Ajker Patrika

স্বীকৃতি পান না গ্রামীণ বিচিত্রা শিল্পী ময়নারা

রঞ্জন কুমার দে, শেরপুর (বগুড়া) 
স্বীকৃতি পান না গ্রামীণ বিচিত্রা শিল্পী ময়নারা

গ্রামীণ মেলায় নেচে-গেয়ে দর্শক মাতিয়ে রাখেন একদল নারী। এলাকায় তাঁরা ‘বিচিত্রা শিল্পী’ হিসেবে পরিচিত। পেশার মতোই বিচিত্র তাঁদের জীবন। নিজেদের বেদনা চেপে রেখে অন্যদের বিনোদন দেন তাঁরা। কিন্তু দিন শেষে পান না স্বীকৃতিটুকুও।

গ্রামীণ ঐতিহ্য যাত্রাশিল্প বন্ধ হয়ে গেছে অনেক আগে। শিল্পীরা বিভিন্ন নাট্য বা শিল্পীগোষ্ঠী হিসেবে টিকে থাকলেও মূলত গ্রামীণ মেলায় হাজির হন বিচিত্রা প্রদর্শনী নামের সাংস্কৃতিক আয়োজনে। কখনো কখনো মেলায় প্রশাসনের অনুমতি না থাকায় নিরাপত্তাহীনতায়ও ভোগেন তাঁরা।

মাসখানেক আগে জ্যৈষ্ঠের মাঝামাঝি কোনো একদিন বগুড়ার শেরপুরে কেল্লাপোশী মেলায় কথা হয় কয়েকজন বিচিত্রা শিল্পীর সঙ্গে। তাঁরা অকপটে বলে যান জীবনের গল্প। তাঁদেরই একজন ময়না খাতুন। বয়স ২৮ বছর। বাড়ি পাবনার চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল ইউনিয়নে। অষ্টম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় তাঁর বিয়ে হয়। ছেলে ও মেয়ের জন্মের পর বিচ্ছেদ হয় স্বামীর সঙ্গে। আবারও বিয়ে করেন। কিন্তু সন্তানদের দায়িত্ব নেননি এই স্বামী। তাই স্কুলজীবনের শখের নাচ ও গান সম্বল করে যোগ দেন বিচিত্রা দলে।

সিরাজগঞ্জের সুমি আক্তারের বয়স ৩০। শিশু থাকা অবস্থায় হারিয়েছেন মাকে। বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করলে শুরু হয় নির্যাতন। তাই লেখাপড়া করতে পারেননি। বিয়ের পর স্বামীর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে দুই সন্তানকে নিয়ে ঘর ছাড়েন। সুমি বলেন, ‘নিরুপায় হয়েই এই পেশায় পড়ে আছি।’

বিচিত্রা শিল্পীদের মর্যাদা দিতে নারাজ অনেকে। সেই আক্ষেপের কথা জানালেন নারায়ণগঞ্জের সাথী আক্তার।

ওই বিচিত্রা দলের ম্যানেজার আকাশ বলেন, ‘প্রশাসনের অনুমতি না থাকায় সাধারণত প্রভাবশালীরাই আমাদের নিয়ে আসেন। অনেক সময় মঞ্চ ভেঙে দেওয়া হয়। আবার কখনো কখনো উচ্ছৃঙ্খল দর্শক মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে। আমরা নিরাপত্তা পাই না। আর শো চালাতে না পারলে আয়োজকেরাও টাকা দেন না। আসলে আমাদের এই পেশা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।’

সমাজ-সংস্কৃতিবিষয়ক গবেষক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মানস চৌধুরী বলেন, ‘নতুন পুঁজিবাদে যাত্রা ও সার্কাসশিল্পীরা বস্তুত উৎখাত হলেন তাঁদের জীবিকা থেকে; যে জীবিকাও ছিল কোনোমতে চলা। একই লোকগান সক্ষম শ্রেণির লোকের গাওয়া আর গরিব মানুষের গাওয়ার পার্থক্য দিয়েই বোঝা সম্ভব। ফলে সম্মানের বা স্বীকৃতির বিষয়টা আমি বুঝলেও সংকটটা দেখি গরিবিতে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আমিনুল ইসলাম নন, শিক্ষা উপদেষ্টা হচ্ছেন অধ্যাপক আবরার

গণপিটুনিতে নিহত জামায়াত কর্মী নেজাম ও তাঁর বাহিনী গুলি ছোঁড়ে, মিলেছে বিদেশি পিস্তল: পুলিশ

উপদেষ্টা হচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

বসুন্ধরায় ছিনতাইকারী সন্দেহে ২ বিদেশি নাগরিককে মারধর

বিএনপির দুই পেশাজীবী সংগঠনের কমিটি বিলুপ্ত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত