Ajker Patrika

বকেয়ার শঙ্কা, শ্রমিক সংকট, তবুও আশা

নাইমুর রহমান, নাটোর
আপডেট : ০৭ জুলাই ২০২২, ১২: ১২
বকেয়ার শঙ্কা, শ্রমিক সংকট, তবুও আশা

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে নাটোরে কোরবানির পশুর চামড়া কেনাবেচার হাটে মৌসুমি ব্যবসায়ীদের আনাগোনা বেড়েছে। আড়তদারদের কাছে কে কত চামড়া সরবরাহ করবেন, তা নিয়ে চলছে হিসাব-নিকাশ। তবে শ্রমিকের সংকট, পাওনা টাকা না পাওয়া এবং সংরক্ষণের খরচ বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন। তবুও তাঁদের আশা, এবারের ঈদে অন্তত ১৫ লাখ পশুর চামড়া বেচাকেনা হবে। যার বাজারমূল্য হতে পারে ৫০০ কোটি টাকার বেশি।

জানা গেছে, চামড়া বাজারে পাওনা টাকা আদায়ের ওপর নির্ভরশীল মৌসুমি বিক্রেতা ও আড়তদারদের সম্পর্ক। কোরবানি ঈদের আগে ট্যানারির মালিকদের কাছে নাটোরের ব্যবসায়ীদের বকেয়া থাকে শতকোটি টাকারও বেশি। এবার বকেয়া রয়েছে প্রায় ৭০ কোটি টাকা। ঈদের দু-তিন দিন আগে সেই টাকা ট্যানারির মালিকদের থেকে আদায় করেন আড়তদার ও ব্যবসায়ীরা। এরপর নতুন করে চামড়া কেনার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। কিন্তু এবার কী পরিমাণ টাকা দায় হবে, তা দিয়ে শঙ্কায় ব্যবসায়ীরা।

স্থানীয় চামড়া আড়তদারদের সূত্রে জানা গেছে, অনিশ্চিত অর্থপ্রবাহের কারণে নাটোরের মোকামে চামড়া প্রক্রিয়াজাত করার কাজ ছেড়েছেন অনেক শ্রমিক।

চামড়া ব্যবসায়ীরা জানান, কোরবানির ঈদের আগে প্রতিবছর তাঁরা শ্রমিকদের অগ্রিম টাকা দিতেন। তবে ব্যবসায়ীরা এবার কাজের জন্য শ্রমিক খুঁজে পাচ্ছেন না। যাঁরা বর্তমানে কাজে নিয়োজিত আছেন, তাঁরাও ঈদের পর কাজের জন্য বাড়তি টাকা দাবি করছেন। মৌসুমে প্রতি রাতে একজন শ্রমিককে চামড়ায় লবণ লাগানোর জন্য এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা দিতে হতো। এবার তা বাড়তে পারে। তবে সময়মতো শ্রমিক পাওয়া না গেলে চামড়া সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে না। এতে কাঁচা চামড়া পচে যেতে পারে।

গত বুধবার শিল্প মন্ত্রণালয় ঢাকা ও ঢাকার বাইরের জন্য চামড়ার দাম বেঁধে দিয়েছে। ঢাকাতে প্রতি বর্গফুট গরুর লবণযুক্ত কাঁচা চামড়ার দাম ৪৭ থেকে ৫২ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৪০ থেকে ৪৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর খাসির লবণযুক্ত চামড়ার দাম ১৮ থেকে ২০ টাকা এবং বকরির চামড়া ১২ থেকে ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই দামে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়া সংগ্রহ করলেও আড়তে বিক্রির সময় দাম পান না বলে অভিযোগ রয়েছে।

আড়তদারদের অভিযোগ, ব্যবসা চালু রাখার জন্য বাড়তি অথবা নির্ধারিত দামে খাসির চামড়া কেনেন তাঁরা। কিন্তু এতে কোনো লাভ থাকে না। ১৮ থেকে ২০ টাকা ফুট দরে একটি খাসির চামড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকায় কিনে প্রক্রিয়াজাত করতে ৬০ থেকে ৭০ টাকার মতো খরচ হয়। অথচ এই চামড়া বিক্রি করা যায় না।

চামড়া ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম বলেন, চামড়া সংরক্ষণের লবণের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় চামড়াপ্রতি লবণের ব্যবহারও বৃদ্ধি পাবে। ৭০ কেজির এক বস্তা লবণের দাম ৯০০ থেকে বেড়ে ১ হাজার ১০০ টাকা হয়েছে। চামড়া কিনলে লবণ দিতেই হবে। তাই প্রক্রিয়াজাত করতে খরচও বেড়ে যাবে।

চামড়া শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য মোতাহার আলী বলেন, চামড়া প্রক্রিয়াজাত করার সঙ্গে জড়িত শ্রমিকেরা পেশা ছেড়েছেন। এরপরও এক মাসের জন্য ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা চুক্তিতে অন্য পেশার শ্রমিকেরা কাজ করেন।

জেলা চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের সভাপতি এস এম মকছেদ আলী বলেন, করোনার কারণে বকেয়া টাকার চাপ ব্যবসায়ীদের আরও ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এরপরও তিনি আশা করছেন, এবার ৫০০ কোটি টাকা চামড়া কেনাবেচা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণপিটুনিতে নিহত জামায়াত কর্মী নেজাম ও তাঁর বাহিনী গুলি ছোড়ে, মিলেছে বিদেশি পিস্তল: পুলিশ

এক ছাতায় সব নাগরিক সেবা

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত