মাদকসহ জব্দ করা গাড়িতে পুলিশ কর্মকর্তার বিলাস

বুড়িচং প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৮ জুন ২০২২, ১০: ৫৭
আপডেট : ০৮ জুন ২০২২, ১২: ৩৪

গাঁজাসহ জব্দ করা প্রাইভেট কার নিজের কাজে ব্যবহারে করার অভিযোগ উঠেছে বুড়িচং থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাকসুদ আলমের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে সমালোচনার সৃষ্টি হলেও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

র‍্যাব-১১ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৫ মার্চ শুক্রবার দিবাগত রাতে র‍্যাবের একটি দল বুড়িচংয়ের মোকাম ইউনিয়নের নিমসার বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। ওই অভিযানে একটি প্রাইভেট কারের মধ্য থেকে সাড়ে ৫০ কেজি গাঁজাসহ মো. ইকবাল হোসেন (৩৫) নামের এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়। জব্দ করা হয় প্রাইভেট কারটি। র‍্যাবের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের পর আলামত হিসেবে ওই প্রাইভেট কারটি বুড়িচং থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

অভিযোগ উঠেছে, বুড়িচং থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাকসুদ আলম ওই প্রাইভেট কার নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এমনকি এটি নিয়ে লক্ষ্মীপুর জেলায় নিজের বাড়িতেও যাচ্ছেন তিনি। একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ গত সোমবার বিকেলেও তিনি ওই প্রাইভেট কারটি নিজের বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেদিন রাতেও তিনি সেখানে ছিলেন।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য মাকসুদ আলমের মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলে, ‘আমি ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে এসেছি, এখন ব্যস্ত আছি’ বলে কল কেটে দেন।

কুমিল্লা জজ আদালতের আইনজীবী মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘আদালতের নির্দেশ ছাড়া পুলিশ কিংবা অন্য কেউ জব্দ করা গাড়ি কোনোভাবেই ব্যবহার করতে পারেন না। যদি কেউ এমনটি করে থাকেন তাহলে তা তা সম্পূর্ণ আইনবহির্ভূত। এমনকি ওই সব গাড়ি কোথাও নিয়ে যাওয়ারও নিয়ম নেই। মামলা নিষ্পত্তি হলে পুলিশ আদালতের নির্দেশে নিলামে তুলে জব্দ করা যে কোনো যানবাহন বিক্রি করতে পারে।’

মো. ইকবাল হোসেনের বিরুদ্ধে করা মামলাটির তদন্তে রয়েছেন বুড়িচং থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ শরীফ। তিনি বলেন, ‘পিআর মূলে মামলার আলামত হিসেবে গাড়িটি থানার মালখানায় জব্দ রয়েছে বলে জানি। গাড়িটি যদি কেউ ব্যবহার করেন তবে যিনি মালখানার দায়িত্বে রয়েছেন তিনি জবাবদিহি করবেন।’

বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মারুফ রহমান বলেন, ‘মামলার আলামত হিসেবে জব্দ করা গাড়ি ব্যবহারের কোনো অনুমতি নেই। আমি চার দিন হলো বুড়িচং থানায় যোগদান করেছি, বিষয়টি স্পষ্টভাবে জানার চেষ্টা করছি।’

এ বিষয়ে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সোহান সরকার বলেন, ‘জব্দকৃত মামলার আলামতের গাড়ি আদালতের নির্দেশ ছাড়া ব্যবহারের অনুমতি নেই। মাকসুদ আলম আদালতের অনুমতি নিয়েছেন কিনা জানতে হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত