জাহীদ রেজা নূর
গ্রিন রোডের বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি হাসপাতালে গিয়েছিলাম হঠাৎ করেই। একটি ছোট শিশুকে নিয়ে এক মা এসেছেন অনেক দূর থেকে। ওর থ্যালাসেমিয়া রোগ আছে। তাই রক্ত দিতে হবে। এ ধরনের রোগীদের রক্তে লোহিত কণিকা কমে গেলেই রক্ত নেওয়ার দরকার হয়। এই শিশুকে রক্ত দিতে হয় ২৫ দিন পর পর। ওর নাম তুয়া।
তুয়াকে যেখানে রাখা হলো, সেখানে অভিভাবকদেরও রোগীর পাশে থাকতে দেওয়া হয়। হবে না-ইবা কেন। এত ছোট বাচ্চার হাতে সুই ফুটিয়ে রক্ত দেওয়া হয়, ওকে দেখে রাখার তো ব্যাপার আছে। এই ঘরে চারটি শিশুকে রক্ত দেওয়া হচ্ছিল।
পাশের একটা বড় ঘরে অনেকগুলো বিছানা পাতা। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। সেই বিছানাগুলোয় শুয়ে কেউ রক্ত গ্রহণ করছে, কেউ আছে রক্ত নেওয়ার অপেক্ষায়। সেখানেই এক ফুটফুটে শিশু আমাকে অবাক করে দিল। ওর নাম প্রিয়ন্তী। হেমায়েতপুর থেকে এসেছে। প্রতি মাসেই আসে, তাই ওকে হাসপাতালের সবাই চেনে। বয়স কত আর হবে ১০ বা ১১। কমও হতে পারে।
প্রিয়ন্তীকে চেনার একটা বড় কারণ হলো, ও ভালো গান গায়। খাটের ওপর টাঙানো রক্তের ব্যাগ, সেখান থেকে একটা পাইপ চলে গেছে প্রিয়ন্তীর হাতে। রক্ত নিতে নিতেই ও গাইল গান:
‘ওরে গৃহবাসী, খোল দ্বার খোল, লাগল যে দোল
স্থলে জলে বনতলে লাগল যে দোল, দ্বার খোল দ্বার খোল…’
থ্যালাসেমিয়া সমিতি হাসপাতালের নির্বাহী পরিচালক ডা. এ কে এম একরামুল হোসেন ছিলেন পাশে। তিনি বলছিলেন তাঁদের চলার পথটির কথা। থ্যালাসেমিয়া রোগ হলে লোহিত রক্তকণিকার সংকট দেখা দেয় দেহে। সময়মতো রক্ত না পেলে রোগীর জীবনসংকট শুরু হয়। রোগটির ব্যাপারে সচেতনতা থাকলে তা প্রতিরোধ করা যায়। এ জন্য বিয়ের আগে এইচবি ইলেক্ট্রোফোরেসিস নামের বিশেষ রক্ত পরীক্ষার মধ্যমে জেনে নেওয়া দরকার, কেউ এই রোগের বাহক কি না।
প্রিয়ন্তীর দিকে তাকিয়ে ডা. একরামুল বললেন, ‘নিয়মিত রক্ত পরিসঞ্চালন আর ওষুধই একজন রোগীকে বাঁচিয়ে রাখে। কিন্তু এটা খুব ব্যয়বহুল। যে রোগীরা আমাদের কাছে আসে, তাদের ৮০ ভাগের পক্ষেই এই খরচ বহন করা সম্ভব হয় না।’
যারা এখানে রক্ত নিতে এসেছে, তাদের অনেকেই বিনা পয়সায় চিকিৎসা পাচ্ছে। হাসপাতালে একটি ঘর আছে, যেখানে এসে যে কেউ রক্ত দান করতে পারে। কিন্তু চাহিদার তুলনায় কম রক্ত জোগাড় করা যায়। ফলে অনেককেই বাইরে থেকে রক্ত কিনে আনতে হয়।
এই হাসপাতাল অনেক দরিদ্র থ্যালাসেমিয়া রোগীর সহায়। কিন্তু হাসপাতাল চালাতে হলে অর্থের প্রয়োজন। রক্তের প্রয়োজন। হাসপাতাল-সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকটি মানুষের সঙ্গে কথা বলার সময় একটা আক্ষেপ দেখতে পেলাম তাঁদের। ‘ইশ্! যদি অর্থের জোগান থাকত, যদি রক্তের জোগান থাকত। তাহলে আরও অনেক রোগীর মুখে হাসি ফোটানো যেত!’
এখন তো ঈদ এসে গেছে। অনেকেই জাকাত দিচ্ছেন। এ রকম প্রতিষ্ঠানে জাকাত দিলে অনেক রোগীর জীবনে নেমে আসতে পারে সুখ। কোনো সংকোচ না করেই তাঁদের কাছে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর চাইলাম। তাঁরা দিলেন। যে কেউ থ্যালাসেমিয়া রোগীদের জন্য বাড়িয়ে দিতে পারেন সাহায্যের হাত।
বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি
হিসাব নং: ১১০.১১০. ০০২৪৪১৬
ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড, ধানমন্ডি, ঢাকা।
গ্রিন রোডের বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি হাসপাতালে গিয়েছিলাম হঠাৎ করেই। একটি ছোট শিশুকে নিয়ে এক মা এসেছেন অনেক দূর থেকে। ওর থ্যালাসেমিয়া রোগ আছে। তাই রক্ত দিতে হবে। এ ধরনের রোগীদের রক্তে লোহিত কণিকা কমে গেলেই রক্ত নেওয়ার দরকার হয়। এই শিশুকে রক্ত দিতে হয় ২৫ দিন পর পর। ওর নাম তুয়া।
তুয়াকে যেখানে রাখা হলো, সেখানে অভিভাবকদেরও রোগীর পাশে থাকতে দেওয়া হয়। হবে না-ইবা কেন। এত ছোট বাচ্চার হাতে সুই ফুটিয়ে রক্ত দেওয়া হয়, ওকে দেখে রাখার তো ব্যাপার আছে। এই ঘরে চারটি শিশুকে রক্ত দেওয়া হচ্ছিল।
পাশের একটা বড় ঘরে অনেকগুলো বিছানা পাতা। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। সেই বিছানাগুলোয় শুয়ে কেউ রক্ত গ্রহণ করছে, কেউ আছে রক্ত নেওয়ার অপেক্ষায়। সেখানেই এক ফুটফুটে শিশু আমাকে অবাক করে দিল। ওর নাম প্রিয়ন্তী। হেমায়েতপুর থেকে এসেছে। প্রতি মাসেই আসে, তাই ওকে হাসপাতালের সবাই চেনে। বয়স কত আর হবে ১০ বা ১১। কমও হতে পারে।
প্রিয়ন্তীকে চেনার একটা বড় কারণ হলো, ও ভালো গান গায়। খাটের ওপর টাঙানো রক্তের ব্যাগ, সেখান থেকে একটা পাইপ চলে গেছে প্রিয়ন্তীর হাতে। রক্ত নিতে নিতেই ও গাইল গান:
‘ওরে গৃহবাসী, খোল দ্বার খোল, লাগল যে দোল
স্থলে জলে বনতলে লাগল যে দোল, দ্বার খোল দ্বার খোল…’
থ্যালাসেমিয়া সমিতি হাসপাতালের নির্বাহী পরিচালক ডা. এ কে এম একরামুল হোসেন ছিলেন পাশে। তিনি বলছিলেন তাঁদের চলার পথটির কথা। থ্যালাসেমিয়া রোগ হলে লোহিত রক্তকণিকার সংকট দেখা দেয় দেহে। সময়মতো রক্ত না পেলে রোগীর জীবনসংকট শুরু হয়। রোগটির ব্যাপারে সচেতনতা থাকলে তা প্রতিরোধ করা যায়। এ জন্য বিয়ের আগে এইচবি ইলেক্ট্রোফোরেসিস নামের বিশেষ রক্ত পরীক্ষার মধ্যমে জেনে নেওয়া দরকার, কেউ এই রোগের বাহক কি না।
প্রিয়ন্তীর দিকে তাকিয়ে ডা. একরামুল বললেন, ‘নিয়মিত রক্ত পরিসঞ্চালন আর ওষুধই একজন রোগীকে বাঁচিয়ে রাখে। কিন্তু এটা খুব ব্যয়বহুল। যে রোগীরা আমাদের কাছে আসে, তাদের ৮০ ভাগের পক্ষেই এই খরচ বহন করা সম্ভব হয় না।’
যারা এখানে রক্ত নিতে এসেছে, তাদের অনেকেই বিনা পয়সায় চিকিৎসা পাচ্ছে। হাসপাতালে একটি ঘর আছে, যেখানে এসে যে কেউ রক্ত দান করতে পারে। কিন্তু চাহিদার তুলনায় কম রক্ত জোগাড় করা যায়। ফলে অনেককেই বাইরে থেকে রক্ত কিনে আনতে হয়।
এই হাসপাতাল অনেক দরিদ্র থ্যালাসেমিয়া রোগীর সহায়। কিন্তু হাসপাতাল চালাতে হলে অর্থের প্রয়োজন। রক্তের প্রয়োজন। হাসপাতাল-সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকটি মানুষের সঙ্গে কথা বলার সময় একটা আক্ষেপ দেখতে পেলাম তাঁদের। ‘ইশ্! যদি অর্থের জোগান থাকত, যদি রক্তের জোগান থাকত। তাহলে আরও অনেক রোগীর মুখে হাসি ফোটানো যেত!’
এখন তো ঈদ এসে গেছে। অনেকেই জাকাত দিচ্ছেন। এ রকম প্রতিষ্ঠানে জাকাত দিলে অনেক রোগীর জীবনে নেমে আসতে পারে সুখ। কোনো সংকোচ না করেই তাঁদের কাছে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর চাইলাম। তাঁরা দিলেন। যে কেউ থ্যালাসেমিয়া রোগীদের জন্য বাড়িয়ে দিতে পারেন সাহায্যের হাত।
বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি
হিসাব নং: ১১০.১১০. ০০২৪৪১৬
ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড, ধানমন্ডি, ঢাকা।
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২ দিন আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৬ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৬ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৬ দিন আগে