Ajker Patrika

দক্ষিণবঙ্গের বাতিঘর

রুবায়েত হোসেন, খুবি 
আপডেট : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১০: ৩৪
দক্ষিণবঙ্গের বাতিঘর

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী

১০৬ একরের খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে (খুবি) বর্তমানে ৬টি স্কুল (অনুষদ) ও ২টি ইনস্টিটিউটের অধীনে প্রায় ৭ হাজার ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষক পাঁচ শতাধিক। বিদেশি শিক্ষার্থী রয়েছেন ১৯ জন। বর্তমানে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট অধ্যাপক রয়েছেন ১৮০ জন। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি ডিগ্রিধারী শিক্ষকের সংখ্যা ১৭৪। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২৭টি ব্যাচে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উত্তীর্ণ গ্র্যাজুয়েট সংখ্যা ১৩ হাজার ৩৯। এ ছাড়া বর্তমানে প্রতিবছর ২৯টি ডিসিপ্লিনের (বিভাগ) অধীনে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয় বিশ্ববিদ্যালয়টিতে।

গবেষণায় সাফল্য

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৯ ও ২০২০ সালে পরপর দুবার স্কোপাস পরিচালিত জরিপে দেশের মধ্যে উদ্ভাবনীতে প্রথম ও গবেষণায় দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থান লাভ করে। ২০২১ সালে বিশ্ব বিজ্ঞানীদের র‍্যাঙ্কিংয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৯ জন শিক্ষক-গবেষক বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে মর্যাদাপূর্ণ স্থান লাভ করেছেন।

সেশনজটমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়

বছরের প্রথম দিন থেকেই ক্লাস শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়টিতে। এ ছাড়া সব শিক্ষা কার্যক্রম একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী পরিচালিত হয়ে থাকে। শুরু থেকেই খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ধরনের সেশনজট নেই। তাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সব একাডেমিক কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরীক্ষা ও ফলাফল প্রকাশিত হয়।

শিক্ষাকার্যক্রম

বর্তমানে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮টি স্কুল (অনুষদ) রয়েছে। এখানে মোট ২৯টি ডিসিপ্লিনে (বিভাগ) শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিয়মিত ব্যাচেলর ডিগ্রি, ব্যাচেলর অব অনার্স ডিগ্রি, মাস্টার্স ডিগ্রি, এমফিল ও পিএইচডি প্রদান করা হয়। শিক্ষা স্কুলের অধীন রয়েছে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রয়েছে ৩টি একাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবন, ভাইস-চ্যান্সেলরের বাসভবন, পাঁচটি আবাসিক হল, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য ৫টি বাসভবন, অগ্রণী ব্যাংক, ডাকঘর, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় মন্দির। ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষকদের জ্ঞান সহায়তায় রয়েছে সমৃদ্ধ কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ভবন। বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রম জোরদারের লক্ষ্যে বহুতলবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় গবেষণাগার স্থাপন করা হয়েছে।

ছাত্রসংগঠন

শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বদানের গুণাবলি অর্জন ও সংস্কৃতিচর্চার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে ২০টির অধিক ছাত্রসংগঠন। যার সব কটিই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দ্বারা পরিচালিত। বাঁধন, র‍োটার‍্যাক্ট ক্লাব, কৃষ্টি, ভৈরবী, স্পার্ক, ক্যারিয়ার ক্লাব, রিদম, ছায়া বৃত্ত, কেইউপিএস এর মধ্যে অন্যতম। প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো সংগঠনের অনুষ্ঠান হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে, সেখানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন শিক্ষার্থীরা।

উৎসবের ক্যাম্পাস

পয়লা বৈশাখ, পিঠা উৎসব, বসন্তবরণ ইত্যাদি উৎসব বাংলাদেশের অন্য কোথাও হয়তো খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালন করা হয় না। খুলনার সবচেয়ে বড় পয়লা বৈশাখের উৎসব হয় এ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে।

ছাত্ররাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস

২০২২ সালে এসেও যে ছাত্ররাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠা করা যায় তার একমাত্র উদাহরণ হলো খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। এ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের কোনো ভবনের গায়ে নেই রাজনৈতিক স্লোগান, নেই কোনো মিছিল-মিটিং। প্রতিষ্ঠার ৩২ বছরেও ঘটেনি কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড।

Untitled-8অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন 
উপাচার্য, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।
আমার প্রথম লক্ষ্য শিক্ষা ও গবেষণায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করা। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক র‍্যাঙ্কিংয়ের মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান তৈরি ও তা ধরে রাখা। সঙ্গে সঙ্গে অবকাঠামোগত সুবিধা সৃষ্টি। গবেষণায় আমরা সবিশেষ জোর দিয়েছি। কারণ, গবেষণা ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমৃদ্ধি সম্ভব নয়। এখানে একটি কথা উল্লেখ করা প্রয়োজন তা হচ্ছে, আমরা এখন চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। তাই চতুর্থ বিপ্লবের সুযোগ কাজে লাগাতে সবিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইউনিভার্সিটি-ইন্ডাস্ট্রির লিংক স্থাপনে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে আমরা বেশ কিছু পদক্ষেপও নিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একক প্রচেষ্টায় গড়ে তোলা সম্ভব নয়। এখানে ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সব মানুষের সহযোগিতা প্রয়োজন হয়। সরকারেরও পৃষ্ঠপোষকতার দরকার হয়। বর্তমান সরকারের সহায়তা আমরা পাচ্ছি। এ সরকারের আমলে অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অবকাঠামো গড়ে তুলতে ৩৩৫ কোটি টাকার সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। এটি শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা নতুন বড় একটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়নে উদ্যোগ নিয়েছি। আমি বিশ্ববিদ্যালয়কে অভীষ্ট লক্ষ্যে এগিয়ে নিতে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীসহ সবার সহযোগিতা চাই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চার মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানের সেবা ডিজিটাইজ করার নির্দেশ দিল সরকার

গত দশ বছর ভিসা না পাওয়ার কারণে বাংলাদেশে আসতে পারিনি: মাইলাম

মাগুরার শিশুটি এখনো অচেতন, চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান

ঈদে পুলিশের সহযোগী ফোর্স হবে বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মী, পাবে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা

তিন নারী আমার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ: তারেক রহমান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত