শূন্য হাতে ফিরলেন জেলেরা

কক্সবাজার প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ আগস্ট ২০২২, ১২: ০৩
Thumbnail image

বঙ্গোপসাগরে বৈরী আবহাওয়ার কারণে শূন্য হাতে ট্রলার নিয়ে ঘাটে ফিরছেন জেলেরা। তিন সপ্তাহ ধরে চলা বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে গত মঙ্গলবার পরিস্থিতি অনুকূলে আসায় মাছ ধরতে সাগরে নেমেছিলেন তাঁরা। গত বৃহস্পতিবার থেকে ফের বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের কারণে গতকাল শনিবার পর্যন্ত কক্সবাজারের বিভিন্ন ঘাটে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার ট্রলার নোঙর করেছে।

ট্রলার মালিক ও জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরে বৈরী আবহাওয়ার কারণে গত তিন সপ্তাহে তিন দফা দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোতে সতর্কতা সংকেত দেওয়া হয়েছে। এতে দুসপ্তাহেরও বেশি সময় অন্তত ৬ হাজার মাছ ধরার ট্রলার কক্সবাজার সমুদ্র উপকূল ও বিভিন্ন ঘাটে নোঙর করে রাখা ছিল। তবে গত মঙ্গলবার আবহাওয়া পরিস্থিতি অনুকূলে আসার পর জেলেরা আবারও মাছ ধরতে সাগরে নামেন।

তবে গত বৃহস্পতিবার থেকে ফের বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের কারণে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত জারি করা হয়। এতে আবারও ট্রলারগুলো ঘাটে ফিরে আসতে শুরু করেছে। গত শুক্রবার উপকূলে ফিরে আসার সময় তিনটি ট্রলার ঝড়ো হাওয়ায় ডুবে গেছে। তবে সব মাঝি-মাল্লাকে নিরাপদে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।

জেলায় ছোট-বড় প্রায় ৭ হাজার মাছ ধরার ট্রলার রয়েছে। এর মধ্যে নিবন্ধিত ট্রলার আছে সাড়ে ৫ হাজার। জেলে রয়েছেন ৬৩ হাজার। গত ২৩ জুলাই মাছ ধরার ওপর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে মাছ ধরতে নামেন জেলেরা। চার-পাঁচ দিন জালে ভালো মাছ ধরা পড়ছিল। এরপরই বৈরী আবহাওয়া শুরু হয়।

মাছ আহরণ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গতকাল শনিবার পর্যন্ত কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর মোহনায় নুনিয়ারছড়া ঘাটেই প্রায় ৩ হাজার ট্রলার নোঙর করেছে। এ ছাড়া জেলার সেন্টমার্টিন, টেকনাফ, কুতুবদিয়া, মহেশখালী, পেকুয়া, চকরিয়া, চৌফলদণ্ডিসহ বিভিন্ন ঘাটে আরও অন্তত দেড় হাজার ট্রলার ঘাটে ফিরে এসেছে।

গতকাল সকালে কক্সবাজার মৎস্য অবতরণকেন্দ্রের জেটিতে গিয়ে দেখা যায়, বাঁকখালী নদীর মোহনায় সারিবদ্ধভাবে ট্রলারগুলো নোঙর করে রাখা হয়েছে। আরও ট্রলার ঘাটে ফিরতে দেখা গেছে। বেশিরভাগ ট্রলারই মাছশূন্য।

এফবি ফয়সাল নামে ট্রলারের মাঝি আবু তৈয়ব (৪৮) বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা শেষে এক চালান মাছ ধরার সুযোগ পেয়েছি। এরপর দুদফা সাগরে গিয়ে ফেরত আসতে হয়েছে।’

মৎস্য অবতরণকেন্দ্রের ঘাটে কথা হয় ট্রলার মালিক আবদুর রশিদ (৫০) ও আক্কাস উদ্দিনের (৪৫) সঙ্গে। তাঁদের চোখ-মুখে হতাশার ছাপ। তাঁরা জানান, একে তো জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে, দ্বিতীয়ত সাগরে বৈরী আবহাওয়া লেগেই আছে। এর মধ্যে সাগরে দু-তিন দফা ট্রলার গিয়ে ফেরত আসতে হয়েছে। এতে তাঁদের একটি ট্রলারে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা করে লোকসান হয়েছে।

জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘তিন সপ্তাহ ধরে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করছে। গত মঙ্গলবার আবহাওয়া পরিস্থিতি উন্নতি হলে জেলেরা ট্রলার নিয়ে সাগরে গিয়েছিলেন। কিন্তু ফের সংকেত দিলে ট্রলারগুলো ঘাটে চলে আসে। যেসব ট্রলার গভীর সমুদ্রে গিয়েছিল সেগুলোও ফেরার পথে রয়েছে।’

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বদরুজ্জামান বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে প্রচণ্ড গরম ও বৈরী আবহাওয়ায় সাগর উত্তাল রয়েছে। সমুদ্রে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত জারি থাকায় মাছ ধরার ট্রলার ও অন্য নৌযানগুলোকে নিরাপদে উপকূলে থাকার জন্য বলা হয়েছে।’

কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ আব্দুল হামিদ মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত জারি রয়েছে। তবে আগামী দুয়েকদিনের মধ্যে অবস্থার উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কারা পরিদর্শক হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

ট্রাম্পের অভিষেক: সি আমন্ত্রণ পেলেও পাননি মোদি, থাকছেন আরও যাঁরা

ট্রাম্পের শপথের আগেই বার্নিকাটসহ তিন কূটনীতিককে পদত্যাগের নির্দেশ

কিশোরগঞ্জে বিএনপি নেতা হত্যা: সাবেক চেয়ারম্যানসহ গ্রেপ্তার ৪

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে: সলিমুল্লাহ খান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত