ৩৬
আপডেট : ০১ নভেম্বর ২০২৩, ০৯: ৪৬

নাজমুল হোসেন শান্তর বলা সেই কথাটা এখনো দাগ কাটে অনেকের মনে। এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁকে নিয়ে যে মাত্রায় সমালোচনা, ট্রল হয়, যেন নিজের দেশের বিপক্ষেই খেলছেন! গত বিপিএল থেকে শান্ত এত দুর্দান্ত খেলতে শুরু করলেন, সর্বশেষ এশিয়া কাপের প্রথম পর্বে চোটে পড়ে ছিটকে পড়তেই তাঁকে নিয়ে উল্টো দর্শকদের হাহাকার।

ক্যারিয়ারের সেরা সময় যাকে বলে, শান্ত গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সেটিই কাটিয়েছেন। বিপিএলের পর দেশের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে রান পেলেন। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দেশে ও দেশের বাইরে রানের বন্যা বইয়ে দিলেন। এশিয়া কাপে ছিটকে যাওয়ার আগে তাঁর তিন ইনিংসে রান ছিল ৮৯, ১০৪ ও ৭৬। ২০২৩ বিশ্বকাপের আগে এ বছর খেলা ১৫ ওয়ানডেতে প্রায় ৫০ গড়ে ২ সেঞ্চুরি আর ৫ ফিফটিতে শান্তর রান প্রায় ৭০০। জীবনের প্রথম বিশ্বকাপটা রাঙাতে এর চেয়ে সেরা ছন্দে আর কীভাবে থাকতে পারেন একজন ব্যাটার?

ধর্মশালায় আফগানদের বিপক্ষে সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শান্ত ৫৯ রানে অপরাজিত থেকে বিশ্বকাপে দারুণ কিছুর ইঙ্গিতও দিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু কে জানত, ভালো শুরুর পরই ঘোর অন্ধকার সময় নেমে আসবে তাঁর ব্যাটিংয়ে। ০, ৭, ৮, ০, ৯ ও ৪—সর্বশেষ ৬ ইনিংসে দলের একজন টপ অর্ডার ব্যাটারের রান ২৮। যিনি আর দুই অঙ্কেই পৌঁছাতে পারেননি। বড় মঞ্চে চাপের মধ্যে অসাধারণ বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে শান্তর ব্যাটিং-সামর্থ্য নিয়েই এখন প্রশ্ন। এত দারুণ ছন্দে থেকেও যিনি এভাবে ধারাবাহিক ব্যর্থ হতে থাকেন, তাঁকে আর যা-ই হোক, বিশ্বকাপের খেলোয়াড় বলা যায় না!

তানজিদ হাসান তামিমের এ বিশ্বকাপ খেলাই হয় না, যদি তামিম ইকবাল বিশ্বকাপ দলে থাকতেন। সিনিয়র তামিমের বড় জুতায় পা গলানোর কী অপূর্ব সুযোগ এসেছিল তাঁর সামনে। এশিয়া কাপে প্রমাণ করতে পারেননি, বিশ্বকাপের আগমুহূর্তে নিউজিল্যান্ড সিরিজেও পারেননি। জুনিয়র তামিমের বিশ্বকাপ দলে থাকার কথাও ছিল না। তিনি টিম ম্যানেজমেন্টের ভাবনায় ছিলেন বড়জোর বিকল্প ওপেনার হিসেবে। কিন্তু সব পরিকল্পনা এলোমেলো হয়ে যায় বিশ্বকাপের দল ঘোষণার আগমুহূর্তে তামিম না থাকায়। জুনিয়র তামিমেই ভরসা রাখতে বাধ্য হলো টিম ম্যানেজমেন্ট। আস্থার কোনো প্রতিদানই দিতে পারেননি তিনি। 

পুনেতে ভারতের বিপক্ষে ৪৩ বলে ৫১ রান করে কিছুটা ইঙ্গিতই দিয়েছিলেন ছন্দে ফেরার। যদি নিজেকেই কেউ উদ্বুদ্ধ না করতে পারেন, তাঁকে ব্যর্থতার চোরাবালি থেকে টেনে তুলবে কে? একজন ওপেনার ধারাবাহিক ব্যর্থ হয়ে নিজের ক্যারিয়ার যেমন হুমকির মুখে ফেলেছেন, দলকেও ডুবিয়েছেন ২০২০ যুব বিশ্বকাপজয়ী তানজিদ তামিম। ৭ ইনিংসে ১৪.৫০ গড়ে সাকল্যে ১০০ রান তাঁর।

২০২০ অনূর্ধ্ব বিশ্বকাপজয়ী আরেক ক্রিকেটার তাওহীদ হৃদয়, যিনি প্রচারের আলোয় এসেছিলেন গত বিপিএলে অসাধারণ খেলে। মাঠে, মাঠের বাইরে তাঁর আত্মবিশ্বাস অনেককে মুগ্ধ করেছিল। মিডল অর্ডারে নেমে কবজির মোচড়ে অন সাইডে তাঁর পাওয়ার হিটিং দক্ষতাও বিশেষ দৃষ্টি কেড়েছিল। কিন্তু আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ রানের বন্যা বইয়ে দেওয়া আর বিশ্বকাপে ভালো খেলার মধ্যে কত পার্থক্য, সেটিই বোঝা গেল হৃদয়ের পারফরম্যান্সে। ৫ ম্যাচে করতে পেরেছেন মোটে ৭৫ রান। এতটাই বাজে খেলেছেন, বিশ্বকাপে দুই ম্যাচে বাদ পড়ার অভিজ্ঞতাও তাঁর হয়েছে।

টুর্নামেন্টজুড়ে তিন তরুণ ক্রিকেটারের একসঙ্গে ঘুমিয়ে থাকাটা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) দুর্বল পাইপলাইন, খেলোয়াড় তুলে নিয়ে আসা, নির্বাচন কিংবা ক্রিকেটারদের পরিচর্যার প্রক্রিয়াকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। ম্যাচ শেষে দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসা মেহেদী হাসান মিরাজ অবশ্য নির্দিষ্ট করে কোনো সতীর্থকে দায়ী করতে চান না, ‘কারও দোষ দিতে চাই না।

সবাই খারাপ খেলেছি। দেখুন, দলে সাত ব্যাটার থাকলে সবাই রান করবে না। তিনজন বড় রান করলে বাকিরা ছোট ছোট অবদান রাখলেই চলে। এভাবেই তো ক্রিকেট খেলাটা হয়। ব্যাটারদের সবারই কোনো না কোনো ভুল হচ্ছে। আমরা সবাই ব্যর্থ হচ্ছি।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত