গাজীপুর প্রতিনিধি
মহান মুক্তিযুদ্ধের সূচনালগ্নে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল তৎকালীন জয়দেবপুর তথা গাজীপুরের বীর জনতা। সেদিন সশস্ত্র প্রতিরোধযুদ্ধে শাহাদাতবরণ করেন অনেকে। প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধের গৌরবময় ইতিহাস সৃষ্টিকারী সেদিনের মহানায়কদের স্মরণে নির্মিত দেশের প্রথম মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ভাস্কর্য ‘জাগ্রত চৌরঙ্গী’।
ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তায় সড়কদ্বীপে মহান মুক্তিযুদ্ধের অমর স্মৃতি নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে ভাস্কর্যটি; কিন্তু অযত্ন আর অবহেলায় সেই জাগ্রত চৌরঙ্গী আজ অরক্ষিত।
জানা যায়, ‘জয়দেবপুরের পথ ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো’ স্লোগানে ১৯৭১-এর ১৯ মার্চ প্রথম পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন গাজীপুরের মানুষ। পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে দেশে এটিই ছিল মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধযুদ্ধ। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণের পর জয়দেবপুরের দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের বাঙালি সেনাদের অস্ত্র জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয় ঢাকা ব্রিগেড সদর দপ্তর; কিন্তু মুক্তিকামী বাঙালি সেনারা অস্ত্র জমা না দিয়ে চান্দনা চৌরাস্তা থেকে জয়দেবপুর পর্যন্ত পাকিস্তানি বাহিনীকে বাধা দিতে সড়ক অবরোধ করেন। বাঙালি সেনাদের সঙ্গে যোগ দেয় জয়দেবপুরের সাহসী সাধারণ জনতা। পাকিস্তানি সেনার গুলিতে শহীদ হন হুরমত, নিয়ামত, কানু মিয়া ও মনু খলিফা। আহত হন শাহজাহান, সন্তোষসহ অনেকে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, যুদ্ধে শহীদ ও আহত বীরদের অসামান্য আত্মত্যাগ স্মরণে দেশের খ্যাতিমান ভাস্কর আবদুর রাজ্জাক তৈরি করেছিলেন এই দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যকর্ম। গাজীপুরের দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অধিনায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল আমীন আহম্মেদ চৌধুরী বীর বিক্রম ভাস্কর্যটি নির্মাণের উদ্যোগ নেন। জাগ্রত চৌরঙ্গীর প্রকৌশলী ছিলেন আবদুর রশিদ। তাঁর সহকারী ছিলেন এম আহমদ ও আবদুল হক। নির্মাণ তত্ত্বাবধানে ছিলেন আসলুল হক ও আবদুল হক। ব্যবস্থাপনায় ছিলেন সুবেদার খন্দকার মতিউর রহমান বীর বিক্রম। আলোকসজ্জার দায়িত্বে ছিল গাজীপুর ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড। ১৯৭২ সালে ভাস্কর্যটির নির্মাণকাজ শুরু হয়ে শেষ হয় ১৯৭৩ সালের সেপ্টেম্বরে।
বেদিসহ জাগ্রত চৌরঙ্গীর উচ্চতা ৪২ ফুট ২ ইঞ্চি। ২৪ ফুট ৫ ইঞ্চি বেদির ওপর এটি স্থাপিত। উদোম গায়ে পেশিবহুল এক যুবক খালি পায়ে মাথা উঁচু করে সগৌরবে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁর ডান হাতে তাজা গ্রেনেড আর বাম হাতে রাইফেল। ভাস্কর্যটির দুপাশের ফলকে ১৬ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ৩ নম্বর সেক্টরের ১০০ এবং ১১ নম্বর সেক্টরের ১০৭ জন শহীদ সেনা ও মুক্তিযোদ্ধার নাম খোদাই করে লেখা আছে।
স্থানীয়রা জানান, একসময় এই ‘জাগ্রত চৌরঙ্গী’ ছিল দেশের মানুষের কাছে গাজীপুরের পরিচায়ক। মহাসড়কের মাঝখানে হওয়ায় দৃষ্টিনন্দন এ ভাস্কর্য অনেক দূর থেকে চোখে পড়ে; কিন্তু কালের আবর্তে জাগ্রত চৌরঙ্গী আজ অযত্ন-অবহেলায় পড়ে রয়েছে। এর কোনো কোনো অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, চলমান বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নের কারণে জাগ্রত চৌরঙ্গীর চারপাশের নিরাপত্তাবেষ্টনী সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ভারী যানবাহন কাছ ঘেঁষে চলাচল করছে। আশপাশে বিআরটি প্রকল্পের যন্ত্রপাতি ও মালামাল রাখা হয়েছে। যানবাহনের ধাক্কায় যেকোনো সময় ভাস্কর্যটি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
১৯ মার্চের যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস ছাত্তার বলেন, ‘আগে অনেক দূর থেকেই জাগ্রত চৌরঙ্গী দেখা যেত। শিশুসন্তানদের ভাস্কর্যটি দেখিয়ে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাসংগ্রামের ইতিহাস সম্পর্কে জানাতেন অভিভাবকেরা।’
গাজীপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার কাজী মোজাম্মেল হক বলেন, ‘বিআরটি প্রকল্পের কারণে জাগ্রত চৌরঙ্গী ঢাকা পড়ে যাচ্ছে। এটি আর দূর থেকে তেমন দৃশ্যমান নয়। যথাযথভাবে এটির রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন।’
কথা হলে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী ও ১৯ মার্চের প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধযুদ্ধের সংগঠক আ ক ম মোজ্জাম্মেল হক বলেন, ‘জাগ্রত চৌরঙ্গী আমাদের গৌরবের সাক্ষী। বিআরটি প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষ হলে গুরুত্বপূর্ণ এ স্থাপনা আরও বড় আকারে একই স্থানে স্থাপন করা হবে, যাতে আরও দূর থেকে দেখা যায়। এখন যেটি আছে, সেটি সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মহান মুক্তিযুদ্ধের সূচনালগ্নে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল তৎকালীন জয়দেবপুর তথা গাজীপুরের বীর জনতা। সেদিন সশস্ত্র প্রতিরোধযুদ্ধে শাহাদাতবরণ করেন অনেকে। প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধের গৌরবময় ইতিহাস সৃষ্টিকারী সেদিনের মহানায়কদের স্মরণে নির্মিত দেশের প্রথম মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ভাস্কর্য ‘জাগ্রত চৌরঙ্গী’।
ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তায় সড়কদ্বীপে মহান মুক্তিযুদ্ধের অমর স্মৃতি নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে ভাস্কর্যটি; কিন্তু অযত্ন আর অবহেলায় সেই জাগ্রত চৌরঙ্গী আজ অরক্ষিত।
জানা যায়, ‘জয়দেবপুরের পথ ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো’ স্লোগানে ১৯৭১-এর ১৯ মার্চ প্রথম পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন গাজীপুরের মানুষ। পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে দেশে এটিই ছিল মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধযুদ্ধ। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণের পর জয়দেবপুরের দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের বাঙালি সেনাদের অস্ত্র জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয় ঢাকা ব্রিগেড সদর দপ্তর; কিন্তু মুক্তিকামী বাঙালি সেনারা অস্ত্র জমা না দিয়ে চান্দনা চৌরাস্তা থেকে জয়দেবপুর পর্যন্ত পাকিস্তানি বাহিনীকে বাধা দিতে সড়ক অবরোধ করেন। বাঙালি সেনাদের সঙ্গে যোগ দেয় জয়দেবপুরের সাহসী সাধারণ জনতা। পাকিস্তানি সেনার গুলিতে শহীদ হন হুরমত, নিয়ামত, কানু মিয়া ও মনু খলিফা। আহত হন শাহজাহান, সন্তোষসহ অনেকে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, যুদ্ধে শহীদ ও আহত বীরদের অসামান্য আত্মত্যাগ স্মরণে দেশের খ্যাতিমান ভাস্কর আবদুর রাজ্জাক তৈরি করেছিলেন এই দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যকর্ম। গাজীপুরের দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অধিনায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল আমীন আহম্মেদ চৌধুরী বীর বিক্রম ভাস্কর্যটি নির্মাণের উদ্যোগ নেন। জাগ্রত চৌরঙ্গীর প্রকৌশলী ছিলেন আবদুর রশিদ। তাঁর সহকারী ছিলেন এম আহমদ ও আবদুল হক। নির্মাণ তত্ত্বাবধানে ছিলেন আসলুল হক ও আবদুল হক। ব্যবস্থাপনায় ছিলেন সুবেদার খন্দকার মতিউর রহমান বীর বিক্রম। আলোকসজ্জার দায়িত্বে ছিল গাজীপুর ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড। ১৯৭২ সালে ভাস্কর্যটির নির্মাণকাজ শুরু হয়ে শেষ হয় ১৯৭৩ সালের সেপ্টেম্বরে।
বেদিসহ জাগ্রত চৌরঙ্গীর উচ্চতা ৪২ ফুট ২ ইঞ্চি। ২৪ ফুট ৫ ইঞ্চি বেদির ওপর এটি স্থাপিত। উদোম গায়ে পেশিবহুল এক যুবক খালি পায়ে মাথা উঁচু করে সগৌরবে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁর ডান হাতে তাজা গ্রেনেড আর বাম হাতে রাইফেল। ভাস্কর্যটির দুপাশের ফলকে ১৬ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ৩ নম্বর সেক্টরের ১০০ এবং ১১ নম্বর সেক্টরের ১০৭ জন শহীদ সেনা ও মুক্তিযোদ্ধার নাম খোদাই করে লেখা আছে।
স্থানীয়রা জানান, একসময় এই ‘জাগ্রত চৌরঙ্গী’ ছিল দেশের মানুষের কাছে গাজীপুরের পরিচায়ক। মহাসড়কের মাঝখানে হওয়ায় দৃষ্টিনন্দন এ ভাস্কর্য অনেক দূর থেকে চোখে পড়ে; কিন্তু কালের আবর্তে জাগ্রত চৌরঙ্গী আজ অযত্ন-অবহেলায় পড়ে রয়েছে। এর কোনো কোনো অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, চলমান বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নের কারণে জাগ্রত চৌরঙ্গীর চারপাশের নিরাপত্তাবেষ্টনী সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ভারী যানবাহন কাছ ঘেঁষে চলাচল করছে। আশপাশে বিআরটি প্রকল্পের যন্ত্রপাতি ও মালামাল রাখা হয়েছে। যানবাহনের ধাক্কায় যেকোনো সময় ভাস্কর্যটি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
১৯ মার্চের যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস ছাত্তার বলেন, ‘আগে অনেক দূর থেকেই জাগ্রত চৌরঙ্গী দেখা যেত। শিশুসন্তানদের ভাস্কর্যটি দেখিয়ে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাসংগ্রামের ইতিহাস সম্পর্কে জানাতেন অভিভাবকেরা।’
গাজীপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার কাজী মোজাম্মেল হক বলেন, ‘বিআরটি প্রকল্পের কারণে জাগ্রত চৌরঙ্গী ঢাকা পড়ে যাচ্ছে। এটি আর দূর থেকে তেমন দৃশ্যমান নয়। যথাযথভাবে এটির রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন।’
কথা হলে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী ও ১৯ মার্চের প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধযুদ্ধের সংগঠক আ ক ম মোজ্জাম্মেল হক বলেন, ‘জাগ্রত চৌরঙ্গী আমাদের গৌরবের সাক্ষী। বিআরটি প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষ হলে গুরুত্বপূর্ণ এ স্থাপনা আরও বড় আকারে একই স্থানে স্থাপন করা হবে, যাতে আরও দূর থেকে দেখা যায়। এখন যেটি আছে, সেটি সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে