Ajker Patrika

প্রযুক্তিতে দক্ষ শিক্ষকের অভাব

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২১, ১২: ২৯
প্রযুক্তিতে দক্ষ শিক্ষকের অভাব

বানিয়াচং উপজেলার নতল্লাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল ক্লাসরুমের জন্য ল্যাপটপ, প্রজেক্টর থাকলেও নেই তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ শিক্ষক। যে কারণে অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে স্কুলের জন্য বরাদ্দ ল্যাপটপ ও প্রজেক্টরসহ যাবতীয় যন্ত্রাংশ। নতল্লাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এমন চিত্র হবিগঞ্জ জেলার সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এতে তথ্যপ্রযুক্তিতে পিছিয়ে যাচ্ছে হবিগঞ্জের প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা।

প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিশুদের তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে পরিচয় ও দক্ষ করে তুলতেই সরকার প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ল্যাপটপ, প্রজেক্টর দিয়েছে। ২০১৫ থেকে ’১৮ সালের মধ্যে পিইডিপি-৩ প্রকল্পের আওতায় এই প্রজেক্টরগুলো বিতরণ করা হয়।

একইভাবে শিক্ষার্থীদের তথ্য প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ করে তুলতে প্রতিটি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে কম্পিউটার ল্যাব ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু দক্ষ কম্পিউটার শিক্ষক, পর্যাপ্ত কম্পিউটার না থাকাসহ বিভিন্ন কারণে শিক্ষার্থীদের কোনো কাজে আসছে না।

তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে তথ্যপ্রযুক্তি সমৃদ্ধ তারুণ্য গড়তে হবে। এর জন্য প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিশুদের তথ্যপ্রযুক্তিতে সম্পর্কে সম্যক ধারণা দিতে হবে।

নবীগঞ্জ উপজেলার মুক্তাহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুবিনয় দাস বলেন, ‘বর্তমানে যে প্রজেক্টর রয়েছে, তা করোনার পর থেকে ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ করোনার পর থেকে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ায় এতটাই অমনোযোগী হয়েছে যে, তাদের আগের জায়গায় ফিরিয়ে নিতে কমপক্ষে ৪ বছর সময় লাগবে।’

স্কুলে প্রজেক্টর আছে কি না জানতে চাইলে নবীগঞ্জ উপজেলার গন্ধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহিনা আক্তার চৌধুরী পান্না বলেন, ‘আমাদের স্কুলে প্রজেক্টর নেই।’

দিনারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নিজাম উদ্দিন তালুকদার জানান, ‘বর্তমানে স্কুলে শিক্ষার্থীসংখ্যা ১ হাজার ৫২৬ জন। শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবে কম্পিউটার রয়েছে ২০টি। এর মধ্যে সচল অবস্থায় আছে ১৪টি। বাকি ৬টি বিভিন্ন সমস্যায় অচল অবস্থায় রয়েছে।’

নবীগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মো. সফর আলী বলেন, ‘কলেজে রাসেল ডিজিটাল ল্যাব চালু রয়েছে। বর্তমানে কলেজে শিক্ষার্থী আছেন প্রায় ৪ হাজার। কিন্তু ল্যাপটপ রয়েছে মাত্র ১৪টি। এত অল্প সংখ্যক ল্যাপটপ দিয়ে শিক্ষার্থীদের তথ্যপ্রযুক্তি ক্লাস নিতে নানা সমস্যা দেখা দেয়। তবে প্রতিদিনই শিক্ষার্থীদের ল্যাপটপ ব্যবহার করতে দেওয়া হচ্ছে।’

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ রুহুল্লাহ বলেন, ‘সরকার শিক্ষার্থীদের তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। সরকারি ও এমপিওভুক্ত স্কুল রয়েছে ১৭০টি। বর্তমানে ৪৫টি স্কুলে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব চালু রয়েছে। আগামী বছর আরও ৪৮টি স্কুলে ল্যাব চালু হবে। এ ছাড়া বর্তমানে আইএলসি ল্যাব রয়েছে ১১টি।’

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘জেলায় মোট ১ হাজার ৫২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। এর মধ্যে ৯৩৩টি স্কুলে প্রজেক্টর রয়েছে, যা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকদের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। আগামী বছরে সব স্কুলে প্রজেক্টর দেওয়া হবে।’

সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি বিভাগের পরিচালক ডা. মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমান বিশ্ব প্রযুক্তিনির্ভর। তাই ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে তথ্যপ্রযুক্তি সমৃদ্ধ তারুণ্য গড়তে হবে। এর জন্য প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিশুদের তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ করে তুলতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা এখনো তথ্যপ্রযুক্তিতে অনেক পিছিয়ে আছে। শিক্ষার্থীদের যত বেশি প্রযুক্তি সমৃদ্ধ করে গড়ে তোলা হবে, তত বেশি ডিজিটাল বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যাবে দেশ। পাশাপাশি তরুণেরা চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেরাই কিছু করতে পারবে। এতে বেকারত্বও কমবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মাসুদ আহমেদের সব পদ স্থগিত

টিআইএন নেওয়ার পরে কিন্তু ঘুমাইতে পারবেন না: এনবিআর চেয়ারম্যান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত