পরকীয়ার জেরে নেত্রকোনার মদন উপজেলায় আসাদুল নামে এক যুবক মারা গেছেন। কুপিয়ে আহত করার ১২ দিন পর গত বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। পুলিশ বলছে, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানা গেছে, মদন উপজেলার খাগুরিয়া গ্রামের রংমিস্ত্রি সাইফুল ইসলাম দ্বিতীয় বিয়ে করে চট্টগ্রামে বসবাস শুরু করেন। এদিকে তার প্রথম স্ত্রী বাড়িতে থাকায় আসাদুলের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন।

গত ৭ নভেম্বর গভীর রাতে সাইফুলের স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান আসাদুল। বিষয়টি টের পেয়ে সাইফুলের ছোট ভাই আলামিন ও জুয়েলসহ কয়েকজন আসাদুলকে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে ফেলে রাখে। পরে প্রতিবেশী ও আসাদুলের পরিবারে লোকজন তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে আইসিইউতে গত বৃহস্পতিবার রাতে মারা যান আসাদুল।

খাগুড়িয়া গ্রামের একাধিক ব্যক্তি ও আসাদুলের মামি দিলোয়ার আক্তার বলেন, দীর্ঘদিন আগে রংমিস্ত্রি সাইফুলের প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে আসাদুলের পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে উঠে। গভীর রাতে আসাদুল তাদের বাড়িতে দেখা করতে গেলে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে সাইফুলের বাড়ির লোকজন। ১২ দিন চিকিৎসা দেওয়ার পর বৃহস্পতিবার সে মারা গেছে। আমরা হত্যাকারীদের শাস্তির দাবি করছি। অভিযুক্তদের বাড়িতে লোকজন না থাকায় ও তাদের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়ায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এদিকে ঘটনার পরদিনেই নিহতের বাবা মদন থানায় অজ্ঞাত আসামি করে একটি মামলা করেন। এ ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে একই গ্রামের আপস মিয়ার ছেলে জুয়েলকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে গত ১০ নভেম্বর আদালতে জেল হাজতে পাঠায় মদন থানার পুলিশ।

মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফেরদৌস আলম মৃত্যুর সংবাদটি নিশ্চিত করে বলেন, গভীর রাতে রক্তাক্ত অবস্থায় আসাদুলকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। এ ব্যাপারে আসাদুলের বাবা অজ্ঞাত আসামি করে থানায় মামলা করলে ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে জুয়েল নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়। তিনি আরও বলেন, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি তদন্ত করছেন। পূর্বের দায়েরকৃত মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হবে। তদন্ত সাপেক্ষে মূল ঘটনা উদ্ঘাটন করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।