Ajker Patrika

খেতের ৬ টাকার ফুলকপি বাজারে বিক্রি ৩০ টাকায়

খেতের ৬ টাকার ফুলকপি বাজারে বিক্রি ৩০ টাকায়

কৃষকের খেত থেকে এক মণ ফুলকপি পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকায়। সেই হিসাবে এক কেজির দাম পড়ে ৬ টাকা। কিন্তু মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরের খুচরা বাজারে এ ফুলকপি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। অর্থাৎ ২৪০ টাকা মণ থেকে ৫ গুণ বেড়ে দাঁড়ায় ১২০০ টাকায়। শুধু ফুলকপি নয়, যশোরের ঝিকরগাছায় বিভিন্ন সবজি উৎপাদন করে এমন লোকসান গুনতে হচ্ছে কৃষকদের। পাশাপাশি খুচরা বিক্রেতাদের অধিক মুনাফার লোভে পকেট কাটা পড়ছে ক্রেতাদের। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ও বাজার ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

গত বৃহস্পতিবার উপজেলার বোধখানা মাঠে গিয়ে কথা হয় কৃষক মো. ওলিয়ার রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘গত মঙ্গলবার ফুলকপি বাজারে পাইকারি বিক্রি করেছি ১০-১৩ টাকা কেজি দরে। বাজারে নিয়ে আড়তে এ দাম পেয়েছি। আড়াই বিঘা জমিতে নিনজা জাতের শীতকালীন ফুলকপির চাষ করেছি।’

একই গ্রামের কৃষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘চলতি মৌসুমে আট বিঘা জমিতে ফুলকপির চাষ করেছি। দুই মাস ধরে পর্যায়ক্রমে এ ফুলকপি বিক্রি করছি। গত রোববার পাইকারি ক্রেতারা ৬ টাকা করে দাম বলে গেছেন। পরের দিন ঝিকরগাছা বাজারে আড়তে নিয়ে দাম পেয়েছি ৬-১০ টাকা কেজি। তাই কয়েক দিন ধরে আর ফুলকপি কাটছি না, এক বিঘা জমিতে ফুলকপি রয়েছে। দাম বাড়লে তুলব।’

এদিকে বোধখানা মাঠ থেকে ঝিকরগাছা বাজার পাঁচ কিলোমিটারের পথ। সেখানে কৃষকের কাছ থেকে কেনা ফুলকপি পাঁচ গুণ দামে বিক্রি করতে দেখা গেছে। বাজারের কাপুড়িয়া পট্টির মুখের সবজি বিক্রেতা রবিউল ইসলাম বলেন, ‘প্রতি কেজি ফুলকপি ও বেগুন ৩০ টাকা করে বিক্রি করছি।’ এত দাম কেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যেমন কেনা তেমন বিক্রি।’

উপজেলার একই মাঠের বেগুনচাষি মমিনুর রহমান বলেন, ‘৪৪ শতক জমিতে সলি মাকড়া (কাঁটাওয়ালা) জাতের বেগুন চাষ করেছি। বেগুন চাষে খরচ ও পরিশ্রম বেশি, অথচ আড়তে নিয়ে গেলে দাম পাই না। পাইকারি ১৫-২০ টাকা কেজি বেগুন বিক্রি করে চাষে লোকসান গুনতে হয়েছে।’

বাজারে সবজি কিনতে আসা শহিদুল ইসলাম নামের এক শিক্ষক বলেন, ‘কৃষক সবজি উৎপাদন করে যে দামে বিক্রি করেন, আমরা তার কয়েক গুণ বেশি দামে কিনে থাকি। এতে আমাদের পকেট খালি হলেও কৃষক এর ফল পাচ্ছেন না। মুনাফা ভোগ করছেন মধ্যস্বত্বভোগীরা।’

বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত কৃষক আলী হোসেন বলেন, ‘আমাদের কাছ থেকে কেনা সবজি ৪-৫ কিলোমিটার দূরে বিক্রি হয় কয়েক গুণ বেশি দামে।

অথচ আমরা কৃষক লোকসান শুনছি ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার কারণে।’

বাজারের জনতা এজেন্সির ব্যবস্থাপক আমিনুর রহমান বলেন, ‘প্রতি কেজি সবজি বিক্রির জন্য আড়তদারি দেওয়া লাগে ২০ টাকা কেজি হলে ২ টাকা, ৩০ ও ৪০ টাকা হলে ৩ টাকা। এভাবে ৫ টাকা পর্যন্ত আড়তদারি নেওয়া হয়। শ্রমিক খরচ মণে পাঁচ টাকা। খাজনা দিতে হয় শতকরা ৩ টাকা। এসব খরচ সবজি বিক্রি করতে আসা মালিকদের দিতে হয়।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল হক বলেন, ‘সবজি বিক্রিতে ইচ্ছেমতো দাম নেওয়ার সুযোগ নেই। যাঁরা এটা করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে শিগগির ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নবরাত্রির জন্য বছরজুড়ে অপেক্ষা, পিরিয়ডের কারণে পালন করতে না পেরে আত্মহত্যা

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে আরাকান আর্মির আপত্তি ও শর্ত

আ.লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, খই-মুড়ির মতো বোমা ফুটছে জাজিরায়

অটোতে ফেলে যাওয়া ১৮ ভরি স্বর্ণালংকার ফিরিয়ে দিলেন কলেজছাত্র

পরকীয়া নিয়ে ঝগড়া, স্ত্রীর কাঠের আঘাতে স্বামী নিহত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত