২০১৭ সালে এক মালয়ালম অভিনেত্রীকে যৌন হেনস্তার পর গঠিত হয় হেমা কমিটি। কেরালার হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি কে হেমার নেতৃত্বাধীন গঠিত এ কমিটি রিপোর্ট জমা দেয় সাড়ে চার বছর আগে। হেমা কমিটির ওই রিপোর্ট জনসমক্ষে কেরালা সরকার প্রকাশ করেছে ১৯ আগস্ট। ২৩৫ পাতার এ রিপোর্টে মালয়ালম ইন্ডাস্ট্রিতে নারীদের যৌন হয়রানি, বেআইনি নিষেধাজ্ঞা, মাদক ও অ্যালকোহলের অপব্যবহার, পারিশ্রমিক বৈষম্য, কিছু কিছু ক্ষেত্রে অমানবিক কাজের বিবরণ উঠে এসেছে। 

রিপোর্টে ভুক্তভোগীরা সরাসরি অভিযোগের আঙুল তুলেছেন অভিনেতা সিদ্দিক, জয়সুরিয়া, মুকেশ, মানিয়ানপিল্লা রাজু, এদাভেলা বাবু, সুরাজ ভেঞ্জারমুডু, নির্মাতা রঞ্জিত, তুলসী দাসসহ মালয়ালম ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির একাধিক প্রযোজক, পরিচালক ও অভিনেতার বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে ইন্ডাস্ট্রির ভেতরে।

অভিযুক্তদের মধ্যে কয়েকজন আবার অভিনেতাদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মালয়ালম মুভি আর্টিস্টসের সঙ্গে যুক্ত। এ সংগঠনের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন জনপ্রিয় অভিনেতা মোহনলাল। গতকাল সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন তিনি। শুধু মোহনলাল নন, তিনিসহ কমিটির ১৭ সদস্য সবাই একযোগে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন গতকাল। সংগঠনটির বিভিন্ন দায়িত্বে ছিলেন অভিনেতা জগদীশ, জায়ান চেরথালা, বাবুরাজ, কলাভবন সাজন, সুরাজ ভেঞ্জারমুডু, জয় ম্যাথুউ, সুরেশ কৃষ্ণ, অনন্যা, বিনু মোহন, টোভিনো থমাস, সরায়ু, আনসিবা প্রমুখ।

হেমা রিপোর্ট প্রকাশের পর থেকে অ্যাসোসিয়েশন অব মালয়ালম মুভি আর্টিস্টস অনেকটাই নীরব ভূমিকা পালন করছিল। সংগঠনটির এমন অবস্থানের সমালোচনা করছিলেন মালয়ালম ইন্ডাস্ট্রির সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এ বিষয়ে নীরব থাকার কারণে সমালোচিত হন মোহনলাল, মামুট্টি, ফাহাদ ফাসিলের মতো জনপ্রিয় তারকাও। সেই সমালোচনার জের ধরেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মোহনলাল।

পদত্যাগ করা অভিনয়শিল্পীদের পক্ষ থেকে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা আশা করছি অ্যাসোসিয়েশন অব মালয়ালম মুভি আর্টিস্টস এমন নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করবে, যা সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করবে। সমালোচনা ও সংশোধনের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।’
অ্যাসোসিয়েশন অব মালয়ালম মুভি আর্টিস্টস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সংগঠনের সাধারণ পরিষদ দুই মাসের মধ্যে নির্বাচনের আয়োজন করবে এবং নতুন কমিটি নির্বাচিত করবে।

হেমা রিপোর্ট প্রকাশের সাত দিনের মধ্যে পদক্ষেপ নিয়েছেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। কেরালার মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং অভিযোগগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। গঠিত হয়েছে সাত সদস্যের তদন্ত দল।