সাইফুল মাসুম, ঢাকা
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) থেকে কৃষকদের নিম্নমানের চীনাবাদাম বীজ সরবরাহ করার অভিযোগ উঠেছে। প্রণোদনার অংশ হিসেবে বিনা মূল্যে কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা ওই বীজের বড় অংশ থেকেই চারা গজায়নি। ফলে সংশ্লিষ্ট কৃষকদের নতুন করে বাজার থেকে বীজ কিনে বপন করতে হয়েছে। এতে লাভের বদলে উল্টো তাঁরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) মাধ্যমে দেশের দুটি বিভাগের তিন উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
জানা যায়, একটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের প্রতিবাদে বিএডিসি খারাপ নিম্নমানের বীজ পাল্টে ভালো বীজ সরবরাহ করেছে। সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধি ও কৃষকেরা বলছেন, বিএডিসি ও ডিএই কর্মকর্তাদের গাফিলতির কারণেই কৃষকদের এমন ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে।
জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিএডিসির বীজ সরবরাহের বিষয়ে খোঁজ নেব। আর কৃষকদের কাছ থেকে অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।’
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার রেহানিয়া গ্রামের কৃষক আবু তাহের উপজেলা কৃষি দপ্তর থেকে বিনা মূল্যের ১০ কেজি বাদামবীজ পেয়েছিলেন। তিনি জানান, ওই বাদামবীজ বোনার ১৮ দিন পরও চারা গজায়নি। অথচ ঘরে সংরক্ষিত বাদামবীজের চারা গজিয়ে গেছে এক সপ্তাহের মধ্যে। সরকার থেকে পাওয়া বীজের অঙ্কুরোদ্গম না হওয়ায় তিনি আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
ওই কৃষকের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায় হাতিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল বাছেদ সবুজের এক চিঠিতে। বিএডিসি নোয়াখালী জেলার উপপরিচালকের কাছে পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০২৩-২৪ মৌসুমে প্রণোদনার আওতায় এই উপজেলায় ১৫ টন চীনাবাদাম এসেছে। এর মধ্যে রং খারাপ ও নিম্নমানের হওয়ায় চরঈশ্বর ইউনিয়ন পরিষদ ১ দশমিক ৫ টন বাদাম ফেরত দেয়। যদিও উপজেলার বাকি ১০ ইউপি চেয়ারম্যান তা গ্রহণ করে তালিকাভুক্ত কৃষকের মধ্যে বিতরণ করেছেন।
খারাপ বীজ ফেরত দেওয়ার বিষয়ে চরঈশ্বর ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আজাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত বছরও কৃষি বিভাগের দেওয়া বাদামের বীজ ছিল নিম্নমানের। তখন বপনের পর ৩০ শতাংশ থেকেও চারা গজায়নি। এবার বাদামবীজ চেক (পরীক্ষা) করে দেখি, আরও খারাপ অবস্থা। বেশির ভাগ ছোট সাইজের এক দানার বীজ। খেতেও তিতা। এমন বীজ দিয়ে আমি কৃষকের সঙ্গে বেইমানি করতে পারব না।’
জানা যায়, ওই ইউপি চেয়ারম্যানের প্রতিবাদে নিম্নমানের বীজ প্রত্যাহার করে গত মঙ্গলবার ভালো বীজ সরবরাহ করেছে বিএডিসি। তবে উপজেলার অন্য ইউনিয়নের কৃষকেরা এমন সমাধান পাননি। চরকিং ইউপি চেয়ারম্যান নাঈম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘কৃষি বিভাগের দেওয়া খারাপ বীজ বিক্রি করে বাজার থেকে কিনে কৃষকদের বপন করতে বলেছি। কারণ এই বীজ বপন করলে কৃষকের অনেক ক্ষতি হবে।’
বিএডিসি নোয়াখালীর উপপরিচালক নুরুল আলম বলেন, শীতের কারণে বীজ থেকে চারা গজাতে দেরি হয়ে থাকতে পারে। আর হাতিয়ার চরঈশ্বর ইউনিয়নে ‘মান ঘোষিত’ বীজ পরিবর্তন করে এখন ‘ভিত্তি বীজ’ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার কয়েকজন কৃষক স্থানীয় কৃষি কার্যালয়কে জানিয়েছেন, প্রণোদনার বাদামবীজ অঙ্কুরোদ্গম হচ্ছে না। রায়পুরা ইউনিয়নের বাখরনগর গ্রামের কৃষক রামচন্দ্র দাশ বলেন, ‘এই বীজ ভালো পড়ে নাই। খেতে বপনের পর বেশির ভাগই গজায়নি। পরে বাজার থেকে কিনে পুনরায় বপন করেছি। এমন জানলে ওই বীজ আনতেই চাইতাম না।’
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, চাষিরা কৃষি কর্মকর্তাদের কাছে কিছু সমস্যার কথা বলছেন। হিমাগার থেকে বীজগুলো বের করার পর বপন করতে দেরি হলে এ সমস্যা হতে পারে।
খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলায়ও নিম্নমানের চীনাবাদাম বীজ বিতরণ করার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার বাটনাতলী ইউপির আমতলীপাড়ার কৃষক আবদুল খালেক জানান, তিনি প্রণোদনার বীজ বপন করেছিলেন; কিন্তু মান খারাপ হওয়ায় তা অঙ্কুরিত হয়নি।
তবে ওই ইউপির উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. বেলায়েত হোসেনের দাবি, ডিসেম্বর মাসে বৃষ্টির কারণে অঙ্কুরোদগমে সমস্যা হয়েছে।বীজ নিয়ে এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএডিসির সদস্য পরিচালক (বীজ ও উদ্যান) মো. মোস্তাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই মৌসুমে সারা দেশে ৩৫০ টন বাদামবীজ বিতরণ করা হয়েছে। কোথাও তেমন সমস্যা হয়নি। হাতিয়া উপজেলার একটি ইউনিয়নে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বীজ পরিবর্তন করে দিয়েছি। অন্য কোথাও এমন তথ্য পেলে আমরা ব্যবস্থা নেব।’
[এই প্রতিবেদনে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন ইসমাইল হোসেন কিরন, হাতিয়া (নোয়াখালী); হারুনুর রশিদ, রায়পুরা (নরসিংদী) ও আব্দুল মান্নান, মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি)]
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) থেকে কৃষকদের নিম্নমানের চীনাবাদাম বীজ সরবরাহ করার অভিযোগ উঠেছে। প্রণোদনার অংশ হিসেবে বিনা মূল্যে কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা ওই বীজের বড় অংশ থেকেই চারা গজায়নি। ফলে সংশ্লিষ্ট কৃষকদের নতুন করে বাজার থেকে বীজ কিনে বপন করতে হয়েছে। এতে লাভের বদলে উল্টো তাঁরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) মাধ্যমে দেশের দুটি বিভাগের তিন উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
জানা যায়, একটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের প্রতিবাদে বিএডিসি খারাপ নিম্নমানের বীজ পাল্টে ভালো বীজ সরবরাহ করেছে। সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধি ও কৃষকেরা বলছেন, বিএডিসি ও ডিএই কর্মকর্তাদের গাফিলতির কারণেই কৃষকদের এমন ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে।
জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিএডিসির বীজ সরবরাহের বিষয়ে খোঁজ নেব। আর কৃষকদের কাছ থেকে অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।’
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার রেহানিয়া গ্রামের কৃষক আবু তাহের উপজেলা কৃষি দপ্তর থেকে বিনা মূল্যের ১০ কেজি বাদামবীজ পেয়েছিলেন। তিনি জানান, ওই বাদামবীজ বোনার ১৮ দিন পরও চারা গজায়নি। অথচ ঘরে সংরক্ষিত বাদামবীজের চারা গজিয়ে গেছে এক সপ্তাহের মধ্যে। সরকার থেকে পাওয়া বীজের অঙ্কুরোদ্গম না হওয়ায় তিনি আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
ওই কৃষকের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায় হাতিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল বাছেদ সবুজের এক চিঠিতে। বিএডিসি নোয়াখালী জেলার উপপরিচালকের কাছে পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০২৩-২৪ মৌসুমে প্রণোদনার আওতায় এই উপজেলায় ১৫ টন চীনাবাদাম এসেছে। এর মধ্যে রং খারাপ ও নিম্নমানের হওয়ায় চরঈশ্বর ইউনিয়ন পরিষদ ১ দশমিক ৫ টন বাদাম ফেরত দেয়। যদিও উপজেলার বাকি ১০ ইউপি চেয়ারম্যান তা গ্রহণ করে তালিকাভুক্ত কৃষকের মধ্যে বিতরণ করেছেন।
খারাপ বীজ ফেরত দেওয়ার বিষয়ে চরঈশ্বর ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আজাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত বছরও কৃষি বিভাগের দেওয়া বাদামের বীজ ছিল নিম্নমানের। তখন বপনের পর ৩০ শতাংশ থেকেও চারা গজায়নি। এবার বাদামবীজ চেক (পরীক্ষা) করে দেখি, আরও খারাপ অবস্থা। বেশির ভাগ ছোট সাইজের এক দানার বীজ। খেতেও তিতা। এমন বীজ দিয়ে আমি কৃষকের সঙ্গে বেইমানি করতে পারব না।’
জানা যায়, ওই ইউপি চেয়ারম্যানের প্রতিবাদে নিম্নমানের বীজ প্রত্যাহার করে গত মঙ্গলবার ভালো বীজ সরবরাহ করেছে বিএডিসি। তবে উপজেলার অন্য ইউনিয়নের কৃষকেরা এমন সমাধান পাননি। চরকিং ইউপি চেয়ারম্যান নাঈম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘কৃষি বিভাগের দেওয়া খারাপ বীজ বিক্রি করে বাজার থেকে কিনে কৃষকদের বপন করতে বলেছি। কারণ এই বীজ বপন করলে কৃষকের অনেক ক্ষতি হবে।’
বিএডিসি নোয়াখালীর উপপরিচালক নুরুল আলম বলেন, শীতের কারণে বীজ থেকে চারা গজাতে দেরি হয়ে থাকতে পারে। আর হাতিয়ার চরঈশ্বর ইউনিয়নে ‘মান ঘোষিত’ বীজ পরিবর্তন করে এখন ‘ভিত্তি বীজ’ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার কয়েকজন কৃষক স্থানীয় কৃষি কার্যালয়কে জানিয়েছেন, প্রণোদনার বাদামবীজ অঙ্কুরোদ্গম হচ্ছে না। রায়পুরা ইউনিয়নের বাখরনগর গ্রামের কৃষক রামচন্দ্র দাশ বলেন, ‘এই বীজ ভালো পড়ে নাই। খেতে বপনের পর বেশির ভাগই গজায়নি। পরে বাজার থেকে কিনে পুনরায় বপন করেছি। এমন জানলে ওই বীজ আনতেই চাইতাম না।’
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, চাষিরা কৃষি কর্মকর্তাদের কাছে কিছু সমস্যার কথা বলছেন। হিমাগার থেকে বীজগুলো বের করার পর বপন করতে দেরি হলে এ সমস্যা হতে পারে।
খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলায়ও নিম্নমানের চীনাবাদাম বীজ বিতরণ করার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার বাটনাতলী ইউপির আমতলীপাড়ার কৃষক আবদুল খালেক জানান, তিনি প্রণোদনার বীজ বপন করেছিলেন; কিন্তু মান খারাপ হওয়ায় তা অঙ্কুরিত হয়নি।
তবে ওই ইউপির উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. বেলায়েত হোসেনের দাবি, ডিসেম্বর মাসে বৃষ্টির কারণে অঙ্কুরোদগমে সমস্যা হয়েছে।বীজ নিয়ে এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএডিসির সদস্য পরিচালক (বীজ ও উদ্যান) মো. মোস্তাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই মৌসুমে সারা দেশে ৩৫০ টন বাদামবীজ বিতরণ করা হয়েছে। কোথাও তেমন সমস্যা হয়নি। হাতিয়া উপজেলার একটি ইউনিয়নে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বীজ পরিবর্তন করে দিয়েছি। অন্য কোথাও এমন তথ্য পেলে আমরা ব্যবস্থা নেব।’
[এই প্রতিবেদনে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন ইসমাইল হোসেন কিরন, হাতিয়া (নোয়াখালী); হারুনুর রশিদ, রায়পুরা (নরসিংদী) ও আব্দুল মান্নান, মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি)]
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
২ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
২ দিন আগে