Ajker Patrika

আবু জাফর শামসুদ্দীন

সম্পাদকীয়
আবু জাফর শামসুদ্দীন

আবু জাফর শামসুদ্দীন ছিলেন একজন সাংবাদিক, সাহিত্যিক ও অনুবাদক। তিনি ছিলেন ধর্মনিরপেক্ষ, বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও সমাজতান্ত্রিক আদর্শের প্রগতিশীল লেখক।
তাঁর জন্ম ১৯১১ সালের ১২ মার্চ গাজীপুরের দক্ষিণবাগ গ্রামে। নিজ গ্রামের প্রভাত পণ্ডিতের পাঠশালায় তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শুরু হয়। ১৯২৪ সালে তিনি জুনিয়র মাদ্রাসা ও ১৯২৯ সালে হাই মাদ্রাসা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরে তিনি ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজে ভর্তি হন, কিন্তু পরীক্ষা না দিয়েই পড়াশোনা ছেড়ে দেন।

একাডেমিক পড়ালেখার প্রতি অনাগ্রহ তৈরি হওয়ার পরেই আবু জাফর শামসুদ্দীন কলকাতায় গিয়ে ‘দৈনিক সুলতান’ পত্রিকায় কাজ শুরু করেন। এরপর সরকারের সেচ বিভাগে যোগ দেন। এই কাজ ছেড়ে দিয়ে কটকে গিয়ে বিমানের হেড ক্লার্কে কাজ শুরু করেন। এখানে কয়েক মাস কাজ করার পর ‘দৈনিক আজাদ’-এ কাজ শুরু করেন। আজাদের কাজ ছেড়ে দিয়ে তিনি প্রকাশনা সংস্থা ‘কিতাবিস্তান’ প্রতিষ্ঠা করেন। এর পরপরই ‘সাপ্তাহিক ইত্তেফাক’-এর সম্পাদক হন। ১৯৬১ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত বাংলা একাডেমিতে সহকারী অনুবাদকের চাকরি করেন। মৃত্যুর আগপর্যন্ত ‘অল্পদর্শী’ ছদ্মনামে দৈনিক সংবাদে ‘বৈহাসিকের পার্শ্বচিন্তা’ শীর্ষক সাপ্তাহিক কলাম লিখে তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।

আবু জাফর শামসুদ্দীন প্রথম জীবনে মানবেন্দ্রনাথ রায়ের ‘র‍্যাডিক্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির’ সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরে ভাসানীর নেতৃত্বে ন্যাপ গঠিত হলে তার প্রাদেশিক সাংগঠনিক কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি কাগমারী সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির কেন্দ্রীয় আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন। ভাষা আন্দোলনে তিনি সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন।

আবু জাফর শামসুদ্দীনের উল্লেখযোগ্য রচনাগুলো হলো—উপন্যাস: ভাওয়াল গড়ের উপাখ্যান, পদ্মা মেঘনা যমুনা, সংকর সংকীর্তন ইত্যাদি; প্রবন্ধ: চিন্তার বিবর্তন ও পূর্ব পাকিস্তানী সাহিত্য সোচ্চার উচ্চারণ, লোকায়ত সমাজ ও বাঙ্গালী সংস্কৃতি ইত্যাদি। শিল্পীর সাধনা ও পার্ল বাকের সেরা গল্প তাঁর দুটি অনুবাদগ্রন্থ।

১৯৮৮ সালের ২৪ আগস্ট তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত