Ajker Patrika

নিষিদ্ধ সময়ে জেলেরা মারমুখী

নুরুল আমীন রবীন, শরীয়তপুর
নিষিদ্ধ সময়ে জেলেরা মারমুখী

ইলিশ শিকারের নিষেধাজ্ঞার সময় অভিযানে গিয়ে প্রায়ই জেলেদের হামলার শিকার হচ্ছেন অভিযান পরিচালনাকারী দলের সদস্যরা। নিষেধাজ্ঞা চলাকালে গত ছয় দিনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, মৎস্য কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা শরীয়তপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে একাধিক হামলার শিকার হয়েছেন।

এসব হামলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও পুলিশসহ অন্তত ছয়জন আহত হয়েছেন।

মা ইলিশ শিকার থেকে জেলেদের বিরত রাখতে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগ।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ইলিশের প্রজনন মৌসুম হওয়ায় ৭ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন শরীয়তপুরের পদ্মা ও মেঘনা নদীর ৭১ কিলোমিটার এলাকায় সব ধরনের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা চলমান রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে নদীতে নিয়মিত মাছ শিকার করছেন অনেক জেলে। মাছ শিকারে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের হাতে নিয়মিত আটক হয়ে জেল-জরিমানার শিকার হচ্ছেন অনেকে। ছয় দিনে শরীয়তপুরের পদ্মা ও মেঘনায় অভিযান চালিয়ে ১২৭ জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ ছাড়া জব্দ করা হয়েছে ২০ লাখ মিটার কারেন্ট জাল ও ৭৮০ কেজি মা ইলিশ।

নদীতে অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে ৯ অক্টোবর জাজিরার মাঝিরঘাট এলাকায় জেলেদের হামলার শিকার হন জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান সোহেল ও দলের সদস্যরা। এ সময় পুলিশ ৯ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে জেলেদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। জেলেদের হামলায় ও ইটের আঘাতে পায়ে আঘাত পান ইউএনও।

পরদিন ১০ অক্টোবর গোসাইরহাটে মেঘনা নদীতে অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে জেলেদের হামলার শিকার হন ইউএনও ও মৎস্য কর্মকর্তাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। শতাধিক জেলে নৌকা নিয়ে অভিযানে থাকা সদস্যদের ওপর লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা করেন। এ সময় জেলেদের হামলায় আহত হন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সাহাবুদ্দিন, গোসাইরহাট থানার উপপরিদর্শক মনিরুজ্জামানসহ পাঁচজন। পরে ওই রাতে জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে অভিযান চালিয়ে ১৮ জেলেকে আটক করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

ইউএনও কামরুল হাসান সোহেল বলেন, ‘অভিযান পরিচালনাকালে জেলেরা সংঘবদ্ধ হয়ে আমাদের নৌকা ও স্পিডবোটে হামলা করেন। জেলেদের আটক করা হলে তাঁরা আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন। অনেক সময় সংঘবদ্ধ জেলেরা আটক করা জেলেদের ছিনিয়ে নিতে এসে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলেদের সতর্ক করা হচ্ছে। রাতে যেন জেলেরা নদীতে মাছ শিকারে না যান, সেজন্য তাঁদের নিয়ে বাউলসংগীত ও বিনোদনসহ সচেতনতামূলক সভা করা হচ্ছে।’

শরীয়তপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রণব কুমার কর্মকার বলেন, জেলার নিবন্ধিত মোট ২৫ হাজার জেলের মধ্যে ১৯ হাজার জেলেকে সরকারি সহায়তা হিসেবে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হচ্ছে। এ বছর নদীতে গত বছরের তুলনায় ইলিশের উপস্থিতি বেশি হওয়ায় জেলেরা লোভের বশবর্তী হয়ে নদীতে নামছেন। এ সময় জেলেদের আটক করতে গেলে অনেক সময় তাঁরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে জেলেদের নিয়মিত সচেতন করা হচ্ছে। আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মাসুদ আহমেদের সব পদ স্থগিত

টিআইএন নেওয়ার পরে কিন্তু ঘুমাইতে পারবেন না: এনবিআর চেয়ারম্যান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত