খুলনায় ঈদের আগে ট্রাফিক পুলিশের চাঁদাবাজি, অভিযোগ চালকদের

কাজী শামিম আহমেদ, খুলনা
প্রকাশ : ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৯: ১৭

ঈদুল ফিতর সামনে রেখে খুলনায় ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যাপক চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। লাইসেন্স নবায়ন না করার অভিযোগ তুলে ইজিবাইকচালকদের কাছ থেকে তারা এই চাঁদাবাজি করছে বলে অভিযোগ চালকদের।

এ ছাড়া সিটি করপোরেশনের দেওয়া লাইসেন্স নবায়নের রসিদ থাকলেও তাঁদের নামে মামলা করা হচ্ছে। চালকদের দাবি, অঘোষিত ঈদের সালামি দিলে মাফ পাচ্ছেন তাঁরা। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক শাখা।

খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) সূত্র জানায়, খুলনা নগরীতে প্রায় ১০ হাজার লাইসেন্স করা ইজিবাইক রয়েছে। এর মধ্যে যাদের লাইসেন্সের মেয়াদ শেষে হয়ে গেছে, তারা কেসিসির লাইসেন্স (যানবাহন শাখা) শাখায় নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে ডুপ্লিকেট লাইসেন্স নিয়ে নগরীতে চলাচল করছে। এ ছাড়া নিয়মিত অভিযান চলার কারণে বর্তমানে নগরীতে হাতে গোনা দু-একটি লাইসেন্সবিহীন ইজিবাইক চলাচল করতে পারে বলেও জানান কর্মকর্তারা।

ইজিবাইকচালক ফিরোজ আহমেদ বলেন, ‘আট মাস আগে আমার ইজিবাইকের লাইসেন্স হারিয়ে যায়। লাইসেন্স হারানোর কয়েক দিন পর কেসিসির লাইসেন্স শাখায় আবেদন করলে তারা আমাকে একটি ডুপ্লিকেট লাইসেন্স দেয়। কিন্তু ট্রাফিক পুলিশ সেটা মানে না। গাড়ি ধরে, আর আটকে দিয়ে ১ হাজার টাকার একটি স্লিপ হাতে ধরিয়ে দেয়।’

ফিরোজ আরও বলেন, ‘কেসিসির ডুপ্লিকেট লাইসেন্স থাকা সত্ত্বেও এ পর্যন্ত পুলিশ আমার গাড়ি (ইজিবাইক) দু-তিনবার আটক করেছে। ভয়ে এখন আর গাড়ি বের করি না। গ্যারেজে থেকে আমার গাড়ি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুই দিন ধরে নগরীর গল্লামারী, নিরালা, ময়লাপোতা, পিটিআই, কবরখানা, রূপসা, ফেরিঘাট, ডাকবাংলো, সাতরাস্তা, শিববাড়ি, নিউমার্কেট, বয়রা, সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনালসহ, খালিশপুর, দৌলতপুর থানার বিভিন্ন এলাকায় ইজিবাইক ও মোটরসাইকেল ধরপাকড় বেড়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ইজিবাইকচালক বলেন, ঈদকে সামনে রেখে এ ধরনের আচরণ নতুন নয়। সামনে আরও হয়রানি অপেক্ষা করছে।

নগরীর সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনালের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন ইজিবাইকচালক জানান, রাস্তায় জটলার অভিযোগ তুলে ট্রাফিক পুলিশ তাঁদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে।

কেসিসির লাইসেন্স (যানবাহন শাখা) শাখার পরিদর্শক মিয়া নাজিম উদ্দিন বলেন, পুলিশ এখন বেপরোয়া। ইজিবাইকচালকেরা করপোরেশনকে টাকা দিচ্ছেন; তাঁদের কাছে সব ডকুমেন্ট আছে, সেগুলো দেখেও পুলিশ অকারণে টাকা নিচ্ছে। এটা খুবই দুঃখজনক।

এ বিষয়ে খুলনা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিসি ট্রাফিক) মনিরা সুলতানা বলেন, ‘ইজিবাইকগুলো প্রায় সময় ডুপ্লিকেট লাইসেন্স দিয়ে চালাচ্ছে। তারা লাইসেন্স হারিয়ে গেছে বলে থানায় একটি জিডি করে। ওই জিডির কপি নিয়ে সিটি করপোরেশনে দেয়। এরপর সিটি করপোরেশন তাদের একটা কাগজ দেয়। লাইসেন্স না পেয়ে এই ডুপ্লিকেট লাইসেন্স দেখিয়েই তারা ইজিবাইক চালাতে থাকে। সে ক্ষেত্রে লাইসেন্স না হলে আমরা খুব কড়াকড়ির মধ্যে আছি। ফলে আমরা তাদের কথা বিশ্বাস করছি না। তবে কেউ কেসিসির কাগজপত্র দেখালে আমরা তাদের ছেড়ে দিচ্ছি। কিন্তু যাদের কাগজপত্র নেই, তাদের বিরুদ্ধে রাস্তা অবরোধের কারণে এক হাজার টাকার একটি মামলা দেওয়া হচ্ছে।’

চাঁদাবাজির অভিযোগ সম্পর্কে মনিরা সুলতানা বলেন, ‘এই অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে দেওয়া সবচেয়ে সহজ। তবে যারা এ অভিযোগ করেছে, তাদের কথা ঠিক নয়। তারপরও বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত