Ajker Patrika

প্রাণিসম্পদ দপ্তরে সেবা না পাওয়ার অভিযোগ খামারিদের

কৌশিক হাসান মামুন, বারহাট্টা (নেত্রকোনা)
আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৫: ১৫
প্রাণিসম্পদ দপ্তরে সেবা না পাওয়ার অভিযোগ খামারিদের

নেত্রকোনার বারহাট্টায় প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে সেবা না পেয়ে হতাশ খামারিরা। দীর্ঘদিন ধরে সেবা না পাওয়ার কারণে এক ধরনের ক্ষোভ তৈরি হয়েছে তাঁদের মধ্যে। সঠিক পরামর্শ ও সহযোগিতার অভাবে অনেক নতুন খামারি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন। আবার অনেকেই খামার বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন।

এ অবস্থায় তাঁরা গবাদিপশুকে বাঁচাতে অর্থের বিনিময়ে সাধারণ পশু চিকিৎসকের শরণাপন্ন হচ্ছেন। এতে একদিকে খামারিরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, অন্যদিকে প্রাণিসম্পদ দপ্তরের অভিজ্ঞ চিকিৎসকের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তাঁরা। তবে প্রাণিসম্পদ দপ্তর বলছে, নিয়ম মেনে পর্যায়ক্রমে খামারিদের সেবা দেওয়া হচ্ছে।

বারহাট্টা উপজেলা সদরের আসমা গ্রামের খামারি সাইদুর রহমান খোকন বলেন, ‘আমার খামারে বর্তমানে ৩০টি গরু আছে। প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে কোনো পরামর্শ কিংবা সহযোগিতা এখন পর্যন্ত পাইনি। বন্যাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোতেও তাঁদের দেখা পাই না আমরা। বাধ্য হয়ে টাকার বিনিময়ে বেসরকারি পশু চিকিৎসকের পরামর্শ নিই আমি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার চারটি বাছুর মারা গেছে এবং দুটি গর্ভবতী গাভির ভ্রূণ নষ্ট হয়েছে উপযুক্ত চিকিৎসার অভাবে। এতে আমার প্রায় আট লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। উপযুক্ত চিকিৎসা যেহেতু পাই না তাই এখনো ভয়ে আছি কোনো দিন আরও বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ি।’

সিংধা ইউনিয়নের খামারি মামুন বলেন, ‘পশু হাসপাতালের চিকিৎসকেরা সাধারণত গ্রামে আসেন না। গবাদিপশু বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হলে তাঁদের অফিসে নিয়ে যেতে বলা হয়। অফিসে গরু নিতে গেলে কমপক্ষে ভাড়া বাবদ এক হাজার টাকা খরচ হয়। আমাদের মতো প্রান্তিক খামারিদের পক্ষে এত টাকা ব্যয় করা সম্ভব নয়।’

উপজেলার বাউসি ইউনিয়নের আশিকুর রহমান বলেন, ‘গ্রাম পর্যায়ে তাঁরা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কোনো সেবা পান না। গ্রামের ছোট খামারিরা মানে যাদের তিন চারটা গরু আছে তারা তো টাকা দিতে পারেন না। তাই তাদের ভাগ্যে সেবাও জোটে না।’

সেবা না পাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা চিকিৎসক মহিউদ্দিন বলেন, ‘মাঠপর্যায়ে আমাদের সঙ্গে এখন অনেক মানুষ কাজ করছে। প্রত্যেক ইউনিয়নে একজন করে কৃত্রিম প্রজননকারী ও একজন করে ভ্যাকসিনেটর ও লাইভস্টক সার্ভিস প্রোভাইডার গ্রামে গ্রামে ঘুরে খামারিদের সেবা দিয়ে থাকেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ ছাড়া উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারাও বিভিন্ন খামার ও গ্রাম পর্যায়ের খামারিদের সেবা দেন। তবে উপজেলায় কোনো ভেটেরিনারি সার্জন নেই। তাই ভেটেরিনারি সার্জনের সেবাটা সবার কাছে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। তবু আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত