আয়ের ভরসা হারিয়ে বিপাকে পরিবার

ঝালকাঠি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৪ জুলাই ২০২৪, ১৩: ৫৯

গাড়িচালক কামাল হোসেনের আয়ে চলত পরিবার। তা-ও পরিবারকে সঙ্গে রাখতে পারেননি। পরিবারকে এলাকায় রেখে ঢাকায় চাকরি করতেন কামাল। সুযোগ পেলে যেতেন পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে। সেই কামাল ২০ জুলাই সকালে রাজধানীর বাড্ডা এলাকার বাসার নিচে নেমেছিলেন নাশতা করতে। আর ফিরতে পারেননি। দুই পক্ষের গোলাগুলির মধ্যে পড়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন তিনি। তাঁকে হারিয়ে বিপাকে পড়েছে তাঁর পরিবার। 

কামাল হোসেন বেসরকারি টিভি ‘চ্যানেল আই’-এর গাড়িচালক। বাড়ি ঝালকাঠি সদর উপজেলার বিনয়কাঠি ইউনিয়নের বাকলিয়া এলাকায়। স্ত্রী, দুই ছেলে ও তিন বছরের একটি মেয়ে রয়েছে তাঁর।

কামালের বড় ছেলে সামিউল ইসলাম ঝালকাঠি সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। বাবাকে হারিয়ে পাগলপ্রায় সামিউল গতকাল বলছিল, ‘আমার বাবা ছিল সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তাঁর আয়ে আমাদের সংসার চলত। এখন আমাদের বাবা নেই, আমাদের খরচ চলবে কীভাবে আর আমাদের আদর-ভালোবাসাই বা কে দেবে। আমরা অসহায় হয়ে গেলাম।’ 

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার দাবিতে আন্দোলনকারীদের ডাকা কমপ্লিট শাটডাউনের পর ১৬ জুলাই সারা দেশে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এরপর ধীরে ধীরে পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেলে তা সামাল দিতে নামানো হয় বিজিবি ও সেনাসদস্যদের। গত শনিবার সকালে বাড্ডার বাসার নিচে নেমে আন্দোলন সমর্থকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গোলাগুলির মধ্যে পড়ে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন কামাল।

সেদিন সন্ধ্যায় কামালের লাশ নেওয়া হয় ঝালকাঠি সদর উপজেলার আগড়বাড়ি এলাকায় তাঁর শ্বশুর বাড়িতে। পর দিন সেখানেই তাঁকে দাফন করা হয়।

কামাল হোসেনের স্ত্রী সাদিয়া বেগম রানু বলেন, ‘আমার স্বামী গুলিতে নিহত হয়েছেন। আমরা নিঃস্ব হয়ে গেলাম। আমার ছেলেমেয়েদের দেখাশোনার জন্য আর কেউ রইল না। মেয়েটি বারবার বাবা বাবা বলে কান্না করছে। তাঁর আয়ে আমাদের সংসার চলত। ছেলেমেয়েদের নিয়ে ঝালকাঠি বাসাভাড়া নিয়ে থাকতাম। এখন আমাদের খরচ চালানোর মতো আর কেউ থাকল না। আমরা সরকারের কাছে সহযোগিতা চাই; যাতে আমি ছেলেমেয়েদের নিয়ে বেঁচে থাকতে পারি।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত