Ajker Patrika

ফটক বন্ধ, নেই শিক্ষক মাঠে খেলছিল শিশুরা

তারাগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ৩১ জুলাই ২০২২, ১৩: ৫৬
ফটক বন্ধ, নেই শিক্ষক মাঠে খেলছিল শিশুরা

সকাল ১০টা ২০ মিনিট। বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা ঝোলানো। বন্ধ ফটকের হুকে ব্যাগ ঝুলিয়ে মাঠে খেলা করছে একদল শিশুশিক্ষার্থী। উত্তোলন করা হয়নি পতাকাও। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সকাল ৯টায় বিদ্যালয় খোলার কথা থাকলেও তা করা হয়নি।

গতকাল শনিবার রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার বৈদ্যনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এমন চিত্র দেখা যায়। এখানে ১১৯ শিক্ষার্থীর বিপরীতে চারজন শিক্ষক আছেন।

অভিযোগ উঠেছে, বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা তাঁদের ইচ্ছেমতো আসা-যাওয়া করেন। ঠিকমতো পাঠদান করেন না। এতে শিশুদের শিক্ষা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন এলাকার অভিভাবকেরা। অনেকে অন্য বিদ্যালয়ে শিশুদের ভর্তি করাচ্ছেন।

গতকাল বিদ্যালয়ের মাঠে কথা হয় দ্বিতীয় শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে। শিক্ষকেরা কখন বিদ্যালয়ে আসে জানতে চাইলে একজন বলে, ‘হামরা স্কুল আসি সকাল ৯টায়। স্যারেরা আইসে ১০টায়। এখন মাঠোত খেলা খেলাওছি। স্যারেরা আসলে তালা খুলি ক্লাস করব।’

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলার একপর্যায়ে ১০টা ২৫ মিনিটে বিদ্যালয়ে আসেন সহকারী শিক্ষক রুমি পারভিন। তিনি প্রধান ফটক খুলে শিক্ষার্থীদের ভেতরে প্রবেশ করান। দেরিতে আসার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বাড়িতে একটু কাজ ছিল। তাই আজ আসতে দেরি হয়েছে।’ অন্য শিক্ষকেরা কোথায় জানতে চাইলে তিনি জানান, তাঁরা আসছেন।

রুমি পারভিনের সঙ্গে কথা বলার পর ১০টা ৩৫ মিনিটে বিদ্যালয়ে আসেন আরেক সহকারী শিক্ষক আবু জাফর। তিনি এতক্ষণ বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০২২-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছিলেন বলে জানান। সেখানে তিনি কোনো দায়িত্বে আছেন কি না জানতে চাইলে বলেন, ‘ভুল বলেছি। আসলে আমি রংপুরে ছিলাম। তাই আসতে দেরি হয়েছে।’

বিদ্যালয়ের মাঠে কথা হয় বৈদ্যনাথপুর গ্রামের কৃষক নুরনবীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘স্কুলোত ছাওয়ারা আইসে ৯টার সময় আর স্যারেরা আইসে ১০টা, সাড়ে ১০টায়। এটে লেখাপড়া নাই জন্যে মোর ছাওয়াক তারাগঞ্জের স্কুলোত ভর্তি করি দিছুন।’

একই গ্রামের জুয়েল ইসলাম বলেন, ‘এই স্কুলোত লেখাপড়া নাই। সারা দিন ছাওয়াগুলো মাঠোত খেলা খেলায়। মাস্টারেরা কখন আইসে, কখন যায় তাক আল্লায় জানে। স্কুলটাক বাঁচান। ছাওয়াগুলা যেন ভালো করি লেখাপড়া করির পায়।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামুনুর রশিদ মোবাইল ফোনে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০২২-এর উদ্বোধনী খেলার মাঠে দায়িত্বে আছি। সকাল ৯টায় বিদ্যালয় খোলার কথা, এখনো খোলেনি। বিষয়টি দেখতেছি।’ এই বলে ফোন কেটে দেন তিনি।

যোগাযোগ করা হলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আঞ্জুমান আরা বলেন, ‘প্রতিটি বিদ্যালয়ের শিক্ষককে বলেছি, আজও বলব সঠিক সময়ে পাঠদান করানোর জন্য।’ এরপরও যাঁরা বিদ্যালয় সঠিক সময়ে খুলবেন না তাঁদের তালিকা সাংবাদিকদের কাছে চান এ শিক্ষা কর্মকর্তা। তবেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আ. লীগ নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, তারাই সিদ্ধান্ত নেবে: বিবিসিকে প্রধান উপদেষ্টা

‘মবের হাত থেকে বাঁচাতে’ পলকের বাড়ি হয়ে গেল অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প

স্বাধীনতা পদক পাচ্ছেন এম এ জি ওসমানীসহ ৮ জন

কনের বাড়িতে প্রবেশের আগমুহূর্তে হৃদ্‌রোগে বরের মৃত্যু

বগুড়ায় মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় ছাদ থেকে পড়ে নার্সিং শিক্ষার্থীর মৃত্যু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত