Ajker Patrika

১০২ টাকার চিনি ১২০ টাকা

আয়নাল হোসেন, ঢাকা
আপডেট : ২৩ নভেম্বর ২০২২, ১৩: ৪৫
১০২ টাকার চিনি ১২০ টাকা

দেশের আমদানিকারক ও পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো চিনির দাম কেজিপ্রতি ১২ টাকা বাড়ানোর পরও বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি। এখনো প্রতি কেজি চিনি নির্ধারিত দামের চেয়ে অতিরিক্ত ১৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, নির্ধারিত দামে সরবরাহ দেওয়া না হলে দাম কমবে না। 
রাজধানীর তোপখানা রোডের ব্রাইট ডিপার্টমেন্ট স্টোর অ্যান্ড মেডিসিন দোকানে প্রতি কেজি খোলা চিনির দাম ১৩০ টাকা হাঁকান আরিফ হোসেন। চিনির দাম এত বেশি কেন? প্রশ্ন করতেই তিনি বলেন, ‘সরকার দাম বাড়াইয়া দিছে।’ এখন খুচরা চিনির দাম সরকার কত করেছে? এই প্রশ্নের জবাব নেই তাঁর কাছে। এ সময় তিনি বলেন, ‘আমরা চড়া দামে কেনা চিনি তো আর লোকসান দিয়ে বেচুম না।’

রাজধানীর রামপুরা বাজারের মেসার্স হালিম এন্টারপ্রাইজের ব্যবসায়ী আল-আমীন প্রতি কেজি খোলা চিনির দাম ১২০ টাকা হাঁকান। কেন চিনির দাম এত বেশি? জানতে চাইলে তাঁর সরাসরি কথা, ‘আমরা যেমন কিনুম, কিছু লাভ কইরা তেমন দামেই বেচুম। সরকারি দামে চিনি পাওয়া না গেলে লোকসান দিয়ে তো আমি বেচুম না।’

পাশের দোকানি আজহার মিয়া বলেন, ‘৫০ কেজির এক বস্তা চিনি ৫ হাজার ৫০০ টাকায় কিনেছি। কেজি ১২০ টাকার নিচে বেচলে লাভ থাকে না।’ সরকারি দামে চিনি সরবরাহ না দিলে দাম কমানো সম্ভব নয় বলে জানান তিনি। বনশ্রী ৫ নম্বর সড়কের এ ব্লকের মেসার্স সূচনা জেনারেল স্টোরের ব্যবসায়ী মোজাম্মেল হোসেন জানান, তিনি আল্লারদান স্টোর থেকে এক বস্তা চিনি ৫ হাজার ৪০০ টাকায় কিনেছেন। কিন্তু দোকানি অন্যান্য সদাইয়ের দাম উল্লেখ করলেও চিনির দাম উল্লেখ করেননি। মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘আমরা কমে কিনতে পারলে কমে বেচতে পারুম।’

খুচরা চিনি ব্যবসায়ীরা জানান, ভ্যানে করে কিছু লোক বস্তাভর্তি চিনি বিক্রি করছেন। তাঁদের কাছ থেকে চিনি কিনে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে বাজারে প্যাকেটজাত চিনির সরবরাহ নেই দেড় মাসের অধিক সময় ধরে। বাজারে কবে নাগাদ চিনি সরবরাহ স্বাভাবিক হবে, তা জানতে চাইলে সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিত সাহা আজকের পত্রিকাকে বলেন, তাঁরা চাহিদা অনুযায়ী চিনি উৎপাদন করতে পারছেন না। এ কারণে সরবরাহ স্বাভাবিক হচ্ছে না। গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হলে চিনির সংকট কেটে যাবে।

রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের বাজার তদারকির প্রতিবেদন অনুযায়ী গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে খুচরা পর্যায়ে চিনি বিক্রি হয়েছে ১১০ থেকে ১১৫ টাকায়, যা এক মাস আগে ছিল ৯০-১০০ টাকা। এক মাসের ব্যবধানে দাম বেড়েছে ১৮ দশমিক ৪২ শতাংশ। আর এক বছর আগে ছিল ৭৫-৮০ টাকা। এ সময়ের ব্যবধানে দাম বেড়েছে ৪৫ দশমিক ১৬ শতাংশ।

নতুন দাম অনুযায়ী খোলা চিনি ১০২ টাকা ও প্যাকেটজাত ১০৭ টাকা করে বিজ্ঞপ্তি দেয় দেশের চিনি আমদানিকারক ও পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। তাদের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার থেকে নতুন দামে চিনি ও ভোজ্যতেল সরবরাহ দেওয়ার কথা। বাজারে ভোজ্যতেলের সরবরাহ দেওয়া হলেও চিনি দেওয়া হচ্ছে না। কারণ, বাজারে চিনির দাম আগেই অস্বাভাবিক বেড়েছে।

আন্তর্জাতিক নিউজপোর্টাল ইনডেক্স মুন্ডি ডটকম সূত্রে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক বাজারে গত মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চিনি ও ভোজ্যতেলের দাম কমতির দিকে। তবে সয়াবিন তেলের দাম জুলাই মাসে সবচেয়ে বেশি কমেছিল। পরে সামান্য বেড়েছে। গত মে মাসে প্রতি কেজি চিনির দাম ছিল ৪৩ সেন্ট, যা কমতে কমতে সেপ্টেম্বরে ৩৯ সেন্টে বিক্রি হয়। আর সয়াবিন তেল গত মে মাসে ছিল ১ হাজার ৯৬২ ডলার টন, যা সেপ্টেম্বরে কমে হয় ১ হাজার ৫৪৮ ডলার। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কক্সবাজারে বিমানঘাঁটিতে গুলি: যা বলছে আইএসপিআর, নিহতের মা-বাবা ও স্থানীয়রা

কক্সবাজার বিমান ঘাঁটিতে দুর্বৃত্তদের হামলা, সংঘর্ষে নিহত ১

ভারতের কাছে হারে পাকিস্তান টিম ম্যানেজমেন্টকে ধুয়ে দিলেন শোয়েব

নতুন রাজনৈতিক দলের নাম ও প্রতীক নিয়ে কী প্রস্তাব এল, জানালেন আখতার

মালিককে ঘরে আটকে রেখে খামারে পেট্রল ঢেলে আগুন, পুড়ল ৮ গরু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত