ভারপ্রাপ্তের ভার কমেনি ইবির

পল্লব আহমেদ সিয়াম, ইবি (কুষ্টিয়া)
আপডেট : ০১ আগস্ট ২০২২, ১২: ৫৫
Thumbnail image

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার পদগুলোতে পূর্ণকালীন নিয়োগ দিতে চার মাস আগে চিঠি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। কিন্তু রেজিস্ট্রার, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালকসহ গুরুত্বপূর্ণ আটটি পদে পূর্ণকালীন নিয়োগের কোনো উদ্যোগ নেই ইবি কর্তৃপক্ষের।

বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী, এসব পদে পূর্ণকালীন নিয়োগ দিয়ে ইউজিসিকে জানাতেও বলা হয় ওই চিঠিতে। তবে চিঠি দেওয়ার চার মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত ইউজিসির এ নির্দেশনা কার্যকর করেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এমনকি নির্দেশনা বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগও নেননি তাঁরা।

গত ২০ মার্চ ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ জামিনুর রহমান স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে ইবিকে পাঠানো হয়। চিঠিতে বলা হয়, ‘বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে যে, কোনো কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, পরিচালক অর্থ ও হিসাব, পরিচালক পরিকল্পনা ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ পদে ভারপ্রাপ্ত, অতিরিক্ত দায়িত্ব বা চলতি দায়িত্ব দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা এবং খণ্ডকালীন হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ফলে প্রশাসনিক কার্যাদি সুচারুরূপে সম্পাদনে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী উল্লেখিত পদে পূর্ণকালীন নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন।’

চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘এমতাবস্থায় উল্লেখিত পদে অবিলম্বে বিধি মোতাবেক পূর্ণকালীন নিয়োগ শেষে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে অবহিত করার অনুরোধ করা হলো।’

জানা গেছে, ইবি প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ আটটি দপ্তর চলছে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিয়ে। এর মধ্যে রয়েছে রেজিস্ট্রার, প্রধান পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালক, প্রধান গ্রন্থাগারিক, প্রধান প্রকৌশলী, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখার পরিচালক, তথ্য, প্রকাশনা ও জনসংযোগ পরিচালক এবং প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা। দীর্ঘদিন ধরে ভারপ্রাপ্ত দিয়ে চলায় অনেকটা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে এসব দপ্তর।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বলেন, ‘ইউজিসির চিঠির বিষয়ে জানা নেই।’

সাবেক ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আতাউর রহমান বলেন, ‘আমি দায়িত্বে থাকাকালীন চিঠিটি পেয়েছিলাম। সে সময়ে রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে নোট দিয়ে উপাচার্যের দপ্তরে পাঠানো হয়।’

প্রগতিশীল শিক্ষকদের সংগঠন শাপলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মামুনুর রহমান বলেন, ‘ধীরে ধীরে দক্ষ ও যোগ্য লোকবল নিয়োগ দিয়ে প্রশাসনকে গতিশীল করা দরকার।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ‘ইউজিসি গাইডলাইন দিয়েছে। ধীরে ধীরে আমরা তা মানার চেষ্টা করছি। সব বিশ্ববিদ্যালয়ে একই অবস্থা। ইউজিসিতেও ভারপ্রাপ্ত আছে।’

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বলে, যোগ্য কর্মকর্তা পাওয়া যায় না। আমি মনে করি, দক্ষ কর্মকর্তা বিশ্ববিদ্যালয়েই আছে। আবেদন আহ্বান করলে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং স্ব স্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রাররা আবেদন করবেন। সেখান থেকে চাইলে পূর্ণকালীন নিয়োগ দেওয়া যায়।’

অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগম বলেন, ‘আমরা আবার চিঠি দিয়ে মনে করে দেব। পরে ইবি কী ব্যবস্থা নেয়, সেটা নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে ইউজিসিকে জানাতে হবে। শিগগির এসব পদে নিয়োগের নীতিমালা করে দেওয়া হবে। প্রয়োজনে ভারপ্রাপ্ত পদের সুযোগ-সুবিধা বন্ধ করে দেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত