বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা কাল নিউজিল্যান্ড থেকে একটু ব্যতিক্রম উপায়ে অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে শুভকামনা জানালেন। আজ প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপ জেতার সুযোগ বাংলাদেশ যুবাদের। সুযোগটা জুনিয়ররা যেন কাজে লাগাতে পারেন, তাঁদের অনুপ্রাণিত করতে টিম বাসে বসে একে একে মুশফিক-শান্ত-মিরাজরা শুভকামনা জানিয়েছেন।

শুভকামনা জানাতে তাওহীদ হৃদয়ের কথাটা একটু অন্যভাবে দাগ কাটল। হৃদয় জানালেন, বাংলাদেশের যুব বিশ্বকাপ জয়ের অভিজ্ঞতা আছে। কিন্তু কখনো এশিয়া কাপ জেতা হয়নি। সেই অচলায়তন ভাঙার অভিযানে আজ স্বাগতিক আরব আমিরাতের বিপক্ষে খেলতে নামবে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। এমন এক অচলায়তন ভাঙার তাড়া আছে বাংলাদেশ দলেরও। ২০০৭ সাল থেকে নিউজিল্যান্ডে যে ২৫টি সাদা বলের ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ, কোনোটিই জেতেনি। টেস্টেও মলিন পরিসংখ্যান লম্বা সময় তাচ্ছিল্যের হাসি হেসেছে বাংলাদেশের দিকে তাকিয়ে। গত বছর মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্ট জেতার পর ক্লান্তিকর রেকর্ডে একটা ‘পজ’ পড়েছে। কিন্তু গত ১৬ বছরে ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টিতে নিউজিল্যান্ডের মাঠে বিবর্ণ পরিসংখ্যানে একটুও রং লাগাতে পারেনি বাংলাদেশ।

সাকিব-তামিম-মুশফিক-মাহমুদউল্লাহর মতো যুগন্ধর ক্রিকেটারদের সাজানো দলও কিউইদের মাঠে পরাজয়ের বৃত্তেই আটকা থেকেছে।সেখানে এবার নাজমুল হোসেন শান্তর মতো তারুণ্যনির্ভর দল কি পারবে হারের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে নতুন কোনো গল্প লিখতে? শান্ত কাল ওয়ানডে সিরিজপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে বলেছেন, এবার কিছু একটা করে দেখাতে চান তাঁরা।

শান্তর যুক্তি, ‘অবশ্যই (প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডে জেতা)। আমার মনে হয়, এর আগে কোনো দলই করতে পারেনি। বাংলাদেশ দল যতবারই এখানে এসেছে। তবে কোনো না কোনো দলকে তা করতে হবে। সবাই বিশ্বাস করে, এই দলের সেই সামর্থ্য আছে। সবাই বিশ্বাস করে, এ বছর ভিন্ন ফল হবে ইনশা আল্লাহ।’

গত মাসে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও সিলেটে শান্ত এমনই এক আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে জয়ের কথা বলেছিলেন। কদিন আগে দেশের মাঠে টেস্টে কখনো নিউজিল্যান্ডকে না হারানো বাংলাদেশ জয়ের স্বাদ পেয়েছে তাঁরই নেতৃত্বে। তবে নিউজিল্যান্ডের মাঠে কাজটা মোটেও সহজ নয়। প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়ের আগে বাংলাদেশকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জটা জানায় কিউই কন্ডিশন। কাল দলের এক সিনিয়র খেলোয়াড় যেমন তাঁর মুঠোফোনে ডানেডিনের আবহাওয়ার তথ্য স্ক্রিনশট নিয়ে পাঠালেন এই প্রতিবেদককে।

দুপুরে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলেও বিকেলের দিকে সেটি নেমে আসে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এই ঠান্ডার সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে যে বাংলাদেশ ভালো করতে পারে, সে তো প্রস্তুতি ম্যাচের জয়েই প্রমাণিত। তবে প্রস্তুতি ম্যাচ আর মূল ম্যাচে আকাশ-পাতাল পার্থক্য। শান্ত তাই ঠান্ডাকে অজুহাত হিসেবে সামনে আনতে রাজি নন, ‘অনেক ঠান্ডা কন্ডিশন। তবে এটাকে আমরা কেউই অজুহাত দিতে চাই না। এটা নিয়ে আমাদের ধারণা আছে। আশা করছি, এ নিয়ে খুব একটা সমস্যা হবে না।’

কাল অনুশীলনে চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বিশেষ কাজ করেছেন সৌম্য সরকারকে নিয়ে। বাঁহাতি এই অলরাউন্ডারকে যেভাবে সুযোগ দেওয়া হয়, সেটি নিয়েও কম আলোচনা হয় না। সৌম্য আস্থার প্রতিদান দিতে পেরেছেন কমই। কাল শান্তকেও কথা বলতে হলো সৌম্যকে নিয়ে, ‘সৌম্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। তার ব্যাটিংয়ের সঙ্গে বোলিংটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু সাকিব ভাই নেই। ব্যাটিংয়ের সঙ্গে বোলিংও যেহেতু গুরুত্বপূর্ণ, টিম ম্যানেজমেন্ট, নির্বাচকেরা তাকে (সৌম্য) দলের সঙ্গে নিয়েছেন। সঙ্গে অভিজ্ঞতাও আছে (এ ধরনের কন্ডিশনে)।’