আজাদুর রহমান চন্দন
আজ এমন একজনের জন্মদিন, যাঁর সঙ্গে আমার কখনো পরিচয়ই ছিল না। বয়সের ফারাক ছাড়াও সামাজিক-রাজনৈতিক অবস্থানের এতটাই তফাত যে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডে তাঁর প্রাণহানি না ঘটলে এবং প্রাণহরণের আগেই তিনি চরিত্র হননের শিকার না হলে, তাঁকে নিয়ে হয়তো কিছু লিখতেই হতো না।
যাঁর কথা বলছি, তিনি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বড় ছেলে এবং মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক শেখ কামাল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে একদল বিপথগামী সেনাসদস্যের সুপরিকল্পিত হামলায় সপরিবারে প্রাণ হারান ২৬ বছর বয়সের এই টগবগে যুবক। মাত্র এক মাস আগেই তিনি বিয়ে করেছিলেন ক্রীড়াবিদ সুলতানা আহমেদ খুকিকে। কামাল নিজেও ছিলেন একজন ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সংগঠক। শাহীন স্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে বিএ (অনার্স) পাস করেন। তিনি ‘ছায়ানট’-এ সেতার বাদন শিখতেন। এ বিষয়ে শিক্ষাবিদ আবুল ফজল লিখেছেন, ‘খুব সম্ভবত ১৯৬৬-৬৭ই হবে। ঢাকার সুবিখ্যাত সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানটের বার্ষিক অনুষ্ঠান, ঢাকার ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট হলে। আমাকে করতে হয়েছিল সভাপতিত্ব। ভাষণ ইত্যাদি প্রাথমিক পর্ব শেষ হলে শুরু হলো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, অর্থাৎ গানবাজনা, নৃত্য ইত্যাদি। মঞ্চ থেকে নেমে এসে আমরা আসন নিয়েছি দর্শকদের চেয়ারে। আমার পাশে বেগম সুফিয়া কামাল। তিনি তখন ছায়ানটের সভানেত্রী। সমবেত ঐকতানের প্রস্তুতি নিয়ে শিল্পীরা বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র হাতে মঞ্চে আসন নিয়েছে অর্ধবৃত্তাকারে। শিল্পীদের সারির মাঝখানে দীর্ঘকায় হ্যাংলাদেহ এক ছেলে সেতার হাতে ঋজু হয়ে আসন নিয়ে সংকেতের প্রতীক্ষায় বসে আছে আসন গেড়ে। সে বয়সেও গোঁফের রেখা স্পষ্ট। অঙ্গুলি নির্দেশ করে সুফিয়া কামাল বললেন—ওইটি মুজিবের ছেলে।’
কামাল মঞ্চনাটক আন্দোলনেরও সংগঠক ছিলেন। তবে ব্যক্তি কামালের জীবনকথা লেখা আমার উদ্দেশ্য নয়। ছোটবেলা থেকেই শেখ কামালকে নিয়ে এমন কিছু ঘটনার কথা শুনে আসছিলাম, যার কোনোটিরই কোনো সত্যতা পাইনি পরবর্তী সময়ে। শেখ কামাল সম্পর্কিত বিষয় ছাড়াও সদ্য স্বাধীন দেশে অনেক গুজব ছিল। পঁচাত্তরের আগে বাসন্তীর ছেঁড়া জাল পরা ছবির কাহিনীটি জানার সুযোগ আমার তখন হয়নি। অনেক পরে জানতে পারি, দেশে দুর্ভিক্ষের ভয়াবহতা ফুটিয়ে তোলার অশুভ উদ্দেশ্যে ১৯৭৪ সালে দৈনিক ইত্তেফাক সাজানো ছবিটি প্রকাশ করেছিল। ছবিটি সাজানো হলেও দুর্ভিক্ষটাও মিথ্যা ছিল না।
১৯৭৩ সালের শেষের দিকে সিরাজ শিকদারের সর্বহারা পার্টির চোরাগোপ্তা হামলা বাড়ছিল। সিরাজ শিকদার বিজয় দিবস মানতেন না। সে জন্য তাঁর পার্টি ১৪ ডিসেম্বর ঢাকায় দুটি স্থানে বোমা নিক্ষেপ করেছিল। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসেও সর্বহারা পার্টিসহ অন্যান্য সশস্ত্র গ্রুপ নাশকতা চালাতে পারে বলে তখন খবর ছিল। এ প্রসঙ্গে এমন একজনের স্মৃতিচারণা উল্লেখ করার মতো, যিনি কস্মিনকালেও শেখ কামাল কিংবা আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ছিলেন না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) প্রয়াত মইনুল হোসেন চৌধুরী বীর বিক্রম তাঁর বইয়ে লিখেছেন, ‘১৯৭৩ সালের বিজয় দিবসের আগের রাতে গুজব ছড়িয়ে পড়ে, সিরাজ শিকদার ও তাঁর দলবল এসে ঢাকায় সরকারবিরোধী লিফলেট প্রচার এবং বিভিন্ন স্থানে হামলা চালাতে পারে। এই আশঙ্কায় শহরে রাতের বেলায় সাদাপোশাকে পুলিশ গাড়ি নিয়ে টহল দিতে থাকে। ওই রাতেই প্রধানমন্ত্রীর জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামাল, যিনি একজন ছাত্রনেতা এবং মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতে প্রথম সামরিক অফিসার্স কোর্স (শর্ট সার্ভিস-১) সামরিক প্রশিক্ষণ নেন ও যুদ্ধের সময় কর্নেল ওসমানীর এডিসি হিসেবে কাজ করেন, তিনি ধানমন্ডি এলাকায় তাঁর সাতজন সমবয়সী বন্ধুকে নিয়ে একটি মাইক্রোবাসে শহরে টহলে বের হন। একপর্যায়ে সিরাজ শিকদারের খোঁজে টহলরত স্পেশাল পুলিশ মাইক্রোবাসটি দেখতে পায় এবং সন্দেহ ও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে কোনো সতর্ক সংকেত না দিয়েই অতর্কিতে মাইক্রোবাসের ওপর গুলি চালায়। এতে কামালসহ তাঁর ছয়জন সঙ্গী আহত হন। পরে পুলিশই তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। শেখ কামালকে পরে পিজি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।’ মইনুল আরও লিখেছেন, ‘এদিকে স্বাধীনতাবিরোধী ও আওয়ামী লীগবিদ্বেষীরা এই ঘটনাকে ভিন্নরূপে প্রচার করে। “ব্যাংক ডাকাতি” করতে গিয়ে কামাল পুলিশের হাতে গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে তারা প্রচারণা চালায় এবং দেশ-বিদেশে ভুল তথ্য ছড়াতে থাকে। যদিও এসব প্রচারণায় সত্যের লেশমাত্র ছিল না।’
শেখ কামালের বিরুদ্ধে তখনকার সেনা কর্মকর্তা ডালিমের স্ত্রী নিম্মীকে ঢাকা লেডিস ক্লাব থেকে অপহরণ করে জাতীয় রক্ষীবাহিনীর সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়ার রটনা ছিল। তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঘটনার সঙ্গে শেখ কামালের কোনোই সম্পর্ক ছিল না। শরিফুল হক ডালিমের এক বইয়েই লেখা আছে, ১৯৭৪ সালের মাঝামাঝি তাঁর খালাতো বোনের বিয়ের অনুষ্ঠানে তখনকার রেডক্রস চেয়ারম্যান গাজী গোলাম মোস্তফার পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। বাইরের হলে ডালিমের শ্যালক বাপ্পির ঠিক পেছনের সারিতে ছিল গাজীর ছেলেরা। বাপ্পির সঙ্গে তাঁদের ঝামেলা হয়েছিল। পরে দুটো মাইক্রোবাস এবং একটি কারে করে ১০-১২ জন অস্ত্রধারীসহ লেডিস ক্লাবে যান গাজী গোলাম মোস্তফা। গাড়ি থেকেই প্রায় চিৎকার করতে করতে বেরোলেন গাজী গোলাম মোস্তফা। একপর্যায়ে গাজীর ইশারায় অস্ত্রধারীরা ডালিমকে টেনেহিঁচড়ে মাইক্রোবাসে তোলার চেষ্টা করলে ডালিমের খালা ও নিম্মী বেরিয়ে এসে বললেন, তাঁদেরও সঙ্গে নিতে হবে। পরে গাজী তাঁদের নিয়ে যান বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে। সেখানে বহুজনের উপস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু ঘটনাটি মীমাংসা করে দিয়েছিলেন।
এখানে উল্লেখ করা দরকার, কী ধরনের পরিবেশ-পরিস্থিতিতে গুজব ডালপালা মেলার সুযোগ বেশি পায়, সে বিষয়টিও বিবেচনায় রাখা উচিত। সোভিয়েত ইউনিয়নসহ পূর্ব ইউরোপে সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সংকট না থাকলে শুধু গুজব আর ষড়যন্ত্রে কি তার পতন ঘটত? বিষয়টি মাথায় না রাখলে গুজবের হাত থেকে পরিত্রাণ পাওয়াও কঠিন হবে।
লেখক: সাংবাদিক ও গবেষক
আজ এমন একজনের জন্মদিন, যাঁর সঙ্গে আমার কখনো পরিচয়ই ছিল না। বয়সের ফারাক ছাড়াও সামাজিক-রাজনৈতিক অবস্থানের এতটাই তফাত যে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডে তাঁর প্রাণহানি না ঘটলে এবং প্রাণহরণের আগেই তিনি চরিত্র হননের শিকার না হলে, তাঁকে নিয়ে হয়তো কিছু লিখতেই হতো না।
যাঁর কথা বলছি, তিনি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বড় ছেলে এবং মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক শেখ কামাল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে একদল বিপথগামী সেনাসদস্যের সুপরিকল্পিত হামলায় সপরিবারে প্রাণ হারান ২৬ বছর বয়সের এই টগবগে যুবক। মাত্র এক মাস আগেই তিনি বিয়ে করেছিলেন ক্রীড়াবিদ সুলতানা আহমেদ খুকিকে। কামাল নিজেও ছিলেন একজন ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সংগঠক। শাহীন স্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে বিএ (অনার্স) পাস করেন। তিনি ‘ছায়ানট’-এ সেতার বাদন শিখতেন। এ বিষয়ে শিক্ষাবিদ আবুল ফজল লিখেছেন, ‘খুব সম্ভবত ১৯৬৬-৬৭ই হবে। ঢাকার সুবিখ্যাত সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানটের বার্ষিক অনুষ্ঠান, ঢাকার ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট হলে। আমাকে করতে হয়েছিল সভাপতিত্ব। ভাষণ ইত্যাদি প্রাথমিক পর্ব শেষ হলে শুরু হলো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, অর্থাৎ গানবাজনা, নৃত্য ইত্যাদি। মঞ্চ থেকে নেমে এসে আমরা আসন নিয়েছি দর্শকদের চেয়ারে। আমার পাশে বেগম সুফিয়া কামাল। তিনি তখন ছায়ানটের সভানেত্রী। সমবেত ঐকতানের প্রস্তুতি নিয়ে শিল্পীরা বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র হাতে মঞ্চে আসন নিয়েছে অর্ধবৃত্তাকারে। শিল্পীদের সারির মাঝখানে দীর্ঘকায় হ্যাংলাদেহ এক ছেলে সেতার হাতে ঋজু হয়ে আসন নিয়ে সংকেতের প্রতীক্ষায় বসে আছে আসন গেড়ে। সে বয়সেও গোঁফের রেখা স্পষ্ট। অঙ্গুলি নির্দেশ করে সুফিয়া কামাল বললেন—ওইটি মুজিবের ছেলে।’
কামাল মঞ্চনাটক আন্দোলনেরও সংগঠক ছিলেন। তবে ব্যক্তি কামালের জীবনকথা লেখা আমার উদ্দেশ্য নয়। ছোটবেলা থেকেই শেখ কামালকে নিয়ে এমন কিছু ঘটনার কথা শুনে আসছিলাম, যার কোনোটিরই কোনো সত্যতা পাইনি পরবর্তী সময়ে। শেখ কামাল সম্পর্কিত বিষয় ছাড়াও সদ্য স্বাধীন দেশে অনেক গুজব ছিল। পঁচাত্তরের আগে বাসন্তীর ছেঁড়া জাল পরা ছবির কাহিনীটি জানার সুযোগ আমার তখন হয়নি। অনেক পরে জানতে পারি, দেশে দুর্ভিক্ষের ভয়াবহতা ফুটিয়ে তোলার অশুভ উদ্দেশ্যে ১৯৭৪ সালে দৈনিক ইত্তেফাক সাজানো ছবিটি প্রকাশ করেছিল। ছবিটি সাজানো হলেও দুর্ভিক্ষটাও মিথ্যা ছিল না।
১৯৭৩ সালের শেষের দিকে সিরাজ শিকদারের সর্বহারা পার্টির চোরাগোপ্তা হামলা বাড়ছিল। সিরাজ শিকদার বিজয় দিবস মানতেন না। সে জন্য তাঁর পার্টি ১৪ ডিসেম্বর ঢাকায় দুটি স্থানে বোমা নিক্ষেপ করেছিল। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসেও সর্বহারা পার্টিসহ অন্যান্য সশস্ত্র গ্রুপ নাশকতা চালাতে পারে বলে তখন খবর ছিল। এ প্রসঙ্গে এমন একজনের স্মৃতিচারণা উল্লেখ করার মতো, যিনি কস্মিনকালেও শেখ কামাল কিংবা আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ছিলেন না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) প্রয়াত মইনুল হোসেন চৌধুরী বীর বিক্রম তাঁর বইয়ে লিখেছেন, ‘১৯৭৩ সালের বিজয় দিবসের আগের রাতে গুজব ছড়িয়ে পড়ে, সিরাজ শিকদার ও তাঁর দলবল এসে ঢাকায় সরকারবিরোধী লিফলেট প্রচার এবং বিভিন্ন স্থানে হামলা চালাতে পারে। এই আশঙ্কায় শহরে রাতের বেলায় সাদাপোশাকে পুলিশ গাড়ি নিয়ে টহল দিতে থাকে। ওই রাতেই প্রধানমন্ত্রীর জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামাল, যিনি একজন ছাত্রনেতা এবং মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতে প্রথম সামরিক অফিসার্স কোর্স (শর্ট সার্ভিস-১) সামরিক প্রশিক্ষণ নেন ও যুদ্ধের সময় কর্নেল ওসমানীর এডিসি হিসেবে কাজ করেন, তিনি ধানমন্ডি এলাকায় তাঁর সাতজন সমবয়সী বন্ধুকে নিয়ে একটি মাইক্রোবাসে শহরে টহলে বের হন। একপর্যায়ে সিরাজ শিকদারের খোঁজে টহলরত স্পেশাল পুলিশ মাইক্রোবাসটি দেখতে পায় এবং সন্দেহ ও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে কোনো সতর্ক সংকেত না দিয়েই অতর্কিতে মাইক্রোবাসের ওপর গুলি চালায়। এতে কামালসহ তাঁর ছয়জন সঙ্গী আহত হন। পরে পুলিশই তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। শেখ কামালকে পরে পিজি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।’ মইনুল আরও লিখেছেন, ‘এদিকে স্বাধীনতাবিরোধী ও আওয়ামী লীগবিদ্বেষীরা এই ঘটনাকে ভিন্নরূপে প্রচার করে। “ব্যাংক ডাকাতি” করতে গিয়ে কামাল পুলিশের হাতে গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে তারা প্রচারণা চালায় এবং দেশ-বিদেশে ভুল তথ্য ছড়াতে থাকে। যদিও এসব প্রচারণায় সত্যের লেশমাত্র ছিল না।’
শেখ কামালের বিরুদ্ধে তখনকার সেনা কর্মকর্তা ডালিমের স্ত্রী নিম্মীকে ঢাকা লেডিস ক্লাব থেকে অপহরণ করে জাতীয় রক্ষীবাহিনীর সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়ার রটনা ছিল। তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঘটনার সঙ্গে শেখ কামালের কোনোই সম্পর্ক ছিল না। শরিফুল হক ডালিমের এক বইয়েই লেখা আছে, ১৯৭৪ সালের মাঝামাঝি তাঁর খালাতো বোনের বিয়ের অনুষ্ঠানে তখনকার রেডক্রস চেয়ারম্যান গাজী গোলাম মোস্তফার পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। বাইরের হলে ডালিমের শ্যালক বাপ্পির ঠিক পেছনের সারিতে ছিল গাজীর ছেলেরা। বাপ্পির সঙ্গে তাঁদের ঝামেলা হয়েছিল। পরে দুটো মাইক্রোবাস এবং একটি কারে করে ১০-১২ জন অস্ত্রধারীসহ লেডিস ক্লাবে যান গাজী গোলাম মোস্তফা। গাড়ি থেকেই প্রায় চিৎকার করতে করতে বেরোলেন গাজী গোলাম মোস্তফা। একপর্যায়ে গাজীর ইশারায় অস্ত্রধারীরা ডালিমকে টেনেহিঁচড়ে মাইক্রোবাসে তোলার চেষ্টা করলে ডালিমের খালা ও নিম্মী বেরিয়ে এসে বললেন, তাঁদেরও সঙ্গে নিতে হবে। পরে গাজী তাঁদের নিয়ে যান বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে। সেখানে বহুজনের উপস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু ঘটনাটি মীমাংসা করে দিয়েছিলেন।
এখানে উল্লেখ করা দরকার, কী ধরনের পরিবেশ-পরিস্থিতিতে গুজব ডালপালা মেলার সুযোগ বেশি পায়, সে বিষয়টিও বিবেচনায় রাখা উচিত। সোভিয়েত ইউনিয়নসহ পূর্ব ইউরোপে সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সংকট না থাকলে শুধু গুজব আর ষড়যন্ত্রে কি তার পতন ঘটত? বিষয়টি মাথায় না রাখলে গুজবের হাত থেকে পরিত্রাণ পাওয়াও কঠিন হবে।
লেখক: সাংবাদিক ও গবেষক
১০ বছর ধরে নিজের আত্মজীবনী লিখেছেন বরেণ্য অভিনেতা, নাট্যকার ও নির্মাতা আবুল হায়াত। নাম দিয়েছেন ‘রবি পথ’। অবশেষে প্রকাশ হচ্ছে তাঁর আত্মজীবনী। আগামী ২ নভেম্বর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজন করা হয়েছে রবি পথের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান।
৩ ঘণ্টা আগেপর্দার নায়িকারা নিজেদের বয়স আড়ালে রাখা পছন্দ করেন। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম আজমেরী হক বাঁধন। প্রতিবছর নিজের জন্মদিনে জানান দেন তাঁর বয়স। গতকাল ছিল বাঁধনের ৪১তম জন্মদিন। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেই জানালেন এই তথ্য।
২ দিন আগে১০ বছরের বেশি সময় ধরে শোবিজে কাজ করছেন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। নাটকের পাশাপাশি ওটিটিতে দেখা গেছে তাঁকে। সরকারি অনুদানের ‘দেবী’ নামের একটি সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন। প্রশংসিত হলেও সিনেমায় আর দেখা মেলেনি তাঁর। ছোট পর্দাতেও অনেক দিন ধরে অনিয়মিত তিনি। এবার শবনম ফারিয়া হাজির হচ্ছেন নতুন পরিচয়ে। কমেডি রিয়েলিটি
২ দিন আগেআমাদের লোকসংস্কৃতির অন্যতম ঐতিহ্য যাত্রাপালা। গণমানুষের সংস্কৃতি হিসেবে বিবেচিত এই যাত্রাপালা নিয়ে শিল্পকলা একাডেমি আয়োজন করছে ‘যাত্রা উৎসব-২০২৪’। আগামী ১ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চে শুরু হবে ৭ দিনব্যাপী এই উৎসব।
২ দিন আগে