ক্রীড়া ডেস্ক
‘এটা জীবনের সেরা অনুভূতি। মনে হচ্ছে, স্বপ্নের ভেতর হাঁটছি। যা ঘটেছে আমি বিশ্বাস করতে পারছি না।’ প্লে-অফ জিতে নটিংহাম ফরেস্টের প্রিমিয়ার লিগে ওঠে আসা নিয়ে এভাবেই নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করেছেন অনেক বছর পর ওয়েম্বলিতে খেলা দেখতে আসা নেইল হিথ নামের এক দর্শক।
ইংলিশ ফুটবলের সর্বোচ্চ স্তরে ফেরার নটিংহামের পথটা অবশ্য সহজ ছিল না। গত পরশু প্লে অফের দ্বিতীয়ার্ধে একাধিকবার হুমকি তৈরি করেছিল হার্ডাসফিল্ড। তবে দলের প্রতি বিশ্বাস হারাননি হিথ। এই বাধা অতিক্রম করে দল যে চ্যাম্পিয়নস লিগে ফিরবে, সেই আত্মবিশ্বাস ছিল তাঁর। হিথ বলেন, ‘দ্বিতীয়ার্ধ ছিল স্বপ্নের মতোই। কখনো ভাবিনি হাডার্সফিল্ড গোল করতে পারবে। আমি অনেক অনেক খুশি ও গর্বিত।’
বছরের পর বছর এমন একটি মুহূর্তের জন্য অপেক্ষা করেছিলেন হিথের মতো অসংখ্য নটিংহাম-সমর্থক। এক সময় ইউরোপের পরাশক্তি হিসেবে বিবেচিত হওয়া দলটা সব হারিয়ে টিকে ছিল ঐতিহ্যের কঙ্কাল নিয়ে। বিংশ শতাব্দীতে প্রিমিয়ার লিগে আর খেলার সুযোগই যে পায়নি তারা। এমন দুর্দিনেও অবশ্য দলকে ছেড়ে যাননি সমর্থকেরা। অবশ্য বলা হয়ে থাকে, ‘আপনি বাড়ি-গাড়ি সব বদলাতে পারেন, তবে কখনো দল বদলাতে পারেন না।’ এই কথাটা সঙ্গী করেই দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে অপেক্ষায় ছিলেন তাঁরা। নটিংহাম যখন তৃতীয় সারির লিগে খেলছিল তখনো ম্যাচপ্রতি গড়ে প্রায় ২০ হাজার দর্শক গ্যালারিতে উপস্থিত থাকত। দলের পারফরম্যান্স বারবার সমর্থকদের ধৈর্যের পরীক্ষা নিয়েছে। এরপরও হাল ছেড়ে দেননি তাঁরা। অবশেষে অপেক্ষার ফল পেলেন তাদের সমর্থকেরা।
রূপকথা ও বাস্তবতার মিশেলে সৃষ্ট অমর চরিত্র রবিনহুডের গল্পগাথা তৈরি হয়েছে এই নটিংহামকেই ঘিরে। তবে ক্রীড়াঙ্গনে নটিংহাম পরিচিতি পেয়েছিল ফুটবল ক্লাব নটিংহাম ফরেস্টকে ঘিরে। সত্তরের দশকের শেষ দিকে ইউরোপীয় পরাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয় নটিংহাম। দলটির এ উত্থানের পেছনে মূল ভূমিকা ছিল কিংবদন্তি কোচ ব্রায়ান কাফের। ১৯৭৫ সালে ক্লাবের দায়িত্ব নেন তিনি। দলে এসে তিনি সহকারী হিসেবে নিয়ে আসেন পিটার টেলরেক। এই দুজনের সঙ্গে যুক্ত হন জন রবার্টসন-পিটার শিলটনের মতো একদল দারুণ প্রতিভাবান খেলোয়াড়। ১৯৭৭-৭৮ মৌসুমে প্রথমবারের মতো প্রথম বিভাগের (প্রিমিয়ার লিগ) শিরোপা জেতে তারা। ১৯৭৮-৭৯ মৌসুমে ইউরোপীয় কাপ তথা বর্তমান চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা জেতে নটিংহাম। পরের মৌসুমেও ইউরোপীয় শ্রেষ্ঠত্বের খেতাব ধরে রাখে তারা। এ সময় শুধু শিরোপাই জেতেনি দলটি, খেলার শৈলীতেও সবাইকে চমকে দিয়েছিল।
সাফল্যের ধারা অবশ্য খুব বেশি দীর্ঘায়িত হয়নি। ধীরে ধীরে শক্তি হারাতে শুরু করে দলটি। ১৯৮২ সালে টেলর ক্লাব ছেড়ে গেলে প্রথম ধাক্কা খায় নটিংহাম। আর ব্রায়ান ক্লাব ছাড়েন ১৯৯২ সালে। এরপর দ্রুতই কক্ষপথ থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়ে ‘ট্রিকি ট্রিস’খ্যাত দলটি। এটির ধারাবাহিকতায় ১৯৯৯ সালের পর আর প্রিমিয়ার লিগে ফিরতেই পারেনি তারা।
সেই অতীত পেছনে ফেলে কোচ স্টিভ কুপারের হাত ধরে আবার নতুন করে জেগে উঠেছে নটিংহাম। গত সেপ্টেম্বরেও চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের তলানিতে থাকা দলটি ফিরেছে প্রিমিয়ার লিগে। এবার আর দ্রুত হারাতে চায় না তারা। প্রিমিয়ার লিগে ওঠে আসার অনুভূতি জানাতে গিয়ে কুপার বললেন, ‘বিশ্বকে আমরা মনে করিয়ে দিতে চাই, এই দলটা কী অসাধারণ আর বিশাল। এটা আমার কাছে অনেক কিছু। গত আট-নয় মাসে আমরা যে পরিশ্রম করেছি, জয়টা আমাদের প্রাপ্য ছিল। নটিংহাম জাদুকরি একটা দল আর বিশ্বকে আবারও আমরা সেটা মনে করিয়ে দিতে চাই।’ এখন তারা দল গঠনেও বাড়তি অর্থ ঢালতে প্রস্তুত। কে জানে, যেভাবে সবাইকে চমকে দিয়ে নটিংহাম প্রিমিয়ার লিগে ফিরেছে, সেটি নিশ্চিতভাবে আরও বড় স্বপ্ন দেখাতে পারে ক্লাবটিকে।
খেলা সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
‘এটা জীবনের সেরা অনুভূতি। মনে হচ্ছে, স্বপ্নের ভেতর হাঁটছি। যা ঘটেছে আমি বিশ্বাস করতে পারছি না।’ প্লে-অফ জিতে নটিংহাম ফরেস্টের প্রিমিয়ার লিগে ওঠে আসা নিয়ে এভাবেই নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করেছেন অনেক বছর পর ওয়েম্বলিতে খেলা দেখতে আসা নেইল হিথ নামের এক দর্শক।
ইংলিশ ফুটবলের সর্বোচ্চ স্তরে ফেরার নটিংহামের পথটা অবশ্য সহজ ছিল না। গত পরশু প্লে অফের দ্বিতীয়ার্ধে একাধিকবার হুমকি তৈরি করেছিল হার্ডাসফিল্ড। তবে দলের প্রতি বিশ্বাস হারাননি হিথ। এই বাধা অতিক্রম করে দল যে চ্যাম্পিয়নস লিগে ফিরবে, সেই আত্মবিশ্বাস ছিল তাঁর। হিথ বলেন, ‘দ্বিতীয়ার্ধ ছিল স্বপ্নের মতোই। কখনো ভাবিনি হাডার্সফিল্ড গোল করতে পারবে। আমি অনেক অনেক খুশি ও গর্বিত।’
বছরের পর বছর এমন একটি মুহূর্তের জন্য অপেক্ষা করেছিলেন হিথের মতো অসংখ্য নটিংহাম-সমর্থক। এক সময় ইউরোপের পরাশক্তি হিসেবে বিবেচিত হওয়া দলটা সব হারিয়ে টিকে ছিল ঐতিহ্যের কঙ্কাল নিয়ে। বিংশ শতাব্দীতে প্রিমিয়ার লিগে আর খেলার সুযোগই যে পায়নি তারা। এমন দুর্দিনেও অবশ্য দলকে ছেড়ে যাননি সমর্থকেরা। অবশ্য বলা হয়ে থাকে, ‘আপনি বাড়ি-গাড়ি সব বদলাতে পারেন, তবে কখনো দল বদলাতে পারেন না।’ এই কথাটা সঙ্গী করেই দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে অপেক্ষায় ছিলেন তাঁরা। নটিংহাম যখন তৃতীয় সারির লিগে খেলছিল তখনো ম্যাচপ্রতি গড়ে প্রায় ২০ হাজার দর্শক গ্যালারিতে উপস্থিত থাকত। দলের পারফরম্যান্স বারবার সমর্থকদের ধৈর্যের পরীক্ষা নিয়েছে। এরপরও হাল ছেড়ে দেননি তাঁরা। অবশেষে অপেক্ষার ফল পেলেন তাদের সমর্থকেরা।
রূপকথা ও বাস্তবতার মিশেলে সৃষ্ট অমর চরিত্র রবিনহুডের গল্পগাথা তৈরি হয়েছে এই নটিংহামকেই ঘিরে। তবে ক্রীড়াঙ্গনে নটিংহাম পরিচিতি পেয়েছিল ফুটবল ক্লাব নটিংহাম ফরেস্টকে ঘিরে। সত্তরের দশকের শেষ দিকে ইউরোপীয় পরাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয় নটিংহাম। দলটির এ উত্থানের পেছনে মূল ভূমিকা ছিল কিংবদন্তি কোচ ব্রায়ান কাফের। ১৯৭৫ সালে ক্লাবের দায়িত্ব নেন তিনি। দলে এসে তিনি সহকারী হিসেবে নিয়ে আসেন পিটার টেলরেক। এই দুজনের সঙ্গে যুক্ত হন জন রবার্টসন-পিটার শিলটনের মতো একদল দারুণ প্রতিভাবান খেলোয়াড়। ১৯৭৭-৭৮ মৌসুমে প্রথমবারের মতো প্রথম বিভাগের (প্রিমিয়ার লিগ) শিরোপা জেতে তারা। ১৯৭৮-৭৯ মৌসুমে ইউরোপীয় কাপ তথা বর্তমান চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা জেতে নটিংহাম। পরের মৌসুমেও ইউরোপীয় শ্রেষ্ঠত্বের খেতাব ধরে রাখে তারা। এ সময় শুধু শিরোপাই জেতেনি দলটি, খেলার শৈলীতেও সবাইকে চমকে দিয়েছিল।
সাফল্যের ধারা অবশ্য খুব বেশি দীর্ঘায়িত হয়নি। ধীরে ধীরে শক্তি হারাতে শুরু করে দলটি। ১৯৮২ সালে টেলর ক্লাব ছেড়ে গেলে প্রথম ধাক্কা খায় নটিংহাম। আর ব্রায়ান ক্লাব ছাড়েন ১৯৯২ সালে। এরপর দ্রুতই কক্ষপথ থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়ে ‘ট্রিকি ট্রিস’খ্যাত দলটি। এটির ধারাবাহিকতায় ১৯৯৯ সালের পর আর প্রিমিয়ার লিগে ফিরতেই পারেনি তারা।
সেই অতীত পেছনে ফেলে কোচ স্টিভ কুপারের হাত ধরে আবার নতুন করে জেগে উঠেছে নটিংহাম। গত সেপ্টেম্বরেও চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের তলানিতে থাকা দলটি ফিরেছে প্রিমিয়ার লিগে। এবার আর দ্রুত হারাতে চায় না তারা। প্রিমিয়ার লিগে ওঠে আসার অনুভূতি জানাতে গিয়ে কুপার বললেন, ‘বিশ্বকে আমরা মনে করিয়ে দিতে চাই, এই দলটা কী অসাধারণ আর বিশাল। এটা আমার কাছে অনেক কিছু। গত আট-নয় মাসে আমরা যে পরিশ্রম করেছি, জয়টা আমাদের প্রাপ্য ছিল। নটিংহাম জাদুকরি একটা দল আর বিশ্বকে আবারও আমরা সেটা মনে করিয়ে দিতে চাই।’ এখন তারা দল গঠনেও বাড়তি অর্থ ঢালতে প্রস্তুত। কে জানে, যেভাবে সবাইকে চমকে দিয়ে নটিংহাম প্রিমিয়ার লিগে ফিরেছে, সেটি নিশ্চিতভাবে আরও বড় স্বপ্ন দেখাতে পারে ক্লাবটিকে।
খেলা সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে