হাটিকুমরুল ইন্টারচেঞ্জ: ভূমি জটিলতায় কাজ শুরু করা যাচ্ছে না

তৌফিকুল ইসলাম, ঢাকা
প্রকাশ : ০৮ মে ২০২২, ০৭: ০১
আপডেট : ০৮ মে ২০২২, ১৩: ৪৮

টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে রংপুর পর্যন্ত চার লেন সড়কের নির্মাণকাজ বেশ এগিয়ে গেছে। এ প্রকল্পে দৃষ্টিনন্দন ও ব্যবহারের দিক থেকে সুবিধাজনক ইন্টারচেঞ্জ নির্মাণ হওয়ার কথা সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল মোড়ে। কিন্তু ভূমি জটিলতার কারণে ইন্টারচেঞ্জের নির্মাণকাজ শুরুই করতে পারছে না ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে চার লেনের মহাসড়ক চালু হলেও ইন্টারচেঞ্জ নির্মাণ সঠিক সময়ে শেষ না হলে চার লেনের সুফল মিলবে না খুব বেশি। গাড়িগুলোও বাধা ছাড়াই হাটিকুমরুল মোড় অতিক্রম করতে পারবে না।

সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল মোড় ব্যবহার করে দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২২ জেলার মানুষ যাতায়াত ও পণ্য পরিবহন হয়ে থাকে। এ কারণে সেখানে ইন্টারচেঞ্জ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অন্তর্ভুক্ত সাসেক সড়ক সংযোগ প্রকল্প-২ এর আওতায়।

প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. মাহবুবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ইন্টারচেঞ্জের ডিজাইনসহ অনুমোদনের কাজ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু এখনো জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়াই শেষ করতে পারেনি জেলা প্রশাসকের দপ্তর।

ফলে জমি বুঝিয়ে না দেওয়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করতে পারছে না। জমি না পেলে ঠিক সময়ে ইন্টারচেঞ্জের কাজ শেষ করা দুরূহ হবে।

প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, এডিবি ২০২০ সালের এপ্রিলে প্রকল্পের ডিটেইল ডিজাইনে সম্মতি দেওয়ার পর একই বছরের ১৫ জুন ভূমি অধিগ্রহণ জরিপ প্রতিবেদন জমা দেয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রকল্পটির পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হলে সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলাধীন ধোপাকান্দি, চড়িয়াশিখর, হাসনপুর ও হাটিকুমরুল মৌজার ব্যক্তিমালিকানাধীন ভূমি অধিগ্রহণ প্রয়োজন হবে। একই বছরের ১৮ জুন আহ্বান করা দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর গত দুই বছরে মহাসড়কের নির্মাণকাজ এগিয়ে চললেও সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ইন্টারচেঞ্জের জন্য প্রয়োজনীয় ভূমি অধিগ্রহণ করে বুঝিয়ে দিতে পারেনি।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেছেন, ভূমি অধিগ্রহণে মূল জটিলতা তৈরি হয়েছে জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া নিয়ে। প্রকল্প এলাকায় ২০১৮-১৯ সালের পর থেকে নির্মাণ করা অবকাঠামো অবৈধ ঘোষণা করে জেলা প্রশাসকের ভূমি অধিগ্রহণ শাখা বলেছে, এসব অবকাঠামোর জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না। তবে স্থানীয় লোকজন দাবি করছেন, জেলা প্রশাসকের দপ্তর যে সময়ের কথা বলছে, তার পর থেকে প্রকল্প এলাকায় আর কোনো অবকাঠামো নির্মাণ হয়নি।

হাটিকুমরুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হেদায়েতুল আলম বলেন, ‘ডিসি অফিস নোটিশ দেওয়ার পরে সিরাজগঞ্জ রোডে নতুন করে আর কোনো বিল্ডিং তৈরি হয়নি। বিল্ডিং যা আছে তা ওই নোটিশের আগের। আমাদের প্রায় ৬৭টা স্থাপনা রয়েছে প্রকল্প এলাকায়। জমি অধিগ্রহণ করে ক্ষতিপূরণ না দেওয়ায় দীর্ঘদিন মানুষের সম্পদ পড়ে নষ্ট হচ্ছে।’

তবে সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফারুক আহম্মদ বলেছেন, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছিল। মন্ত্রণালয় থেকে ভূমি অধিগ্রহণের বিষয়টি অনুমোদন হয়ে এসেছে। খুব শিগগিরই বিষয়টি সমাধান হয়ে যাবে।

এলেঙ্গা থেকে রংপুর ১৯০ দশমিক ৪০ কিলোমিটার চার লেন সড়ক প্রকল্পটি ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে অনুমোদিত হলেও প্রাথমিক কাজ শেষ হতেই আড়াই বছর চলে যায়। পরে আবার কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের জুনে। ৭৪৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়সাপেক্ষে হাটিকুমরুল ইন্টারচেঞ্জের নির্মাণকাজ করছে চীনের একটি প্রতিষ্ঠান।

যোগাযোগবিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, প্রকল্পগুলো ঠিক সময়ে বাস্তবায়ন না হওয়ার পেছনে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়াটি অনেকাংশে দায়ী। ফলে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া পর্যালোচনা করার সময় এসেছে। তা ছাড়া চার লেনের সুফল পেতে হলে এই ইন্টারচেঞ্জ দ্রুত শেষ করার কোনো বিকল্প নেই।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত