চলনবিলে পানি বাড়ায় ডিঙির কদর, হাটে জমেছে বিক্রি

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৯ জুলাই ২০২২, ০৬: ৪০
আপডেট : ০৯ জুলাই ২০২২, ১৪: ১১

বৃষ্টি ও উজান থেকে আসা পানিতে নাটোরের গুরুদাসপুরের আত্রাই ও নন্দকুজা নদীর পানি আশঙ্কাজনক বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পানি চলনবিলে প্রবেশ করায় সেখানেও প্রতিদিন প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। এতে চলনবিলের মানুষের পারাপার ও মাছ ধরার প্রধান মাধ্যম ডিঙির চাহিদা বেড়েছে। ডিঙি তৈরি ও বেচাকেনার ধুম পড়েছে।

গতকাল শুক্রবার সকালে চলনবিলের চাঁচকৈড় নৌকার হাট ঘুরে দেখা গেছে, নৌকা তৈরির কারিগরেরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। হাটের দক্ষিণাংশে ২৫-৩০টি কারখানায় চলছে ডিঙি তৈরির কাজ। কারখানার সামনে একটির ওপর আরেকটি উঠিয়ে বিক্রির জন্য সাজিয়ে রাখা হয়েছে। নৌকা বেচাকেনায় নিয়োজিত ব্যবসায়ী, মিস্ত্রি ও ক্রেতার হাঁকডাকে মুখরিত নৌকার হাট। বর্ষা মৌসুমে জেলেদের মাছ ধরার প্রধান উপকরণ এ নৌকা তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন অনেক কাঠমিস্ত্রি।

জানা গেছে, সপ্তাহের প্রতিদিন চাঁচকৈড় হাটে বিক্রি হয় শত শত নৌকা। চাঁচকৈড় হাটে কয়েক উপজেলার মানুষ নৌকা কিনতে আসে। গুরুদাসপুরের পাশের উপজেলা তাড়াশ, সিংড়া, বড়াইগ্রাম, চাটমোহর এলাকার মানুষ চাঁচকৈড় হাটে ডিঙি কিনতে আসেন। তাই চলনবিলের বিখ্যাত নৌকার হাট বলা হয় চাঁচকৈড় হাটকে।

তাড়াশ উপজেলার মাগুরা গ্রামের আব্দুল আজিজ বলেন, তিনি বিলপাড়ের কৃষক। বর্ষা মৌসুমে তাঁর হাতে কাজ থাকে না। আবার এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাতায়াত করতে হয় নৌকায়। মাছ ধরে বাড়তি আয় ও পারাপারের জন্যই তিনি ডিঙি নৌকা কিনতে এসেছেন। তবে গত বছরের তুলনায় এবার নৌকার দাম বেশি।

চাঁচকৈড় হাটের ডিঙি তৈরির কারিগর মইনুল মৃধা বলেন, বর্ষা মৌসুমে ডিঙির তৈরি করে চলে তাঁদের সংসার। কাঠের প্রকারভেদে নৌকার দাম কম-বেশি হয়ে থাকে। ১২-১৫ হাত নৌকা তৈরিতে খরচ হয় সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা। বিক্রি করা হচ্ছে ৫ হাজার টাকায়। ১০-১২ হাত নৌকা তৈরি করতে খরচ হয় ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকা। বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকায়।

নৌকা ব্যবসায়ী ফারুক ফকির বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো চলনবিলেও আগাম পানি এসেছে। এতে নৌকার চাহিদা বেড়েছে কয়েক গুণ। গত বছরের তুলনায় শ্রমিক, কাঠ ও নৌকা তৈরির উপকরণের দাম বেশি। এ কারণে নৌকাও বাড়তি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা।

নৌকা হাটের ইজারাদার রান্টু বলেন, এই হাটের নৌকা বিভিন্ন উপজেলায় যাচ্ছে। তুলনামূলক খাজনা কম। এখানে ১ হাজার টাকায় ১০০ টাকা খাজনা নেওয়া হয়। এখানে কোনো ঝামেলা ছাড়াই ডিঙি বেচাকেনা হয়।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত