আমানুর রহমান রনি, ঢাকা
বিদেশে সবজিসহ কৃষিপণ্য রপ্তানি বাড়াতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় প্যাকিং হাউসে স্থাপিত উদ্ভিদ সংগনিরোধ ল্যাবরেটরিকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে এ-সংক্রান্ত প্রকল্পে যন্ত্রপাতি কেনাকাটায় অনিয়ম ও অসংগতির অভিযোগ উঠেছে। মিথ্যা তথ্য দিয়ে এবং অপ্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি উল্লেখ করে প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানো হয়েছে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) পর্যবেক্ষণে এসব অনিয়মের তথ্য উঠে এসেছে।
প্রকল্পের অধীনে মাইক্রোস্কোপ কেনা বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ৪২ কোটি টাকা। এফএও বলছে, এগুলোর কোনো প্রয়োজনই নেই। এফএওর দেওয়া প্রতিবেদনের পর কৃষি মন্ত্রণালয়ও প্রকল্পটির বিষয়ে তদন্ত করেছে। তাতেও প্রায় ৪৩ কোটি টাকার অতিরিক্ত যন্ত্রপাতি কেনার আয়োজনের তথ্য উঠে আসে। মন্ত্রণালয়ের তদন্তে প্রকল্পের যন্ত্রপাতি কেনার ব্যয় ১১১ কোটি ৫৪ লাখ ৩৫ টাকা থেকে নেমে আসে ৬৮ কোটি ৭৬ লাখ ৩৫ হাজার টাকায়। প্রকল্পটি সংশোধনের সুপারিশ করে প্রতিবেদন দেয় মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কমিটি। কিন্তু উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) সংশোধন না করেই কেনাকাটার প্রক্রিয়া শুরু করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের একাধিক সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পের আওতায় কেনাকাটার ক্ষেত্রে তাড়াহুড়োর নেপথ্যে আছেন প্রকল্প পরিচালক ড. জগৎ চাঁদ মালাকার। সূত্রমতে, প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। প্রকল্প পরিচালক অবসরে যাচ্ছেন এ বছরের ডিসেম্বরে। পরিকল্পনা কমিশনের নির্দেশনা আছে, প্রকল্প পরিচালক নিয়োগের ক্ষেত্রে তাঁর চাকরির মেয়াদ প্রকল্প বাস্তবায়নকাল পর্যন্ত থাকতে হবে। জগৎ চাঁদ মালাকারের ক্ষেত্রে এই নির্দেশনার ব্যত্যয় ঘটেছে। অভিযোগ আছে, মন্ত্রণালয়ের এক শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুবাদে তিনি এই প্রকল্পের দায়িত্ব পেয়েছেন।
প্রকল্প পরিচালক ড. জগৎ চাঁদ মালাকার অবশ্য আজকের পত্রিকাকে বলেন, কোনো অনিয়ম হয়নি। মন্ত্রণালয় যেভাবে বলেছে, সেভাবেই দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ১০টি উদ্ভিদ সংগনিরোধ ল্যাবরেটরিকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করতে এই প্রকল্প হাতে নেয়। এ লক্ষ্যে ১৫৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প একনেকে পাস হয় ২০২১ সালের অক্টোবরে। ২০২৪ সালের জুনে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। ১০টি ল্যাবরেটরির জন্য যন্ত্রপাতি কেনা বাবদ ধরা হয় ১১১ কোটি ৫৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। এফএও এক পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এসব কেনাকাটার ক্ষেত্রে বিভিন্ন অনিয়ম ও অসংগতির তথ্য তুলে ধরেছে। তারা এ বিষয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ে একটি সুপারিশসংবলিত প্রতিবেদন দিয়েছে।
এফএওর দৃষ্টিতে বড় ৯ অনিয়ম
এফওএর প্রতিবেদনে ৯টি বড় অনিয়মের তথ্য উল্লেখ আছে। অনিয়মের মধ্যে আছে—কম অভিজ্ঞ লোক দিয়ে ল্যাবের স্পেসিফিকেশন তৈরি করা হয়েছে; ল্যাব ও যন্ত্রপাতির স্পেসিফিকেশন ঠিক নেই; কোনো কোনো যন্ত্রপাতির স্পেসিফিকেশন ব্রশিউর থেকে হুবহু কপি করা; একই ধরনের যন্ত্র অপ্রয়োজনে সাত লটে ধরা হয়েছে; ৪০ লাখ মার্কিন ডলারে ১৯টি মাইক্রোস্কোপ কেনার বিষয়টি অস্বাভাবিক, এ টাকায় সম্পূর্ণ কার্যকর কয়েকটি ল্যাব স্থাপন করা যায়। এফএও আরও বলেছে, মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবের উপযোগিতা যাচাই না করেই প্রায় সব ধরনের গ্লাসওয়্যারের সংস্থান রাখা হয়েছে; যন্ত্র পরিচালনার জন্য অনেক আইটেম বাদ দেওয়া হয়েছে; কিছু যন্ত্রের জন্য আলাদা কক্ষের প্রয়োজন।
অনিয়ম দূর করতে চার দফা সুপারিশ দিয়ে সে অনুসারে ল্যাবের যন্ত্রপাতি কেনার অনুরোধ জানিয়েছে এফওএ।
সুপারিশ আমলে না নিলে ক্ষতি
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা জানান, এফএওর সুপারিশ অনুযায়ী ল্যাবরেটরি তৈরি না হলে কৃষিপণ্য কখনই আমেরিকা-ইউরোপে বাজার পাবে না। কারণ, এই সংস্থার প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই ওই সব দেশ কৃষিপণ্য আমদানি-রপ্তানি করে। তাই তাদের সুপারিশ আমলে নেওয়া উচিত বলে মনে করেন ওই কর্মকর্তারা।
মন্ত্রণালয়ের তদন্ত
এফএও প্রতিবেদন দেওয়ার পর কৃষি মন্ত্রণালয় গত ১০ জানুয়ারি পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করে যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ এনামুল হকের নেতৃত্বে। কমিটি গত ৩১ জানুয়ারি এ বিষয়ে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রকল্পে ১০টি ল্যাবের জন্য প্রাক্কলিত খরচ ৬৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকা হবে। অর্থাৎ কেনাকাটার ব্যয় ১১১ কোটি ৫৪ লাখ টাকা থেকে ৪২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা কমে যায়। এমনকি অপ্রয়োজনীয় ২০টি যন্ত্র বাদ দেওয়ার সুপারিশ করে ৫১টি নতুন দরকারি যন্ত্র প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তারপরও প্রকল্পের খরচ কমে আসছে। কমিটি যন্ত্রপাতির চূড়ান্ত তালিকা, বাজারদর, স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী ১০টি ভিন্ন প্যাকেজে কেনার সুপারিশ করেছে।
কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার আজকের পত্রিকাকে বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের কমিটি তদন্ত করেছে। তাদের সংশোধনীতে ৪২ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।
তড়িঘড়ি দরপত্র আহ্বান
অভিযোগ আছে, এফএও এবং মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের পরও ডিপিপি সংশোধন না করে তড়িঘড়ি দরপত্র ডাকা হয়। নথি সূত্রে জানা যায়, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তারের সভাপতিত্বে গত ২ মার্চ প্রকল্পের স্টিয়ারিং কমিটির তৃতীয় সভায় ডিপিপি সংশোধন না করেই দরপত্র ডাকার সিদ্ধান্ত হয়। যুক্তি দেখিয়ে বলা হয়, ডিপিপি সংশোধন করা দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার; তাই দরপত্র হওয়ার পর কার্যাদেশ দেওয়ার আগে ডিপিপি সংশোধন করা হবে। স্টিয়ারিং কমিটির ওই সিদ্ধান্তের পর ৬ মার্চ দরপত্র আহ্বান করেন প্রকল্প পরিচালক।
এ বিষয়ে কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার বলেন, সবকিছু সংশোধন করে টেন্ডার দেওয়া হয়েছে। তবে নথির সঙ্গে সচিবের এই বক্তব্যের মিল পাওয়া যায়নি। নথিতে উল্লেখ আছে, দরপত্রের পর যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ পাবে, তাদের কার্যাদেশ দেওয়ার পর ডিপিপি সংশোধন করা হবে বলে স্টিয়ারিং কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাতে কমিটির সভাপতি হিসেবে কৃষিসচিবের সই আছে।
মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, যদি কোনো প্রকল্পের কেনাকাটায় পরিবর্তন ও ব্যয় কমে আসে, তাহলে তা ডিপিপিতে সংশোধন করতে হয়। অসংগতি রেখে প্রকল্পের দরপত্র আহ্বান করা নৈতিকভাবে ঠিক নয়। কারণ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ পাওয়ার পর বিভিন্নভাবে যন্ত্রপাতি এদিক-সেদিক করে দিতে পারে।
এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ বাদল চন্দ্র বিশ্বাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রতিবেদনের পর আমরা তদন্ত করেছি। তারা একটি প্রতিবেদন দিয়েছে, সে অনুযায়ী তারা একটি প্রস্তাব দিয়েছে। সে অনুযায়ী টেন্ডার হয়েছে। কোনো ব্যত্যয় হয়নি।’ তবে ডিপিপি সংশোধনের প্রসঙ্গটি তিনি এড়িয়ে যান।
বিদেশে সবজিসহ কৃষিপণ্য রপ্তানি বাড়াতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় প্যাকিং হাউসে স্থাপিত উদ্ভিদ সংগনিরোধ ল্যাবরেটরিকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে এ-সংক্রান্ত প্রকল্পে যন্ত্রপাতি কেনাকাটায় অনিয়ম ও অসংগতির অভিযোগ উঠেছে। মিথ্যা তথ্য দিয়ে এবং অপ্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি উল্লেখ করে প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানো হয়েছে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) পর্যবেক্ষণে এসব অনিয়মের তথ্য উঠে এসেছে।
প্রকল্পের অধীনে মাইক্রোস্কোপ কেনা বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ৪২ কোটি টাকা। এফএও বলছে, এগুলোর কোনো প্রয়োজনই নেই। এফএওর দেওয়া প্রতিবেদনের পর কৃষি মন্ত্রণালয়ও প্রকল্পটির বিষয়ে তদন্ত করেছে। তাতেও প্রায় ৪৩ কোটি টাকার অতিরিক্ত যন্ত্রপাতি কেনার আয়োজনের তথ্য উঠে আসে। মন্ত্রণালয়ের তদন্তে প্রকল্পের যন্ত্রপাতি কেনার ব্যয় ১১১ কোটি ৫৪ লাখ ৩৫ টাকা থেকে নেমে আসে ৬৮ কোটি ৭৬ লাখ ৩৫ হাজার টাকায়। প্রকল্পটি সংশোধনের সুপারিশ করে প্রতিবেদন দেয় মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কমিটি। কিন্তু উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) সংশোধন না করেই কেনাকাটার প্রক্রিয়া শুরু করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের একাধিক সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পের আওতায় কেনাকাটার ক্ষেত্রে তাড়াহুড়োর নেপথ্যে আছেন প্রকল্প পরিচালক ড. জগৎ চাঁদ মালাকার। সূত্রমতে, প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। প্রকল্প পরিচালক অবসরে যাচ্ছেন এ বছরের ডিসেম্বরে। পরিকল্পনা কমিশনের নির্দেশনা আছে, প্রকল্প পরিচালক নিয়োগের ক্ষেত্রে তাঁর চাকরির মেয়াদ প্রকল্প বাস্তবায়নকাল পর্যন্ত থাকতে হবে। জগৎ চাঁদ মালাকারের ক্ষেত্রে এই নির্দেশনার ব্যত্যয় ঘটেছে। অভিযোগ আছে, মন্ত্রণালয়ের এক শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুবাদে তিনি এই প্রকল্পের দায়িত্ব পেয়েছেন।
প্রকল্প পরিচালক ড. জগৎ চাঁদ মালাকার অবশ্য আজকের পত্রিকাকে বলেন, কোনো অনিয়ম হয়নি। মন্ত্রণালয় যেভাবে বলেছে, সেভাবেই দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ১০টি উদ্ভিদ সংগনিরোধ ল্যাবরেটরিকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করতে এই প্রকল্প হাতে নেয়। এ লক্ষ্যে ১৫৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প একনেকে পাস হয় ২০২১ সালের অক্টোবরে। ২০২৪ সালের জুনে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। ১০টি ল্যাবরেটরির জন্য যন্ত্রপাতি কেনা বাবদ ধরা হয় ১১১ কোটি ৫৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। এফএও এক পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এসব কেনাকাটার ক্ষেত্রে বিভিন্ন অনিয়ম ও অসংগতির তথ্য তুলে ধরেছে। তারা এ বিষয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ে একটি সুপারিশসংবলিত প্রতিবেদন দিয়েছে।
এফএওর দৃষ্টিতে বড় ৯ অনিয়ম
এফওএর প্রতিবেদনে ৯টি বড় অনিয়মের তথ্য উল্লেখ আছে। অনিয়মের মধ্যে আছে—কম অভিজ্ঞ লোক দিয়ে ল্যাবের স্পেসিফিকেশন তৈরি করা হয়েছে; ল্যাব ও যন্ত্রপাতির স্পেসিফিকেশন ঠিক নেই; কোনো কোনো যন্ত্রপাতির স্পেসিফিকেশন ব্রশিউর থেকে হুবহু কপি করা; একই ধরনের যন্ত্র অপ্রয়োজনে সাত লটে ধরা হয়েছে; ৪০ লাখ মার্কিন ডলারে ১৯টি মাইক্রোস্কোপ কেনার বিষয়টি অস্বাভাবিক, এ টাকায় সম্পূর্ণ কার্যকর কয়েকটি ল্যাব স্থাপন করা যায়। এফএও আরও বলেছে, মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবের উপযোগিতা যাচাই না করেই প্রায় সব ধরনের গ্লাসওয়্যারের সংস্থান রাখা হয়েছে; যন্ত্র পরিচালনার জন্য অনেক আইটেম বাদ দেওয়া হয়েছে; কিছু যন্ত্রের জন্য আলাদা কক্ষের প্রয়োজন।
অনিয়ম দূর করতে চার দফা সুপারিশ দিয়ে সে অনুসারে ল্যাবের যন্ত্রপাতি কেনার অনুরোধ জানিয়েছে এফওএ।
সুপারিশ আমলে না নিলে ক্ষতি
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা জানান, এফএওর সুপারিশ অনুযায়ী ল্যাবরেটরি তৈরি না হলে কৃষিপণ্য কখনই আমেরিকা-ইউরোপে বাজার পাবে না। কারণ, এই সংস্থার প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই ওই সব দেশ কৃষিপণ্য আমদানি-রপ্তানি করে। তাই তাদের সুপারিশ আমলে নেওয়া উচিত বলে মনে করেন ওই কর্মকর্তারা।
মন্ত্রণালয়ের তদন্ত
এফএও প্রতিবেদন দেওয়ার পর কৃষি মন্ত্রণালয় গত ১০ জানুয়ারি পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করে যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ এনামুল হকের নেতৃত্বে। কমিটি গত ৩১ জানুয়ারি এ বিষয়ে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রকল্পে ১০টি ল্যাবের জন্য প্রাক্কলিত খরচ ৬৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকা হবে। অর্থাৎ কেনাকাটার ব্যয় ১১১ কোটি ৫৪ লাখ টাকা থেকে ৪২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা কমে যায়। এমনকি অপ্রয়োজনীয় ২০টি যন্ত্র বাদ দেওয়ার সুপারিশ করে ৫১টি নতুন দরকারি যন্ত্র প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তারপরও প্রকল্পের খরচ কমে আসছে। কমিটি যন্ত্রপাতির চূড়ান্ত তালিকা, বাজারদর, স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী ১০টি ভিন্ন প্যাকেজে কেনার সুপারিশ করেছে।
কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার আজকের পত্রিকাকে বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের কমিটি তদন্ত করেছে। তাদের সংশোধনীতে ৪২ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।
তড়িঘড়ি দরপত্র আহ্বান
অভিযোগ আছে, এফএও এবং মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের পরও ডিপিপি সংশোধন না করে তড়িঘড়ি দরপত্র ডাকা হয়। নথি সূত্রে জানা যায়, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তারের সভাপতিত্বে গত ২ মার্চ প্রকল্পের স্টিয়ারিং কমিটির তৃতীয় সভায় ডিপিপি সংশোধন না করেই দরপত্র ডাকার সিদ্ধান্ত হয়। যুক্তি দেখিয়ে বলা হয়, ডিপিপি সংশোধন করা দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার; তাই দরপত্র হওয়ার পর কার্যাদেশ দেওয়ার আগে ডিপিপি সংশোধন করা হবে। স্টিয়ারিং কমিটির ওই সিদ্ধান্তের পর ৬ মার্চ দরপত্র আহ্বান করেন প্রকল্প পরিচালক।
এ বিষয়ে কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার বলেন, সবকিছু সংশোধন করে টেন্ডার দেওয়া হয়েছে। তবে নথির সঙ্গে সচিবের এই বক্তব্যের মিল পাওয়া যায়নি। নথিতে উল্লেখ আছে, দরপত্রের পর যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ পাবে, তাদের কার্যাদেশ দেওয়ার পর ডিপিপি সংশোধন করা হবে বলে স্টিয়ারিং কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাতে কমিটির সভাপতি হিসেবে কৃষিসচিবের সই আছে।
মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, যদি কোনো প্রকল্পের কেনাকাটায় পরিবর্তন ও ব্যয় কমে আসে, তাহলে তা ডিপিপিতে সংশোধন করতে হয়। অসংগতি রেখে প্রকল্পের দরপত্র আহ্বান করা নৈতিকভাবে ঠিক নয়। কারণ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ পাওয়ার পর বিভিন্নভাবে যন্ত্রপাতি এদিক-সেদিক করে দিতে পারে।
এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ বাদল চন্দ্র বিশ্বাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রতিবেদনের পর আমরা তদন্ত করেছি। তারা একটি প্রতিবেদন দিয়েছে, সে অনুযায়ী তারা একটি প্রস্তাব দিয়েছে। সে অনুযায়ী টেন্ডার হয়েছে। কোনো ব্যত্যয় হয়নি।’ তবে ডিপিপি সংশোধনের প্রসঙ্গটি তিনি এড়িয়ে যান।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
২ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
২ দিন আগে