লাইসেন্সই নেই এক চালকের, অপরেরটি হালকা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২১, ০৭: ৪০
আপডেট : ২৭ নভেম্বর ২০২১, ১০: ১০

ঢাকা সিটি করপোরেশনের দুটি ময়লার গাড়ির চাপায় পরপর দুদিনে প্রাণ গেছে দুজনের। দুই গাড়ির দুই চালকের একজনের ড্রাইভিং লাইসেন্সই নেই। দুর্ঘটনার সময় গাড়ি চালাচ্ছিলেন তাঁর সহযোগী, তাঁরও নেই ড্রাইভিং লাইসেন্স। পরদিনের ঘটনার গাড়িটির চালকের লাইসেন্স থাকলেও সেটি হালকা যানের। কিন্তু তিনি চালাচ্ছিলেন ভারী ডাম্প ট্রাক।

গত বুধবার রাজধানীর গুলিস্তানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ময়লার গাড়ির চাপায় নিহত হয় নটর ডেম কলেজের ছাত্র নাঈম হাসান। এ ঘটনার পরপরই রাসেল খান নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঘটনার সময় তিনি গাড়ি চালাচ্ছিলেন, যদিও তাঁর ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। পরে জানা যায়, গাড়িটির মূল চালক হারুন অর রশিদ।

গতকাল শুক্রবার দুপুরে র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে সকালে হারুনকে গ্রেপ্তার করেন র‍্যাব সদস্যরা। গত বছর থেকে তিনি ডিএসসিসির ময়লার ওই গাড়িটি চালাচ্ছেন। কিন্তু শিক্ষার্থীকে চাপা দেওয়ার সময় গাড়িটি চালাচ্ছিলেন তাঁর সহযোগী রাসেল। রাসেল ও হারুন দুজনেরই ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) আ. আহাদ বলেন, হারুন ডিএসসিসির বিশেষ ট্রাক পরিচ্ছন্নতাকর্মী। কিন্তু তিনি মোটা অঙ্কের অর্থ দিয়ে নিজের নামে ট্রাকটি বরাদ্দ নেন। এরপর নিজে না চালিয়ে গাড়িটি রাসেলকে চালাতে দেন।

নটর ডেম কলেজছাত্র নিহত হওয়ার পরদিন বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বসুন্ধরা শপিং মলের বিপরীতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ময়লার গাড়ির চাপায় প্রাণ যায় গণমাধ্যমকর্মী আহসান কবির খানের। ঘটনার পরপরই গাড়ি ফেলে পালিয়ে যান চালক হানিফ।

ডিএনসিসি থেকে তাৎক্ষণিকভাবে জানানো হয়, হানিফ বৈধ ও লাইসেন্সধারী গাড়িচালক। কিন্তু তাদের পাঠানো নথিতে দেখা যায়, হানিফের লাইসেন্সটি হালকা ও ছোট যান চালানোর জন্য। কিন্তু তিনি চালাচ্ছিলেন ট্রাকের মতো ভারী পরিবহন। এ বিষয়ে জানতে ডিএনসিসির পরিবহন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মিজানুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

হালকা যানের লাইসেন্স নিয়ে হানিফ কীভাবে ভারী পরিবহন চালাতেন—জানতে চাইলে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা আজকের পত্রিকা বলেন, ‘আসলে এই ঘটনা খুবই দুঃখজনক। ডিএনসিসির যাঁরা গাড়ি চালান, সবার লাইসেন্স আছে। কেন গাড়ির মূল চালক তাঁর দায়িত্বের ব্যত্যয় ঘটালেন, সেই খোঁজ আমরা নিচ্ছি।’

নিহত কবিরের চাচাতো ভাই মো. ইলিয়াস জানান, কলাবাগান থানায় নিহত কবিরের স্ত্রী নাদিয়া পারভীন বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। ময়নাতদন্ত শেষে কবিরের লাশ মগবাজার আনা হয়। সেখানে প্রথম জানাজা শেষে গতকাল বিকেলে তাঁর লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠির উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। রাতে ঝালকাঠি সদরের শেখের হাট ইউনিয়নের মিয়াকাঠি গ্রামে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত